বেতন না পাওয়ার ক্ষোভে ডাকাতি, জাহাজের প্রকৌশলীসহ আটক ৩: কোস্টগার্ড
Published: 28th, May 2025 GMT
বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্রবন্দর চ্যানেলে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নোঙর করে রাখা বাণিজ্যিক জাহাজ এম ভি সেঁজুতি থেকে ডাকাতি করা মালামালের কিছু অংশ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। একই সঙ্গে ডাকাতির পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জাহাজের প্রধান প্রকৌশলী মো. সিরাজুল হকসহ তিনজনকে আটকের কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।
কোস্টগার্ড বলছে, আটক অন্য দুজন হলেন পেশাদার ডাকাত সুমন হাওলাদার (২১) ও ডাকাতির মালামাল ক্রেতা মো.
উদ্ধার মালামালের মধ্যে ইঞ্জিনের বিভিন্ন ধরনের স্পেয়ার পার্টস, ইঞ্জিনের বিভিন্ন সাইজের বিয়ারিং, ব্যাটারি, ব্যাটারির চার্জার ও জাহাজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ রয়েছে বলে জানিয়েছেন মোংলাস্থ কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশনস কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান। বুধবার দুপুরে তিনি বলেন, জাহাজের অধিকাংশ নাবিক ৬-৭ মাস ধরে সঠিকভাবে বেতন পান না। যার ফলে নাবিকদের মধ্যে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছিল। এ কারণে এর আগেও জাহাজ থেকে বিভিন্ন গ্রুপ ও ডাকাতের কাছে মেশিনারিজ পার্টস বিক্রি করা হয়। জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে মিলে এই ডাকাতির নাটক সাজিয়ে লুটকৃত মালামাল বিক্রির মাধ্যমে অর্থ ভাগাভাগির পরিকল্পনা করে।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান আরও বলেন, উদ্ধার হওয়া মালামাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। আটক ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম চলছে। তবে জাহাজের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি যথাযথ তদন্ত করার দাবি রাখে। জাহাজের মালিক কর্তৃক নাবিকদের বেতন–ভাতা না দেওয়া এবং ৬ মাস ধরে জাহাজটিকে এভাবে ফেলে রাখার বিষয়টিও আরও তদন্ত করার অবকাশ রয়েছে।
এর আগে গত সোমবার এক লিখিত বিবৃতিতে জাহাজটির প্রধান প্রকৌশলী মো. সিরাজুল হক জানিয়েছিলেন, রোববার (২৫ মে) দিবাগত রাত ২টা ৪৫ মিনিটে একদল ডাকাত দেশীয় অস্ত্রসহ জাহাজে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে। এরপর ডাকাতরা তাদের ইচ্ছেমতো ইঞ্জিন কক্ষসহ যেখানে যা আছে সব নিয়ে সোমবার ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে চলে যায়। লুট হওয়া মালামালের মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
আরও পড়ুননাবিকদের জিম্মি করে মোংলা বন্দর চ্যানেলে বাণিজ্যিক জাহাজে ডাকাতি২৬ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চোখে আলো ফেলা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে কৃষককে হত্যা
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় চোখে টর্চলাইটের আলো পড়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে ছুরিকাঘাতে এরশাদ আলী (৩৫) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত এরশাদ আলী উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। খবর পেয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামে মানিক মিয়ার মুদিদোকানে যান এরশাদ আলী। এ সময় এরশাদ আলীর চোখে টর্চলাইটের আলো ফেলে বিরক্ত করেন একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে সাকিব মিয়া। এ নিয়ে দুজন বাগ্বিতণ্ডায় জড়ালে স্থানীয় লোকজন মিটমাট করে দেন। পরে এরশাদ আলীসহ সবাই যে যার মতো বাড়িতে চলে যান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে এরশাদ আলীকে ডেকে নিয়ে আবার কথা-কাটাকাটি ও মারামারিতে জড়ান সাকিব ও তাঁর সঙ্গে আসা কয়েকজন। একপর্যায়ে এরশাদ আলীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। স্থানীয় লোকজন আহত এরশাদ আলীকে উদ্ধার করে ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে অভিযুক্ত সাকিব মিয়াসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন সরকার বলেন, পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। নিহত এরশাদ আলীর শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন আছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।