৩২ মণের ‘সাদাময়না’ যেন এলাকার সেলিব্রিটি
Published: 29th, May 2025 GMT
চারদিকে কোরবানি ঈদের আমেজ। পশুর হাটে শুরু হয়েছে হাঁকডাক। এরই মধ্যে দেখা মিলেছে বিশাল একটি ষাঁড়ের, নাম তার ‘সাদাময়না’। সাদা-কালো রঙের ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টি এখন যেন এলাকার অঘোষিত সেলিব্রিটি।
ষাঁড়ের মালিক নূরুল কাইয়ুম স্বপন। পেশায় পল্লী চিকিৎসক হলেও পশু লালনে তাঁর ঝোঁক রয়েছে। তাঁর বাড়ি ফুলবাড়িয়া উপজেলার কুশমাইল ইউনিয়নের চকরাধাকানাই গ্রামে। তাঁর বাড়ির উঠোনেই দেখা গেল বিশালদেহী ‘সাদাময়না’ ষাঁড়টি।
চার বছর ধরে নিজ হাতে লালনপালন করা এ ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টি দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন আশপাশের মানুষ। সাদাময়নার ওজন প্রায় ৩২ মণ। লম্বায় ৯ ফুট, উচ্চতা সাড়ে ৫ ফুট, আর রাউন্ড প্রায় ৮ ফুটের বেশি। গায়ের রং সাদা-কালো মেশানো বলে গরুটিকে তাঁর সন্তানরা আদর করে নাম রেখেছেন ‘সাদাময়না’।
পল্লী চিকিৎসক স্বপন জানান, জন্ম নেওয়ার পর থেকে একেবারে প্রাকৃতিক উপায়ে গরুটিকে লালন-পালন করেছেন। মোটাতাজাকরণ বা কোনো ইনজেকশন বা কৃত্রিম খাদ্য ব্যবহার করা হয়নি। গরুটির যত্নে প্রতিদিন দুইবার গোসল করানো হয়। খাওয়ানো হয় প্রতিদিন ১০ কেজি কুঁড়া-ভূষি, ৫ কেজি খড় ও ৫ কেজি কচি ঘাস। প্রতি মাসে ষাঁড়টির খাবারের পেছনে খরচ হতো ২০ হাজার টাকার মতো। তিনি বলেন, ‘এই ষাঁড় গরুটা আমাদের পরিবারের একজন সদস্যের মতো। গরুটিকে ছোটবেলা থেকেই আমরা পরিবারের সদস্যের মতো যত্ন করে বড় করেছি। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়ানো, গোসল করানো, হাঁটানো এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বাড়তি নজর ছিল। গরমে গোয়ালঘরে ২৪ ঘণ্টা সিলিং ফ্যান চালু রাখা হয়।’
সাদাময়নার মালিক স্বপনের ভাষ্য, গত বছরের কোরবানির ঈদের সময় গরুটির দাম উঠেছিল সাড়ে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত। তবে প্রত্যাশা ছিল ১০ লাখ টাকা। সেই কারণে শেষ পর্যন্ত বিক্রি করা হয়নি। এবার ঈদ সামনে রেখে গরুটিকে আরও যত্ন করে প্রস্তুত করা হয়েছে।
এটি শুধু একটি ষাঁড় না, আমার শ্রম, ভালোবাসা, আর বিশ্বাসের ফল, বললেন স্বপন মিয়া। তিনি আশা করছেন, এবার কেউ হয়তো তাঁর এই মেহনতের মূল্য ১৫ লাখ টাকা দিতে রাজি হবেন।
প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অনেকেই গরুটি দেখতে আসছেন। কেউ কেউ ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শেয়ার করছেন।
এলাকার মানুষের ভাষায়, ঈদের আগে সাদাময়না যেন এক নতুন ধরনের উৎসবে পরিণত হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ স দ ময়ন স বপন
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?