চট্টগ্রামে পরিবেশ সাংবাদিকতা নিয়ে ইউনিলিভারের ৩ দিনব্যাপী কর্মশালা
Published: 29th, May 2025 GMT
নিত্য-ব্যবহার্য ও ভোগ্যপণ্য (এফএমসিজি) উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশ সম্প্রতি চট্টগ্রামের তরুণদের জন্য ‘ইয়ুথ জার্নালিজম অন এনভায়রনমেন্ট: আ ফোকাস অন প্লাস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী পরিবেশ সাংবাদিকতার এক কর্মশালার আয়োজন করেছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) এবং ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশানের (ইপসা) সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালার লক্ষ্য তরুণদের পরিবেশবিষয়ক সাংবাদিকতায় উৎসাহিত করা এবং প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সচেতনতা ও জ্ঞানের প্রসার ঘটানো, যাতে তারা জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই নগরায়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তথ্যভিত্তিক ও কার্যকর বার্তা সমাজে পৌঁছে দিতে পারে।
গত বছর শুরু হওয়া এই কর্মশালার ধারাবাহিকতায়, চলতি বছর প্রাথমিক পর্যায়ে ১৬৭ জন তরুণ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের সুযোগ পান। তাদের মধ্য থেকে মূল্যায়নের ভিত্তিতে ৪০ জনকে বাছাই করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন ধাপের লিখিত পরীক্ষা ও চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই শেষে ২০ জন নির্বাচিত শিক্ষার্থী তিন দিনব্যাপী এই কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেন।
কর্মশালার প্রথম দিনেই দেশের খ্যাতিমান সাংবাদিকদের তত্ত্বাবধানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ফিল্ড ভিজিটে অংশ নেন, যা তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়ক হয়। পরবর্তী দুই দিনে শিক্ষার্থীরা ‘ফান্ডামেন্টাল অব জার্নালিজম’, ‘মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম’, ‘ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম’ এবং ‘ডিজিটাল জার্নালিজম’ বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিন দিনের এই কর্মশালা শেষে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণদের হাতে সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষকদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ইপসার প্রধান নির্বাহী মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউন ল ভ র ইউন ল ভ র ব ল দ শ ইউন ল ভ র
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।
জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।
দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।