Samakal:
2025-06-01@01:03:05 GMT

রোগী দেখেন স্যাকমো

Published: 30th, May 2025 GMT

রোগী দেখেন স্যাকমো

বহির্বিভাগে লম্বা লাইন। শিশু-বৃদ্ধ সব বয়সের রোগী এসেছেন চিকিৎসা নিতে। কোনো চিকিৎসক নেই। দুইজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) সারা হেমব্রম ও রিপন রায় রোগী দেখছেন। কক্ষের ভেতরও রোগীর ভিড়। জরুরি বিভাগও সামলাচ্ছেন একজন সহকারী সার্জন। 
এ চিত্র দেখা গেছে পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। হাসপাতালটিতে জনবল সংকট ছাড়াও রয়েছে নানা সমস্যা। রয়েছে চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব। পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

আব্দুল জব্বার বেশির ভাগ সময় কোয়ার্টারে থাকেন না। থাকেন ৩০ কিলোমিটার দূরে জেলা সদরে। খেয়াল খুশিমতো অফিস করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। 
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডা. আব্দুল জব্বার। স্যাকমো দিয়ে সেবা দেওয়ার বিষয়ে তাঁর ভাষ্য, ৫০ শয্যার হাসপাতাল ৩ জন চিকিৎসক দিয়ে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। বহির্বিভাগে রোগীর চাপ, ভর্তি রোগীর সংখ্যাও বেশি; পরিস্থিতি সামাল দিতে স্যাকমো দিয়ে রোগী দেখতে বাধ্য হচ্ছেন।
ব্যাপক জনবল সংকট: ২০১০ সালে হাসপাতালটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, জুনিয়র কনসালট্যান্টসহ চিকিৎসক পদ রয়েছে ৩২টি। বিপরীতে কর্মরত আছেন ৩ জন। হাসপাতালে চিকিৎসকসহ মোট পদের সংখ্যা ২১২। এর মধ্যে ৬২টি পদ শূন্য। জুনিয়র কনসালট্যান্ট সার্জারি, মেডিসিন, গাইনি, শিশু, অর্থোপেডিক্স, কার্ডিওলজি, চক্ষু, ইএনটি, আরএমওসহ ২৯টি পদ শূন্য দীর্ঘদিন ধরে। মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন একজন চিকিৎসক। বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে রোগী দেখেন সহকারী সার্জন ডা. আব্দুর রহমান সোহান ও দুই জন স্যাকমো। 
স্থানীয় বাসিন্দা বুলবুল আহাম্মেদ বলেন, ‘২৩ এপ্রিল স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। জরুরি বা বহির্বিভাগ কোথাও চিকিৎসক ছিল না। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ফোন করলে চিকিৎসক পাঠাচ্ছেন বলে জানান। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও চিকিৎসক না আসায় অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসি।’ 
হাসপাতালের স্যাকমো সারা হেমব্রম ও রিপন রায় বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই রোগী সেবা দিচ্ছেন। বিপুল সংখ্যক রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলেও জানান তারা।
বেহাল চিকিৎসা সরঞ্জাম: এক্স–রে মেশিন খারাপ থাকায় ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর টেকনোলজিস্ট আব্দশ শুকুরকে রাজশাহী মেডিকেলে বদলি করা হয়। একই সঙ্গে সেখানকার টেকনোলজিস্ট আব্দুর রাজ্জাককে পীরগঞ্জে এনে ফের ডেপুটেশনে রাজশাহীতে পাঠানো হয়। ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল এক্স-রে মেশিন সরবরাহ করে কর্তৃপক্ষ। টেকনোলজিস্ট না থাকায় সেটি চালু করা যায়নি। আব্দুর রাজ্জাকের ডেপুটেশন বাতিল করে পীরগঞ্জে ফিরিয়ে আনতে কয়েকবার কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অজ্ঞাত কারণে তাঁর ডেপুটেশন বাতিল হয়নি। ওই পদে কাউকে পদায়নও করা হয়নি। 
ইসিজি এবং আলট্রাসোনোগ্রাম মেশিন অকেজো। গাইনি চিকিৎসক ও অবেদনবিদ না থাকায় ছয় বছর ধরে সিজার বন্ধ। 
তিন বছরের অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন ভাকুড়া গ্রামের বাবুল ইসলাম। চিকিৎসক  বেশ কিছু পরীক্ষা দিয়েছেন। পরীক্ষাগুলো বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে করতে বলা হয়েছে। হতদরিদ্র বাবুল এখন খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। 
সক্রিয় দালালচক্র: রোগীকে বিভিন্ন ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভাগিয়ে নিতে এক ডজনেরও বেশি দালালচক্র সক্রিয় হাসপাতাল চত্বরে। তারা কাজ করছেন হাসপাতাল ঘিরে গড়ে ওঠা চার–পাঁচটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের হয়ে। কম খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে নিয়মিত রোগী ভাগিয়ে নেন তাঁরা। এ কাজে পিছিয়ে নেই হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। ছোট ইনজুরি ও অচেতন কোনো রোগী ইমার্জেন্সিতে এলেও তারা ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও রংপুর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। 
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ: হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে রোগীর ভিড়। ওয়ার্ডগুলোর শয্যা অপরিচ্ছন্ন। একজন রোগী জানালেন বৃহস্পতিবার ভর্তি হয়েছেন। রাতেই বাড়ি ফিরবেন। কারণ, সেবা দেওয়ার মতো লোকবল নেই। টাকা না দিলে ওয়ার্ডবয়রা রোগীর শরীরে হাত দিতে চান না। ৫০-১০০ টাকা দিলেই সেবা মেলে। ওয়ার্ডের অবস্থা আরও খারাপ। হাসপাতালের বেডে বিড়াল শুয়ে আছে– এমন ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই রোগী। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত চ ক ৎসক স য কম

এছাড়াও পড়ুন:

পিএসজি-ইন্টারের শিরোপা নির্ধারক হতে পারে যে ছয় লড়াই

প্রথমবার পিএসজির সামনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল জয়ের সুযোগ। মৌসুমে ভালো শুরু না করেও শিরোপা জয়ের ফেবারিট দলে পরিণত হয়েছে প্যারিসের দলটি। লুইস এনরিকের দল রক্ষণ, মিডফিল্ড ও আক্রমণে দারুণ শক্তিশালী।

ইন্টার মিলান তিন মৌসুমের মধ্যে তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পা রেখেছে। এর আগে ম্যানসিটির বিপক্ষে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি দলটি। তবে এবার তারা অভিজ্ঞ। সিমোন ইনজাঘির ভিন্ন ধর্মী কৌশলে বায়ার্ন মিউনিখ ও বার্সার মতো দলকে পরাস্ত করে ফাইনালে আসা দলকে খাটো করার সুযোগ নেই।

দুই দলে আছেন বেশ কিছু ভালো ফুটবলার। পিএসজির ডি মারিয়া, কাভিচা খাভারস্তকেলিয়া, ভিতিনহা, মার্কুইনোস আছেন। ইন্টার মিলানে আছেন লওতারো মার্টিনেজ, ডিমার্কো, নিকোলাস বেরেল্লা ও হাকান কালাহলঘনুর মতো ফুটবলার।

দোন্নারুমা বনাম সমার: অনেকগুলো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের কথাই স্মরণ করা যাবে, যেখানে গোলরক্ষকের ভুলে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছে কিংবা গোলরক্ষক একহাতে শিরোপা জিতিয়েছেন। নিকট অতীতে লিভারপুলের কারিউসের ভুলে যাওয়ার মতো ভুল কিংবা ২০২২ মৌসুমে রিয়ালের থিবো কর্তোয়ার অসাধারণ সেভের কথা মনে পড়বে। চলতি মৌসুমে পিএসজির দোন্নারুমা গোলবারে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। আবার বার্সাকে হতাশ করে ইন্টারকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে তোলার অন্যতম নায়ক যে দলটির গোলরক্ষক ইয়ান সমার। ফাইনালের নির্ধারক হতে পারেন তাদের কেউ একজন।

নুনো মেন্ডেস বনাম ডেঞ্জেল ডামফ্রিজ: ইন্টার কোচ সিমোন ইনজাঘির কৌশলে দলটির ডাচ ফুলব্যাক ডামফ্রিজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বার্সাকে হারাতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। পাঁচ গোলে অবদান ছিল এই রাইট ব্যাকের। আবার চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবচেয়ে অফেন্সিভ ফুলব্যাক হলেন মেন্ডেস। পিএসজির এই লেফট ব্যাককে আটকানোর কৌশলও নিতে হবে ইন্টারের।

আশরাফ হাকিমি বনাম ডিমার্কো: ইন্টারের ডিফেন্ডার ফেদেরিক ডিমার্কোর জন্য ফাইনাল বড় চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে। বার্সার লামিনে ইয়ামালকে আটকাতে তার নাভিশ্বাস উঠেছিল। ব্যর্থই হয়েছিলেন তিনি। পিএসজির বিপক্ষে তার চ্যালেঞ্জ আবার ডাবল। বর্তমান বিশ্বের সেরা রাইট ব্যাক আশরাফ হাকিমিতে আটকাতে হবে। কারণ উইঙ্গ ধরে উপরে উঠে আসেন তিনি। আবার পিএসজির লেফট উইঙ্গে খেলা উসমান ডেম্বেলেকে রুখতে হবে।

জোয়াও নেভাস বনাম নিকোলাস বেরেল্লা: ইন্টার ম্যাচের আগে বার্সার ইয়ামাল বলেছিলেন, তিনি ইন্টারের বেরেল্লার খেলা দেখান। তাকে খুবই ভালো মানের মিডফিল্ডার মনে করেন। ইন্টারের সিস্টেমে বেরেল্লা ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করেন। ফাইনালেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবেন। আবার পিএসজির ম্যাচের গতি বাড়বে নাকি কমবে তা নিয়ন্ত্রণ করেন জোয়াও নেভাস। ফাইনালে এই দুই মিডফিল্ডারের একজন ম্যাচের নিয়ন্ত্রক হতে পারেন।

মার্কুইনোস বনাম লওতারো মার্টিনেজ: ইন্টার মিলান কাউন্টার অ্যাটাকে দারুণ দক্ষ। বার্সার হাই লাইন ডিফেন্সের বিপক্ষে গতিময় মার্টিনেজ দারুণ কার্যকরী ছিলেন। গোল করেছিলেন তিনি। পেনাল্টিও আদায় করেছিলেন। পিএসজির বিপক্ষেও ইন্টারের লওতারোয় আলো থাকবে। তাকে আটকানোর ভার সামলাতে হবে মার্কুইনোসের। ফাইনালে জমতে পারে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ও আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের লড়াই।

খাভারস্তকেলিয়া বনাম পাভার্ড: কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে ফ্রান্স ফুলব্যাক বেঞ্জামিন পাভার্ডকে পায়নি ইন্টার মিলান। যে কারণে দলটি কিছুটা ভুগেও ছিল। তবে ফাইনালে পিএসজির সাবেক নাপোলি তারকা খাভারস্তকেলিয়াকে আটকানোর ভার নিতে হবে তাকে। অফেন্সিভেও দারুণ কার্যকরী বিশ্বকাপ জয়ী পাভার্ড।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘পথের বিপদ’ এবার কম
  • ৪টি থেকে ৪০ গরু আরাফাতের
  • ট্রাম্প নিজেই ভর্তি হতে পারেননি বলে কি হার্ভার্ডের ওপর এত ক্ষোভ
  • জীবিত ভাইকে ‘জুলাই আন্দোলনে শহীদ’ দেখিয়ে মামলা
  • জীবিত ভাইকে 'জুলাই আন্দোলনে শহীদ' দেখিয়ে মামলা
  • বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজ দিয়ে শুরু হচ্ছে কনকাশন বদলির নতুন নিয়ম
  • পিএসজি-ইন্টারের শিরোপা নির্ধারক হতে পারে যে ছয় লড়াই
  • ‘চাকরিটা না থাকলে মায়ের চিকিৎসা কীভাবে করব!’
  • বাংলাদেশের জন্য জাপান গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার: প্রেস সচিব