ভারতের ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ইধিকা পাল। শাকিব খানের সঙ্গে বড় পর্দায় জুটি বেঁধে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। এবার চিত্রনায়ক নিরবের সঙ্গে জুটি বাঁধলেন ইধিকা। তবে কোনো সিনেমায় নয়, একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে। এটি পরিচালনা করেছেন অনন্য মামুন। আফগানিস্তানের কোমল পানীয়র বিজ্ঞাপনটি প্রচারে আসার পর নেটদুনিয়ায় বেশ সাড়া ফেলেছে।

বিজ্ঞাপনের গল্পে রয়েছে রোমান্সের ছোঁয়া। এতে দেখা যায়—দুবাইয়ের রোদজ্বলা মরুভূমিতে ইধিকার গাড়ি নষ্ট হয়েছে। দাঁড়িয়ে থাকা ইধিকা ক্লান্ত ও বিরক্ত। এমন সময় পাশ দিয়ে জেমসবন্ড স্টাইলে হেঁটে যান নিরব। তার দৃষ্টিগোচর হয় ইধিকা। দ্বিতীয়বার চিন্তা না করেই কোমল পানীয় ছুঁড়ে দেন তার দিকে। পানীয় পান করতেই তপ্ত মরুভূমিতে বইতে শুরু করে প্রশান্তির বাতাস—দুজনের মাঝে তৈরি হয় এক রোমান্টিক মুহূর্ত।

শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে চিত্রনায়ক নিরব বলেন, “এটি আফগানিস্তানের একটি কোমল পানীয়ের বিজ্ঞাপন। যদিও এটি বিজ্ঞাপন, তবু পুরোপুরি সিনেমাটিক আবহে নির্মাণ করা হয়েছে। মরুভূমিতে ইধিকার সঙ্গে কাজ করাটা ছিল দারুণ উপভোগ্য।”

আরো পড়ুন:

অপুকে ধর্ম নিয়ে মিথ্যা না বলার আহ্বান জয়ের

বুবলীর ইঙ্গিতপূর্ণ স্ট্যাটাসের পোস্ট মর্টেম করছেন নেটিজেনরা

বিজ্ঞাপনটির সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন আলভী। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি নিজেই, সাথে আছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সিঁথি।

এ বিজ্ঞাপনচিত্রের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো পর্দায় দেখা গেল নিরব ও ইধিকাকে, যা ভবিষ্যতে বড় পর্দায় কাজের ইঙ্গিত হতে পারে বলেই মনে করছেন অনেকে।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বরাদ্দ ৪০৫ কোটি টাকা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য এককালীন অর্থ, মাসিক সম্মানী, চিকিৎসা ভাতা, বাসস্থানের ব্যবস্থা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছে অন্তর্বর্তী সরকার।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য ৪০৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।

গতকাল সোমবার অর্থ উপদেষ্টা বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তবে অর্থ বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাস্তবে তাঁদের জন্য টাকা লাগবে আরও বেশি। এ জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা ‘সংরক্ষিত’ অংশ থেকে বাড়তি ব্যয় করা হবে।

অর্থ উপদেষ্টা বাজেট বক্তব্যে আরও জানিয়েছেন, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য ২৩২ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য ভাতা, চিকিৎসা, অনুদান ও পুনর্বাসনের জন্য এ বরাদ্দ দেওয়া হয়।

আগামী অর্থবছরে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য আর কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও অর্থ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, শিগগিরই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের ভাতা দেওয়ার জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। এ ছাড়া আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে ৪০৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দের যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা থেকে জুলাই শহীদদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য এককালীন ২০ লাখ টাকা করে সঞ্চয়পত্র কিনে দেওয়া হবে—এ সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। চলতি অর্থবছরে ১০ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গেজেটভুক্ত এখন পর্যন্ত জুলাই শহীদ পরিবার ৮৩৪টি। এ ছাড়া আট বিভাগে গেজেটভুক্ত আহত ১২ হাজার ৪৩ জন। অর্থ উপদেষ্টা যে নীতিমালা তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, সে বিষয়ে ইতিমধ্যে খসড়া তৈরি হয়েছে। এতে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের নতুন করে মাসিক সম্মানী ভাতা দেওয়া এবং ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা থাকতে পারে।

অর্থ উপদেষ্টা বাজেট বক্তব্যে আরও জানিয়েছেন, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য ২৩২ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য ভাতা, চিকিৎসা, অনুদান ও পুনর্বাসনের জন্য এ বরাদ্দ দেওয়া হয়।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের এককালীন চিকিৎসাসহায়তা চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরেও থাকবে বলে জানা গেছে। চলতি অর্থবছরে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য মাসিক সম্মানী ভাতা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়নি। আগামী অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হবে। এগুলো বাস্তবায়ন করা হবে নীতিমালা চূড়ান্ত হওয়ার পর।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অতি গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য ‘ক’, গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য ‘খ’ এবং আহত ব্যক্তিদের জন্য ‘গ’ নামে তিনটি শ্রেণি করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ‘ক’ শ্রেণির ৪৯৩ জনকে মাসিক সম্মানী দেওয়া হতে পারে ২০ হাজার টাকা করে। যাঁরা উভয় হাত/পা হারিয়েছেন, দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ হারিয়েছেন, মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন বা স্বাভাবিক কাজ করার সম্পূর্ণ অক্ষম হয়েছেন—তাঁরা রয়েছেন ‘ক’ শ্রেণিতে।

‘খ’ শ্রেণির ৯০৮ জনকে দেওয়া হতে পারে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা করে। যাঁরা একটি অঙ্গ হারিয়েছেন বা আংশিক অক্ষম হয়েছেন, তাঁরা ‘খ’ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত। আর ‘গ’ শ্রেণির ১০ হাজারের বেশি আহত ব্যক্তিরা পেতে পারেন প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে। যাঁরা চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাঁরা এ শ্রেণিতে রয়েছেন।

অর্থ উপদেষ্টা জুলাই শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের যে কথাটি বলেছেন, তার ব্যাখ্যা জানতে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে গতকাল অর্থ বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। জানা গেছে, জুলাই শহীদ ও গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য ঢাকায় একটি করে ফ্ল্যাট দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। ঢাকার মিরপুর-১৪ নম্বর সেক্টরে পুলিশ স্টাফ কলেজের উল্টো পাশে এবং মিরপুর-৯ নম্বর এলাকার পল্লবী থানার পেছনে জায়গাও চিহ্নিত করা হয়েছে।

‘ক’ শ্রেণির ৪৯৩ জনকে মাসিক সম্মানী দেওয়া হতে পারে ২০ হাজার টাকা করে। যাঁরা উভয় হাত/পা হারিয়েছেন, দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ হারিয়েছেন, মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন বা স্বাভাবিক কাজ করার সম্পূর্ণ অক্ষম হয়েছেন—তাঁরা রয়েছেন ‘ক’ শ্রেণিতে।

১৪ তলাবিশিষ্ট ২৫টি ভবন নির্মাণ করা হবে, যেসব ভবনে থাকবে প্রতিটি ১ হাজার ২৫০ ও ১ হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট। এতে ৭৬১ কোটি টাকার মতো ব্যয় হতে পারে। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষকে এ জন্য অনুদান দেওয়া হতে পারে। শহীদ পরিবার ও গুরুতর আহত ব্যক্তিদের কাছে বিনা মূল্যে দেওয়া হতে পারে এসব ফ্ল্যাট। বাজেট পাস হওয়ার পর এ ব্যাপারে দরপত্র আহ্বান করা হবে। দুই বছরের মধ্যে এ কাজ শেষ করার চিন্তা সরকারের।

অর্থ উপদেষ্টা বাজেট বক্তব্যে বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণ, গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার এবং আহত ছাত্র-জনতার পুনর্বাসনসহ গণ-অভ্যুত্থানের আদর্শ ও চেতনাকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার কাজও চলমান।

‘খ’ শ্রেণির ৯০৮ জনকে দেওয়া হতে পারে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা করে। যাঁরা একটি অঙ্গ হারিয়েছেন বা আংশিক অক্ষম হয়েছেন, তাঁরা ‘খ’ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত। আর ‘গ’ শ্রেণির ১০ হাজারের বেশি আহত ব্যক্তিরা পেতে পারেন প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে। যাঁরা চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাঁরা এ শ্রেণিতে রয়েছেন।

তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো ১০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল করা হচ্ছে উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট বক্তব্যে বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্যও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ৪৮ জেলায় শিক্ষিত ও কর্মপ্রত্যাশী ২৮ হাজার ৮০০ যুবকের জন্য ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

‘দেশের ৪৮ জেলায় শিক্ষিত কর্মপ্রত্যাশী যুবদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি’ প্রকল্পটি অবশ্য আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নেওয়া হয়। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা। জানা গেছে, আগের সরকারের আমলে এর প্রায় সব ঠিকঠাক ছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে ৩০০ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কেনাকাটার প্রস্তাব অনুমোদন পায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ