শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সালাহউদ্দিনের গুমের অভিযোগ
Published: 3rd, June 2025 GMT
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ দায়ের করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা ১১টার দিকে ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কাছে অভিযোগ জমা দেন তিনি।
এতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, এ কে এম শহীদুল হক, পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, ডিএমপির সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়ার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
গুমের অভিযোগ জমা দিয়ে সাংবাদিকদের সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “দেশে ফ্যাসিস্ট আমলে যারা গুম, খুন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এই সমস্ত কিছু নিয়ে যাতে মামলা হয় — সবাই যেন মামলা করেন।” আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব মামলার বিচার যেন হয়, তার জন্য লজিস্টিক সাপোর্ট বাড়ানোর আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, “এই জাতির আকাঙ্ক্ষা ন্যায়বিচার। শুধু জুলাই-আগস্ট নয়, বিগত আমলে যত মানুষ হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদের সবকিছুর বিচার হবে। এগুলো আমাদের প্রতিশ্রুতি।”
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ ঢাকার উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন সালাহউদ্দিন। তখন তিনি যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বিএনপির অভিযোগ, সালাহউদ্দিন স্বেচ্ছায় ভারত যাননি, তাকে ধরে নিয়ে সীমান্তে পার করে দেওয়া হয়েছিল। এর পেছনে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ছিল।
নিখোঁজের ৬৩ দিন পর ওই বছরের ১১ মে মেঘালয়ের শিলংয়ের পুলিশ উদ্ভ্রান্ত অবস্থায় সালাহ উদ্দিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
ভারতে প্রবেশ করলেও তার কোনো বৈধ কাগজপত্র সেসময় মেঘালয় পুলিশ না পাওয়ায় ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার দেখায়।
সেই মামলায় ২০১৫ সালের ২২ জুলাই শিলংয়ের আদালতে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়। মেঘালয় পুলিশের করা ওই মামলায় ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর খালাস পান সালাহউদ্দিন। পরে সেই রায়ের বিরুদ্ধে ভারত সরকার আপিল করে ।ওই আপিল নিষ্পত্তি করে ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শিলং জজ কোর্ট তাকে খালাস দেয়। দ্রুত যেন তাকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়, সেই নির্দেশনা দেয় আদালত।
পাসপোর্ট না থাকায় সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশে ফিরেছেন ট্র্যাভেল পাস (ট্রাভেল পারমিট) নিয়ে । তিনি এই পারমিটের জন্য গৌহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে আবেদন করেছিলেন।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সালাহ উদ্দিন আহমেদের দেশে ফেরার পথ সুগম হয়। আইনি জটিলতা কাটিয়ে গত ১১ আগস্ট তিনি দেশে ফেরেন।
ঢাকা/এম/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ল হউদ দ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ব্যাখ্যা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদ, মো. মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানসহ শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল নিয়ে প্রকাশিত সংবাদকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর বলে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
বুধবার দুপুরে 'সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস'এর এক বিবৃতিতে বলা হয়, 'মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এবং দুই মন্ত্রী মো. মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানসহ শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল বলে সমকাল, যুগান্তর, ইত্তেফাক ও কালেরকন্ঠসহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর।'
এতে আরও বলা হয়, 'মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম জানিয়েছেন, মুজিবনগর সরকারে যারা ছিলেন, তারাও মুক্তিযোদ্ধা। যারা সশস্ত্রভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছে, যারা পরিচালনা করেছে, তারা মুক্তিযোদ্ধা। তবে ওই সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা। তিনি জানান, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) অধ্যাদেশ অনুযায়ী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রসহ কূটনীতিকরা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা। সহযোগী মানে এই নয় যে, তাদের সম্মান ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। তিনি জানান, ১৯৭২ সালে মুক্তিযোদ্ধার যে সংজ্ঞা ছিল সেটাই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২০১৮ ও ২০২২ সালে এটা পরিবর্তন করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী দুইয়েরই সম্মান, মর্যাদা, সুযোগ-সুবিধা একই থাকবে।'