হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে সিএনজিচালিত অটোরিকশার আসনে বসা নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে চালকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে কয়েক শ্রমিকের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার চানপুর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে জড়িত অভিযোগে আজ বৃহস্পতিবার সকালে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত চালকের নাম মর্তুজ আলী (৫০)। তিনি চুনারুঘাট উপজেলার নোয়ানী গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। অন্যদিকে আটক দুই ব্যক্তি হলেন আকাশ উড়াং (২৩) ও নয়ন উড়াং (২৫)। তাঁরা উভয়ই চা–শ্রমিক ও চানপুর এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ১০টার দিকে চুনারুঘাট শহর থেকে কয়েকজন যাত্রী নিয়ে চানপুর চা-বাগানসংলগ্ন চানপুর বাজারে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন অটোরিকশাচালক মর্তুজ আলী। এ সময় নয়ন ও আকাশ অটোরিকশাটিতে তাঁদের জন্য আসন সংরক্ষণ করে পাশের দোকানে চা খেতে যান। তাঁরা ফিরে দেখেন, তাঁদের আসনে অন্য যাত্রী বসিয়েছেন চালক। এ নিয়ে মর্তুজের সঙ্গে নয়ন ও আকাশের কথা–কাটাকাটি হয়। পরে তাঁরা ওই অটোরিকশায় করে চানপুর এলাকায় যান। সেখানে পৌঁছে একই বিষয় নিয়ে আবারও ঝগড়ায় জড়ান নয়ন ও আকাশ। এ সময় সেখানে উপস্থিত আরও কয়েকজন চা–শ্রমিক নয়ন ও আকাশের পক্ষ নেন। একপর্যায়ে মর্তুজকে লাঠিসোঁটা দিয়ে পেটাতে থাকেন তাঁরা। এতে ঘটনাস্থলেই মর্তুজের মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে পাঠায়।

চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর আলম বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ চুনারুঘাটের অটোরিকশাচালকেরা ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়ক (চুনারুঘাট-জগদীশপুর) এলাকায় অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন। মানববন্ধনে উপজেলার কয়েকজন অটোরিকশাচালক দাবি করেন, এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে চা-শ্রমিকদের কয়েকজন নেতাও জড়িত। তাঁদের ইন্ধনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। তাঁরা ওই নেতাদের পাশাপাশি জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ