অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিমুক্ত থেকে শান্তিতে ঈদযাত্রা করার যে আশা করেছিল, তেমনটি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এবারের ঈদেও রাজধানী ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী গাড়িগুলো গন্তব্যে পৌঁছাতে ৫ থেকে ১০ ঘণ্টা বিলম্ব হয়েছে। মহাসড়কেই অনেক যানবাহন দীর্ঘ সময় ধরে আটকে আছে। এর ওপর চলছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়। দ্বিগুণ-তিন গুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ঘরমুখী মানুষের কাছ থেকে। এখনো চারদিকে ফ্যাসিস্ট আমলের দখলদার আর চাঁদাবাজদের বৈচিত্র্যময় বিন্যাস দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।

আজ শুক্রবার বেলা তিনটায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে অবনতিশীল হয়েছে দাবি করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সারা দেশে ডাকাতি, ছিনতাই, দস্যুতা ও অপহরণের মতো ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ঢাকা মহানগরীও যেন ছিনতাইয়ের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিণত হচ্ছে। কিন্তু গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে অপরাধ দমনে পুলিশি তৎপরতা অত্যন্ত শিথিল। পুলিশ এখনো সক্রিয় হয়নি।

সাধারণ মানুষকে নিরাপদ ও শঙ্কামুক্ত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যাপকভিত্তিক উদ্যোগ নেই বলে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘মব ভায়োলেন্সের’ মাত্রা কোনোভাবেই কমছে না। এই ঈদেও মানুষের মন থেকে চুরি-ডাকাতির আতঙ্ক দূর হচ্ছে না। মানুষকে নিরাপদ ও শঙ্কামুক্ত করতে সরকারের ব্যাপকভিত্তিক উদ্যোগ নেই। এ জন্য বিএনপি দ্রুত জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে।

বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে ভারত পুশ ইনসহ নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের এক নতুন বিবর্তিত রূপ দেখা যাচ্ছে। অসংখ্য ভারতীয় নাগরিককে বিদেশি বলে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হচ্ছে। ভারত দ্বিপক্ষীয় প্রত্যাবাসন চুক্তি না মেনে ভারতীয় নাগরিকদের গায়ের জোরে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সৎ প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের নীতির পরিপন্থী কাজ।

সুদূরপ্রসারী মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবেই এই পুশ ইন করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধা নেই। এক সুদূরপ্রসারী মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবেই ভারতের নাগরিকদের বিদেশি বলে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের সরকার এ বিষয়ে কেন জোরালো ভূমিকা নিতে পারছে না। এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

রিজভী আরও বলেন, ঈদের এক দিন আগেও অনেক কারখানায় শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হয়নি। সরকারের দায়িত্ব ছিল এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। অথচ এ বিষয়ে সরকার নির্বিকার ও উদাসীন। তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে বঞ্চিত শ্রমিকদের বেতন-বোনাস মিটিয়ে দেওয়ার জোর আহ্বান জানান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

বাজেটে আগের আমলের ছাপ পরিলক্ষিত হয়েছে: গণ অধিকার পরিষদ

কালোটাকা সাদা করার সুযোগ সংবিধান–পরিপন্থী, বৈষম্যমূলক। এ বাজেটে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এতে আগের আমলের ছাপ পরিলক্ষিত হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়া জানাতে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন গণ অধিকার পরিষদের নেতারা।

দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, এনবিআর রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্য ঠিক করেছে, তা পূরণে নতুন কোনো প্রস্তাব নেই। গণ–অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতা, নির্বাচন নিয়ে টানাপোড়েন, দলগুলোর সঙ্গে সরকারের দূরত্বের কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা আরও বেশি কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

গণ অধিকার পরিষদ জানায়, গণ–অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার কর্মসংস্থান নিয়ে বিশদ পরিকল্পনা প্রকাশ করবে বলে সবার ধারণা ছিল। কারণ, চাকরিতে কোটা সংস্কার বা বৈষম্য দূরীকরণের আন্দোলন থেকেই গণ–অভ্যুত্থান রচিত হয়। কিন্তু বেকারদের জন্য আলাদা কোনো ঘোষণা নেই।

দলটি আরও জানিয়েছে, মানুষের আয় ও ব্যয়ের তারতম্য কমানো বা বেকারত্ব-দারিদ্র্য দূরীকরণ নিয়ে বাজেটে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সন্তুষ্ট করতে তাঁদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এতে ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্য ও মূল্যস্ফীতি বাড়বে। সমাজ ও রাষ্ট্রে সাম্য প্রতিষ্ঠায় সরকারের চিন্তা এই বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি।

শিক্ষা ও চিকিৎসা খাত নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চিন্তা আওয়ামী সরকারের চিন্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে দলটি। তারা বলেছে, বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ সংবিধান পরিপন্থী ও বৈষম্যমূলক। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার এমন নীতি–বিবর্জিত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ভাতা এখনো ‘অপর্যাপ্ত’ উল্লেখ করে গণ অধিকার পরিষদ বলেছে, বাজেটে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রণোদনা নেই। বিশেষ করে শেয়ারবাজারে একের পর এক লোকসান অনেককে পথে বসিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে কার্যকর পরিকল্পনা দরকার ছিল।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, আব্দুজ জাহের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ ইতিবাচক
  • অপপ্রচার বলে 'প্রতিহত' করার আহ্বান কাম্য নয়: গণসংহতি আন্দোলন
  • ‘আইনত আমি মেয়র’, জাতীয় ঈদগাহ পরিদর্শন করে বললেন ইশরাক
  • ত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির সুমহান বার্তা নিয়ে আসে ঈদ: তারেক রহমান
  • ১২ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য সরাবে ডিএসসিসি, কমিটমেন্ট দিলেন প্রশাসক
  • পরিবেশ রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী পারে, কী পারে না
  • বাজেটে আগের আমলের ছাপ পরিলক্ষিত হয়েছে: গণ অধিকার পরিষদ
  • এলপিজি সিলিন্ডারের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য হুমকি
  • দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং