দেড় বছরের মেয়েকে গলাটিপে হত্যার অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে
Published: 8th, June 2025 GMT
স্বামী-সন্তান থাকতেও জড়িয়েছিলেন অবৈধ সম্পর্কে। দেড় মাস আগে সুখের সংসার ফেলে শিশুকন্যাকে নিয়ে চলে যান সেখানে। অভিযোগ উঠেছে, নিজের কর্মে পাওয়া ভোগান্তির জীবনে ক্ষুব্ধ-বিরক্ত সেই মা গলাটিপে হত্যা করেছেন নিজের দেড় বছরের মেয়েকে। কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকার এমন ঘটনায় হতবাক এলাকাবাসী।
পুলিশ বলছে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে নিজের দেড় বছরের মেয়ে নুসরাতকে গলা টিপে হত্যা করেন আয়েশা খাতুন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সেই কথা স্বীকার করেছেন। এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌর শহরের জগন্নাথপুরের লক্ষ্মীপুর মধ্যপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রোববার দুপুরে শিশুটির দাদা আবুল কালাম দুইজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার ফুয়াদ রুহানি।
স্থানীয়রা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে আয়েশা ও তার মেয়েকে ওই বাড়িতে রেখে আলমগীর শিবপুর ইউনিয়নের টান কৃষ্ণনগর এলাকায় যান পরিবারের কাছে। শনিবার রাতে আয়েশা চিৎকার করে মেয়ে নুসরাতের মৃত্যুর খবর দেন প্রতিবেশী ও বাড়ির মালিককে। তবে শিশুটির স্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়ে সন্দেহ জাগায় মা আয়েশা এবং বাড়ির মালিক শাহীনকে নিয়ে যায় পুলিশ।
অভিযুক্ত মা আয়েশা খাতুনের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ধুবাউড়া থানার চন্দ্রগুনা গ্রামে। তিনি নরসিংদীর বেলাব থানার নিলক্ষীয়া গ্রামের ওমর ফারুকের স্ত্রী। স্বামী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও আলমগীর মিয়া নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান আয়েশা। দেড় মাস আগে আলমগীর মিয়ার সঙ্গে পৌর শহরের জগন্নাথপুরের লক্ষ্মীপুর মধ্যপাড়া গ্রামের শাহীন কবীরের বাড়িতে ভাড়ায় উঠেন আয়েশা।
পারিবারিক সূত্র জানায়, পাঁচ বছর আগে আয়েশার বিয়ে হয় ফারুকের সঙ্গে। তাদের দুই বছরের সংসারে মেয়ে নুসরাত ছাড়াও আলিফ নামে তিন বছরের ছেলে রয়েছে। ভৈরবের একটি জুতার দোকানে কাজের সূত্র ধরে দুই বছর আগে ফারুক পরিবার নিয়ে জগন্নাথপুরের লক্ষ্মীপুরে ভাড়া ওঠেন। সেই প্রতিষ্ঠানেই কাজ করতেন আলমগীর। একপর্যায়ে আয়েশার সঙ্গে পরিচয় ও পরে তা সম্পর্কে গড়ায়। দেড় মাস আগে ছেলে-স্বামী রেখে আলমগীরের কাছে চলে যায় আয়েশা।
বাড়ির মালিক শাহীন কবীর বলেন, আয়েশা ও আলমগীর স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে এক মাস আগে ভাড়া আসেন। আলমগীর বাড়ির পাশে একটি জুতার ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। আয়েশাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে পরিচয় দেন।
ঈদের দিন সন্ধ্যায় হঠাৎ চিৎকার করতে করতে আয়েশা বলেন তার সন্তান নেই। প্রথমে ভেবেছিলেন হারিয়ে গেছে। পরে মেয়ের নিথর দেহ খুঁজে পান এক ঘরে।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। শিশুটির স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বলে সন্দেহ জাগলে তারা মা আয়েশা ও বাড়িওয়ালা শাহীনকে নিয়ে যান।
নিহত শিশুটির দাদা আবুল কালাম জানান, আয়েশা তার ছেলের জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। পথের কাটা সরাতেই আয়েশা ও আলমগীর তার নাতনীকে গলা টিপে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডে আয়েশার ভাই ও বাবা-মায়ের যোগসাজশ রয়েছে। এদিকে পুলিশ হেফাজতে থাকা আয়েশা মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানায় পুলিশ।
ওসি রুহানী বলেন, প্রাথমিকভাবে শিশুটির মা হত্যার দায় স্বীকার করেছে। শিশুটির দাদা আয়েশা ও আলমগীরকে আসামি করে মামলা করেছেন। শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভ রব ক শ রগঞ জ শ শ হত য ও আলমগ র ম স আগ কর ছ ন ক র কর বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
হাতিয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার তমরদ্দি ইউনিয়নে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার তমরদ্দি ইউনিয়নের বেঁকের বাজার রাস্তায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন মোহাম্মদ এরশাদ, মোহাম্মদ রুবেল, মোহাম্মদ ইউসুফ, মো.জুয়েল, মোহাম্মদ রুবেল, মোহাম্মদ ছালেহ উদ্দিন, মোহাম্মদ রিটন, মোহাম্মদ রাফুৃল, মো. রাসেল, মো. মেহরাজ উদ্দিন ও আলাউদ্দিন জাহের।
আহতদের হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত আলাউদ্দিন জাহেরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, তমরদ্দি লঞ্চঘাট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। মঙ্গলবার তমরদ্দি ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার জন্য বলীর পুলের রাস্তার মাথায় ভিড় করছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর গ্রুপের কর্মীরা। সেখানে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর গ্রুপের সমর্থকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে উভয়পক্ষের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
এতে তানভীর গ্রুপের ৪ জন আহত হলে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এছাড়াও সংঘর্ষে আলমগীর গ্রুপের ৬ জন আহত হন। তাদেরও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান বিএনপি নেতা আলমগীর।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য রাস্তার মাথায় সবাই জড়ো হলে সেখানে ফকিরা চোরা, সাজ্জাদ, বাবুল, তারেক, জাহেদ, খালেক, রিপন, মজনু, খোকন ও সুমনের নেতৃত্বে আমার কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়।
তমরদ্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দার বলেন, তমরদ্দি ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কর্মী সমর্থকদের আসার পথে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এতে কর্মীরা প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়। এতে আমার ৪ কর্মী আহত হন।
এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা বলেন, আমি অনুষ্ঠানস্থলে এবং পুলিশ টহলে আছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।