যুক্তরাষ্ট্রের টিকাসংক্রান্ত কমিটির সব সদস্যকে বরখাস্ত করলেন রবার্ট এফ কেনেডি
Published: 10th, June 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের টিকাবিষয়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা প্যানেলের সব সদস্যকে বরখাস্ত করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র। গতকাল সোমবার তিনি এ ঘোষণা দেন। মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, প্যানেলটির সদস্যদের স্বার্থের দ্বন্দ্ব রয়েছে।
টিকাসংক্রান্ত ওই উপদেষ্টা কমিটির নাম অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন প্র্যাকটিসেস (এসিআইপি)। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক মতামত প্রতিবেদন এবং একটি সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটির ১৭ জন বিশেষজ্ঞের সবাইকে বরখাস্ত করার বিষয়টি প্রকাশ পায়।
টিকা নিয়ে সব সময় সন্দিহান রবার্ট এফ কেনেডি। তিনি দুই দশক ধরে টিকাবিরোধী ভুল তথ্য প্রচার করে আসছেন। তিনি কমিটির সদস্যদের বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে জনসাধারণের আস্থা ফিরে পাওয়ার জন্য জরুরি বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি দাবি করেন, ওই কমিটি ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আপস করছে।
স্বাস্থ্য ও মানবসেবা দপ্তরের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে কেনেডি বলেন, ‘আজ আমরা টিকার পক্ষে-বিপক্ষের যেকোনো নির্দিষ্ট এজেন্ডার ঊর্ধ্বে উঠে জন–আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’
নিজের লেখা মতামত প্রতিবেদনে কেনেডি দাবি করেন, কমিটি স্থায়ী স্বার্থের দ্বন্দ্বে জর্জরিত। এটি নিতান্তই যেকোনো টিকাকে অনুমোদন দেওয়ার একটি সিলমারা সংস্থায় পরিণত হয়েছে।
বহিষ্কৃত সদস্যদের সবাই সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে নিয়োগ পেয়েছিলেন। কেনেডি আরও বলেন, বহিষ্কার হওয়া সদস্যদের জায়গায় নতুন সদস্যদের নিয়োগ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এসিআইপির সদস্যরা স্বীকৃত বিশেষজ্ঞদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হন। তাঁদের সম্ভাব্য স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক।
শিশু চিকিৎসক ও ভাইরাস–বিশেষজ্ঞ পল অফিট কেনেডির সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন। পল অফিট নিজেও ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ওই টিকা প্যানেলের সদস্য ছিলেন।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘তিনি (কেনেডি) মনে করেন, যাঁরা টিকা সম্পর্কে ইতিবাচকভাবে কথা বলেন বা টিকাবিষয়ক সুপারিশ করেন, তাঁরা নিশ্চয়ই গভীরভাবে ওষুধশিল্পের পক্ষে চলে গেছেন।
অফিট বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘তিনি এমন একটি সমস্যার সমাধান করতে যাচ্ছেন, যার আদতে অস্তিত্বই নেই।’
২৫ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) আটলান্টা সদর দপ্তরে এসিআইপির পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে। এ বৈঠকে যেসব টিকা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা, তার মধ্যে আছে অ্যানথ্রাক্স, কোভিড-১৯, হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, লাইম রোগ, রেসপিরেটরি সিনসিশাল ভাইরাস এবং আরও বেশ কিছু রোগের টিকা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বরখ স ত র সদস য কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
বিএসবির বাশার প্রতারণার আরও ৯ মামলায় গ্রেপ্তার
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ‘বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক’-এর চেয়ারম্যান খায়রুল বাশারকে আরও নয়টি প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ বুধবার এই আদেশ দেন।
ঢাকার সিএমএম আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শামসুদ্দোহা সুমন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১০ দিনের রিমান্ড শেষে খায়রুল বাশারকে আজ বুধবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়। প্রতারণার পৃথক নয়টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। শুনানি নিয়ে আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় ১৪ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে খায়রুল বাশারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত খায়রুল বাশার তাঁর স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশারকে সঙ্গে নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র গড়ে তোলেন। চক্রটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ, স্কলারশিপ ও ভিসা প্রক্রিয়াকরণের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। ভুয়া ভিসা প্রসেসিং, মনগড়া প্রতিনিধিত্ব ও চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করা হতো। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের অনেকের নামে বিদেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনই করা হয়নি। আবার অনেকে বিদেশে গিয়ে নানাভাবে প্রতারিত হয়েছেন।
সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৪৪৮ জন ভুক্তভোগী প্রতারিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন ভুক্তভোগী প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা করেছেন।
আরও পড়ুনউচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ, বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান বাশার গ্রেপ্তার১৪ জুলাই ২০২৫