গত ১০ বছরের তুলনায় এবার কোরবানির চামড়া সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। তিনি বলেছেন, আগামী বছর আরও দাম বাড়বে বলে আমরা আশা করছি। এজন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের অর্থনীতির প্রসারের জন্য বাণিজ্য সম্প্রসারণে মনোযোগ দিতে হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে নটোরের চকবৈদ্যনাথ এলাকায় চামড়া আড়ৎ পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশে এবছর লবণের উৎপাদন অনেক বেশি হয়েছে। সরকার সাড়ে ৭ লাখ মণ লবণ কিনেছে। সেজন্য লবণ চাষীদেরও একটা উপায় হয়েছে। বর্তমান বাজার দর ১ হাজার টাকা মণ। তাতেও চাষী বাঁচবে না। সরকারকে সবসময় সামগ্রিকভাবে চিন্তা করতে হয়। শিল্প মন্ত্রণালয় সাড়ে ৭ লাখ মণ লবণ কিনেছে মাদ্রাসায় বিনামূল্যে দেওয়ার জন্য। এর ফলে বাজারে একটা সুষম কাঠামো তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, তাদেরও কিছু ভুল রয়েছে। সেই ভুল থেকেই তারা জানতে ও শিখতে চান। অনেক মাদ্রাসা বিনামূল্যে লবণ পেয়েও কাঁচা চামড়া ও লবণ আলাদা করে বিক্রি করেছে।

চামড়া সংরক্ষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে চামড়া নষ্ট না হয় এবং ব্যবসায়ীরা ভালো দাম পান। বাজারে একদিনে প্রচুর সরবরাহ হলে দামে কিছুটা প্রভাব পড়ে। তবে সংরক্ষণ করে ধীরে ধীরে বিক্রি করলে আরও ভালো দাম পাওয়া সম্ভব। সরকার বিসিকের মাধ্যমে ট্যানারি মালিকদের তিন ধরনের লবণের নমুনা দিয়েছে। তারা পরীক্ষার পর উপযুক্ত লবণ নির্ধারণ করেছেন। কেউ কেউ লবণের দাম বাড়ার কথা বলছেন, কিন্তু আমাদের লবণচাষীদের কথাও চিন্তা করতে হবে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসা চাই। শুধু একটি বা দুটি দেশের সঙ্গে নয়, বরং ভারত, চীন, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করতে চাই। একইভাবে বৈশ্বিক বাজার থেকেও পণ্য আমদানি করব।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাবুর রহমানসহ পুলিশ কর্মকর্তারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ণ জ য উপদ ষ ট উপদ ষ ট সরক র র লবণ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ