১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছে কোরবানির চামড়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা
Published: 10th, June 2025 GMT
গত ১০ বছরের তুলনায় এবার কোরবানির চামড়া সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। তিনি বলেছেন, আগামী বছর আরও দাম বাড়বে বলে আমরা আশা করছি। এজন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের অর্থনীতির প্রসারের জন্য বাণিজ্য সম্প্রসারণে মনোযোগ দিতে হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে নটোরের চকবৈদ্যনাথ এলাকায় চামড়া আড়ৎ পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশে এবছর লবণের উৎপাদন অনেক বেশি হয়েছে। সরকার সাড়ে ৭ লাখ মণ লবণ কিনেছে। সেজন্য লবণ চাষীদেরও একটা উপায় হয়েছে। বর্তমান বাজার দর ১ হাজার টাকা মণ। তাতেও চাষী বাঁচবে না। সরকারকে সবসময় সামগ্রিকভাবে চিন্তা করতে হয়। শিল্প মন্ত্রণালয় সাড়ে ৭ লাখ মণ লবণ কিনেছে মাদ্রাসায় বিনামূল্যে দেওয়ার জন্য। এর ফলে বাজারে একটা সুষম কাঠামো তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, তাদেরও কিছু ভুল রয়েছে। সেই ভুল থেকেই তারা জানতে ও শিখতে চান। অনেক মাদ্রাসা বিনামূল্যে লবণ পেয়েও কাঁচা চামড়া ও লবণ আলাদা করে বিক্রি করেছে।
চামড়া সংরক্ষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে চামড়া নষ্ট না হয় এবং ব্যবসায়ীরা ভালো দাম পান। বাজারে একদিনে প্রচুর সরবরাহ হলে দামে কিছুটা প্রভাব পড়ে। তবে সংরক্ষণ করে ধীরে ধীরে বিক্রি করলে আরও ভালো দাম পাওয়া সম্ভব। সরকার বিসিকের মাধ্যমে ট্যানারি মালিকদের তিন ধরনের লবণের নমুনা দিয়েছে। তারা পরীক্ষার পর উপযুক্ত লবণ নির্ধারণ করেছেন। কেউ কেউ লবণের দাম বাড়ার কথা বলছেন, কিন্তু আমাদের লবণচাষীদের কথাও চিন্তা করতে হবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসা চাই। শুধু একটি বা দুটি দেশের সঙ্গে নয়, বরং ভারত, চীন, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করতে চাই। একইভাবে বৈশ্বিক বাজার থেকেও পণ্য আমদানি করব।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাবুর রহমানসহ পুলিশ কর্মকর্তারা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ণ জ য উপদ ষ ট উপদ ষ ট সরক র র লবণ
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা নীতির বিরোধিতাকারী পররাষ্ট্র কর্মকতাদের পদত্যাগ করতে বলল যুকরাজ্য
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডে যুক্তরাজ্যের সম্ভাব্য ‘জড়িত থাকার’ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশকারী ৩০০ জনেরও বেশি ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মীকে বলা হয়েছে, তারা যদি সরকারের নীতির সঙ্গে মৌলিকভাবে একমত না হন তবে তারা পদত্যাগ করতে পারেন।
মঙ্গলবার (১০ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
বিবিসির মতে, গত মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিকে পাঠানো একটি অভ্যন্তরীণ চিঠিতে ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাজ্যের অব্যাহত অস্ত্র বিক্রির সমালোচনা করা হয়েছিল এবং ইসরায়েলি সরকারকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি চরম অবজ্ঞা’ করার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
আরো পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের একদল সংসদ সদস্যের সাক্ষাৎ
এয়ারবাসের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
গত ১৬ মে মন্ত্রীর কাছে পাঠানো পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মীদের ওই চিঠিতে গাজায় মানবিক সাহায্যের ওপর ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞা, মার্চ মাসে ১৫ জন মানবিক কর্মীর হত্যা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন সম্প্রসারণের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল।
লন্ডন এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের ভূমিকার প্রতিনিধিত্বকারী স্বাক্ষরকারীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, নীতি বাস্তবায়নে তাদের ভূমিকা ভবিষ্যতে যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে মামলায় তাদের আইনি দায়বদ্ধতার সম্মুখীন করতে পারে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এটি চতুর্থবারের মতো যুক্তরাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের চিঠি, যা গাজায় বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির মধ্যে যুক্তরাজ্যের অবস্থান নিয়ে ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ অস্বস্তি সামনে আনলো।
বিবিসি জানিয়েছে, গত ২৯ মে এক প্রতিক্রিয়ায়, পররাষ্ট্র দপ্তরের স্থায়ী আন্ডার সেক্রেটারি স্যার অলিভার রবিন্স এবং নিক ডায়ার পররাষ্ট্র কর্মীদের উদ্বেগ স্বীকার করেছেন। তবে তারা জোর দিয়ে বলেছেন, বেসামরিক কর্মচারীদের অবশ্যই আইনি সীমার মধ্যে ‘সম্পূর্ণ হৃদয়ে; সরকারি নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।
তারা পদত্যাগকে গভীর মতবিরোধকারীদের জন্য ‘সম্মানজনক পদক্ষেপ’ হিসেবে সুপারিশ করেছেন। এ ঘটনা কিছু স্বাক্ষরকারীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, এ ধরনের প্রতিক্রিয়া হতাশাজনক, মতবিরোধের জন্য স্থান সংকুচিত হচ্ছে।
পররাষ্ট্র দপ্তর তার অবস্থান রক্ষা করে বলেছে, তাদের কর্মীদের উদ্বেগ প্রকাশ করার অধিকার রয়েছে, কিন্তু সরকার তার গাজা নীতিতে ‘কঠোরভাবে আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগ করেছে’। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে, প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের নেতৃত্বে লেবার সরকার আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের ঝুঁকি উল্লেখ করে ইসরায়েলে ৩৫০টি অস্ত্র রপ্তানি লাইসেন্সের মধ্যে প্রায় ৩০টি স্থগিত করেছে।
গত ১৯ মে, ফ্রান্স ও কানাডার সঙ্গে যুক্তরাজ্যও যোগ দিয়ে হুমকি দেয় যে, ইসরায়েল যদি গাজায় তাদের সামরিক অভিযান বন্ধ না করে এবং সাহায্য নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেয়, তাহলে ‘জোরালো পদক্ষেপ’ নেওয়া হবে।
সমালোচকরা, যাদের মধ্যে একজন সাবেক কর্মকর্তাও রয়েছেন তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেন, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিক্রিয়া ‘অস্পষ্ট’।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর নিরপেক্ষ সিভিল সার্ভিস পরামর্শের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। সেই সঙ্গে উল্লেখ করেছে, কর্মীদের উদ্বেগ মোকাবিলার জন্য একটি ‘চ্যালেঞ্জ বোর্ড’ গঠন ও আলোচনা বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ