মেহেরপুরে বাণিজ্য মেলায় প্রবেশ টিকিটের নামে চলছে লটারি, বন্ধের দাবি বাসিন্দাদের
Published: 10th, June 2025 GMT
লটারিতে একটি মোটরসাইকেল জেতার আশায় ৮০ টাকায় চারটি টিকিট কিনেছিলেন ভ্যানচালক সজীব মিয়া। এতে তাঁর ভাগ্য না ফিরলেও দমে যাননি। গতকাল সোমবার দুপুরে আরও চারটি টিকিট কেনেন তিনি। মেহেরপুর সদরে র্যাফল ড্রর নামে মোটরসাইকেল বা অন্য উপহার জিততে এভাবে মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ, মেহেরপুর শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকায় স্বপ্নচূড়া সংগঠনের উদ্যোগে ৫ জুন থেকে চলছে মাসব্যাপী ‘দেশীয় শিল্প বাণিজ্য মেলা’। মেলায় প্রবেশ টিকিটের ওপর র্যাফল ড্রর নামে চলছে অবৈধ জুয়ার উৎসব। জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আহসান হাবীব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক তামিম হোসেন ও জেলার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য ইমতিয়াজ আহমেদসহ কয়েকজনের প্রত্যক্ষ মদদে এই লটারি চলছে। তবে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন।
সজীব মিয়া জানান, লটারিতে প্রতিদিন একটি করে নতুন মোটরসাইকেল উপহার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। মোটরসাইকেল পাওয়ার আশায় দৈনিক ৮০ টাকা দিয়ে চারটি করে টিকিট কিনেছেন। এর আগেও পাঁচ হাজার টাকার টিকিট কিনেছিলেন। তবে কিছুই পাননি। এবার আশা করছেন, হয়তো কিছু পাবেন।
গতকাল সোমবার দেখা গেছে, পৌর বাস টার্মিনাল এলাকায় শিল্প ও পণ্য বাণিজ্য মেলায় নানা পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। মেলার প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে প্রবেশ টিকিট বিক্রি করছেন দুই ব্যক্তি। দর্শনার্থীদের বেশি ভিড় সেখানেই। সন্ধ্যা সাতটা থেকে সারা রাত চলে এই উন্মাদনা। প্যান্ডেলের সামনে লাকি কুপনের মঞ্চ। রাত ১১টায় শুরু হয় কুপনের ড্র। কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ টিকিট বিক্রি না হলে আরও দেরিতে শুরু হয় এই লটারি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, র্যাফল ড্রর নামে একেবারে উন্মুক্তভাবে জুয়া চলছে মেহেরপুরে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ এসব অবৈধ জুয়া বন্ধ করতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ১০২টি ইজিবাইকে মাইক লাগিয়ে জেলার অধিকাংশ এলাকায় দিনরাত চলেছে এসব টিকিট বিক্রি। মাত্র ২০ টাকা খরচ হবে ভেবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অনেকেই ভাগ্য পরীক্ষায় শামিল হচ্ছেন। প্রতিটি ইজিবাইকে এক হাজার করে লটারির টিকিট বিক্রির টার্গেট দেওয়া হয়। এভাবে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা তুলে নিচ্ছে চক্রটি। অথচ পুরস্কার পাচ্ছেন হাতে গোনা কয়েকজন। এসব পুরস্কারের মূল্য টিকিট বিক্রির করে অর্জিত অর্থের তুলনায় অনেক কম।
সমাজকর্মী রফিকুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা মিলে মেহেরপুরে জুয়ার আয়োজন করেছে। জনগণের টাকা লুটে নেওয়ার জন্য আয়োজন করা হয়েছে এই লটারি।
মেলায় প্রবেশের টিকিটের নামে বিক্রি হচ্ছে লটারির কুপন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রব শ
এছাড়াও পড়ুন:
বল এখন ড. ইউনূসের কোর্টে: রুহিন হোসেন প্রিন্স
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লন্ডনে অনুষ্ঠেয় শুক্রবারের বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, এই বৈঠকে কি হবে এটা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ঠিক করতে হবে। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও মানুষের দাবি, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বল এখন তাঁর কোর্টে।
বৃহস্পতিবার সমকালকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় রুহিন হোসেন প্রিন্স এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বামপন্থি দলগুলোসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছি। বিএনপিও একই দাবি তুলেছে। এখন শুনছি, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ নিয়েও আলোচনা হবে। সেখানে কী সমঝোতা হবে জানি না। তবে ড. ইউনূসকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন প্রশ্নে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করতেই হবে।’
প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের প্রক্রিয়া ও উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে মন্তব্য করে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘সেখানে তিনি কী জন্য গেলেন, দেশের জন্য কী অর্জন করে আসবেন- সেটা নিয়ে নানা কথা উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা দেখছি। তারপরও বলবো- সেখানে তিনি কোনো বৈঠক করুন বা না করুন- নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার প্রশ্নে তাঁকেই দৃশ্যমান ভূমিকা নিতে হবে। এটাই তার ওপর জাতির ম্যান্ডেট।’
‘কাজেই দেশে ফিরে প্রধান উপদেষ্টাকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণা করতে হবে এবং সেটা ডিসেম্বরের মধ্যেই হতে হবে। অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যেসব সংস্কার প্রয়োজন তা করতে হবে। বিচার কার্যক্রমও দৃশ্যমান হতে হবে। আমরা মনে করি, এসব কাজ করেই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন শেষ করা সম্ভব, বলেন রুহিন হোসেন প্রিন্স।