রাতেই ফুটবলারদের ক্যাম্প ভাঙা হাঁট, একই ফ্লাইটে ফিরে গেলেন হাজমা-শমিত
Published: 11th, June 2025 GMT
জাতীয় স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইটের আলো তখন নিভে গেছে। খালি গ্যালারি, প্রায় শূন্য প্রেসবক্স। স্কোরবোর্ডে জ্বলজ্বল করছে ২-১ গোলে পরাজয়ের আক্ষেপ।
সেই পরাজয়ের ভার নিয়েই রাত ১০টার দিকে বাংলাদেশ দল ফিরে যায় শাহবাগের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে। সিঙ্গাপুর ম্যাচ ঘিরে যতটা উন্মাদনা, শেষবেলায় ততটাই হতাশা। ম্যাচটা যদি অন্তত ড্র হতো, কিছুটা সান্ত্বনা মিলত, কিন্তু তা-ও হলো না।
হোটেলেও যেন ছিল স্টেডিয়ামের নিঃশব্দতা। পরিবেশটা যেন এক ভাঙা হাঁট। কেউ কথা বলছেন না, কেউ চুপচাপ ফোনে তাকিয়ে, কেউবা লাগেজ টেনে দরজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। একটা লড়াইয়ের শেষ, এখন তো স্যুটকেস গুটিয়ে বাড়ি ফেরার পালা।
রাত ১১টায় বাংলাদেশ দলের হোটেলে ঢুকে প্রথমেই দেখা ডিফেন্ডার ঈসা ফয়সালের সঙ্গে। ভুটান ও সিঙ্গাপুর—কোনো ম্যাচেই মাঠে নামা হয়নি তাঁর। অনেকেই ভেবেছিলেন সিঙ্গাপুর ম্যাচে রাইট ব্যাক তাজ উদ্দিনের বদলে দেখা যাবে ঈসাকে। কোচ হাভিয়ের কাবরেরা আস্থা রেখেছেন শাকিল তপুর ওপর। হোটেল ছাড়ার মুখে ঈসার মুখে বিষাদের ছায়া, বললেন, ‘হারের পর আসলে কিছু বলার থাকে না। প্রথমার্ধটা আমাদের অত ভালো হয়নি, তবে দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম।’
এরপর একে একে লবিতে নামলেন ইব্রাহিম, সুমন রেজা, ফাহিম। সবাই লাগেজ হাতে। বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে সবাইকে হোটেল ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে আগেই।
এক ফাঁকে দেখা গেল বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল, সহসভাপতি ফাহাদ করিমসহ কর্মকর্তাদেরও হোটেল ত্যাগ করতে। তাঁরা ফুটবলারদের পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন। এই হারে ভেঙে পড়ার কিছু নেই, এমনটাই সভাপতি বলেছেন ফুটবলারদের।
হামজা চৌধুরী ও শমিত সোম আজ সকাল পৌনে সাতটায় ঢাকা ছেড়েছেন। টার্কিশ এয়ারলাইনসের একই ফ্লাইটে উঠেছেন দুজন। হামজার গন্তব্য ইংল্যান্ড, শমিতের কানাডা। সিঙ্গাপুর ম্যাচে অভিষিক্ত শমিত দারুণ খেলেছেন। দল হারলেও নিজেকে মেলে ধরার তৃপ্তি নিয়ে ভোর চারটার দিকে হামজার সঙ্গে হোটেল ত্যাগ করেন তিনি। হামজার বাবা-মাও আজ ঢাকা ছাড়বেন অন্য একটি ফ্লাইটে।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে হোটেলের লবিতে দেখা গেল টিম ম্যানেজার আমের খানকে। বললেন, ‘হামজা ও শমিতের জন্য পুলিশ কর্ডন নিশ্চিত করেছি। কারণ, ওদের তো একা ছাড়া যাবে না।’
অভিষেক ম্যাচ খেলার পর ভোরেই ঢাকা ছেড়েছেন শমিত সোম।.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।