২০ হাজার পরিবারে মাস্তুল ফাউন্ডেশনের কোরবানির মাংস বিতরণ
Published: 11th, June 2025 GMT
প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদুল আযহার ত্যাগের মহিমায় সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে দেশব্যাপী কোরবানি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে দাতব্য প্রতিষ্ঠান মাস্তুল ফাউন্ডেশন।
এবারের কোরবানির ঈদে প্রায় ২০ হাজার দরিদ্র পরিবারে কোরবানির মাংস বিতরণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ঈদের দিন শনিবার (৭ জুন) থেকে ঈদের তৃতীয় দিন পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালিত হয়।
এছাড়াও বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত হাজারো পরিবারে কোরবানির মাংস বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
শুধু মাংস বিতরণই নয় বরং আত্মসম্মানের ভয়ে যারা কারো কাছে মাংস চাইতে পারে না, তাদের কাছেও গোপনীয়তার সঙ্গে সহায়তা মাংস পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে মাস্তুল ফাউন্ডেশন। এই ঈদে ঢাকাসহ ১৮টি জেলায় কোরবানি কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এর মধ্যে ২০২৪ এর বন্যাকবলিত এলাকা কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর, পাবনা, শেরপুর, কুড়িগ্রাম, নেত্রকোনা, দিনাজপুর, কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন ও অন্যান্য জেলা রয়েছে।
মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক জনাব কাজী রিয়াজ রহমান বলেন, “ঈদুল আযহা ত্যাগের বার্তা নিয়ে আসে। আমাদের এই কোরবানি কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হলো, এই ত্যাগের আনন্দকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা চাই, কেউ যেন ঈদে কোরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত না হয়।”
স্থানীয়দের অনেকে মাস্তুল ফাউন্ডেশনের এই কোরবানি কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়েছে। তারা জানান, মাস্তুল ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগে তাদের মত অসহায় যারা বছরে মাংস কিনতে পারে না, তারা সামান্য হলেও মাংস খাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
মাস্তুল ফাউন্ডেশন বহুমুখী সমাজসেবামূলক কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- নিজস্ব স্কুল, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও বৃদ্ধআশ্রম যেখানে শতাধিক পিতামাতাহীন অনাথ/এয়াতিম শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধ- বৃদ্ধা বসবাস করেন। এর বাইরে কয়েক জেলায় প্রজেক্ট স্কুলগুলোতে হাজারেরও অধিক সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের সকল শিক্ষার উপকরণ দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পুষ্টিকর খাবার, শিশু অধিকার, মৌলিক চাহিদা নিশ্চয়তা করা হচ্ছে।
এছাড়া চিকিৎসা খাতে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে ‘মাস্তুল এইড’ প্রকল্পের মাধ্যমে অর্ধশতাধিকের অধিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অসচ্ছল পঙ্গুত্ববরণকারী রোগীদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি হুইলচেয়ার ও কৃত্রিম পা প্রদান করেছে।
মাস্তুল ফাউন্ডেশনের রয়েছে সেলাই প্রশিক্ষণ ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র- যার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষম করে তোলা হচ্ছে। এর বাইরে যাকাত স্বাবলম্বী প্রজেক্টের মাধ্যমে ১০০০ জনের বেশি মানুষকে স্বাবলম্বী করা হয়েছে।
মাস্তুলের প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে দাফন-কাফন সেবা প্রজেক্ট, যার মাধ্যমে করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তিন হাজারেরও অধিক লাশ দাফন হয়েছে। রয়েছে মাস্তুল মেহমানখানা। যেখান থেকে শতাধিক অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষের একবেলা পেট পুরে খাওয়ার ব্যাবস্থা হয়।
ঢাকা/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র ম পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।