প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদুল আযহার ত্যাগের মহিমায় সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে দেশব্যাপী কোরবানি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে দাতব্য প্রতিষ্ঠান মাস্তুল ফাউন্ডেশন। 

এবারের কোরবানির ঈদে প্রায় ২০ হাজার দরিদ্র পরিবারে কোরবানির মাংস বিতরণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ঈদের দিন শনিবার (৭ জুন) থেকে ঈদের তৃতীয় দিন পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালিত হয়। 

এছাড়াও বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত হাজারো পরিবারে কোরবানির মাংস বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

শুধু মাংস বিতরণই নয় বরং আত্মসম্মানের ভয়ে যারা কারো কাছে মাংস চাইতে পারে না, তাদের কাছেও গোপনীয়তার সঙ্গে সহায়তা মাংস পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে মাস্তুল ফাউন্ডেশন। এই ঈদে ঢাকাসহ ১৮টি জেলায় কোরবানি কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। 

এর মধ্যে ২০২৪ এর বন্যাকবলিত এলাকা কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর, পাবনা, শেরপুর, কুড়িগ্রাম, নেত্রকোনা, দিনাজপুর, কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন ও অন্যান্য জেলা রয়েছে। 

মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক জনাব কাজী রিয়াজ রহমান বলেন, “ঈদুল আযহা ত্যাগের বার্তা নিয়ে আসে। আমাদের এই কোরবানি কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হলো, এই ত্যাগের আনন্দকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা চাই, কেউ যেন ঈদে কোরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত না হয়।”

স্থানীয়দের অনেকে মাস্তুল ফাউন্ডেশনের এই কোরবানি কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়েছে। তারা জানান, মাস্তুল ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগে তাদের মত অসহায় যারা বছরে মাংস কিনতে পারে না, তারা সামান্য হলেও মাংস খাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। 

মাস্তুল ফাউন্ডেশন বহুমুখী সমাজসেবামূলক কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- নিজস্ব স্কুল, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও বৃদ্ধআশ্রম যেখানে শতাধিক পিতামাতাহীন অনাথ/এয়াতিম শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধ- বৃদ্ধা বসবাস করেন। এর বাইরে কয়েক জেলায় প্রজেক্ট স্কুলগুলোতে হাজারেরও অধিক সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের সকল শিক্ষার উপকরণ দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পুষ্টিকর খাবার, শিশু অধিকার, মৌলিক চাহিদা নিশ্চয়তা করা হচ্ছে। 

এছাড়া চিকিৎসা খাতে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে ‘মাস্তুল এইড’ প্রকল্পের মাধ্যমে অর্ধশতাধিকের অধিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অসচ্ছল পঙ্গুত্ববরণকারী রোগীদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি হুইলচেয়ার ও কৃত্রিম পা প্রদান করেছে। 

মাস্তুল ফাউন্ডেশনের রয়েছে সেলাই প্রশিক্ষণ ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র- যার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষম করে তোলা হচ্ছে। এর বাইরে যাকাত স্বাবলম্বী প্রজেক্টের মাধ্যমে ১০০০ জনের বেশি মানুষকে স্বাবলম্বী করা হয়েছে। 

মাস্তুলের প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে দাফন-কাফন সেবা প্রজেক্ট, যার মাধ্যমে করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তিন হাজারেরও অধিক লাশ দাফন হয়েছে। রয়েছে মাস্তুল মেহমানখানা। যেখান থেকে শতাধিক অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষের একবেলা পেট পুরে খাওয়ার ব্যাবস্থা হয়।

ঢাকা/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র ম পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ সম্পর্কে কিছু তথ্য

এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনার শিকার বোয়িং ৭৮৭ মডেলের কোনো উড়োজাহাজ এর আগে কখনও এভাবে ভেঙে পড়েনি। বোয়িং ৭৮৭ মডেলের উড়োজাহাজটি ‘ড্রিমলাইনার’ নামেও পরিচিত, যা ১৪ বছর আগে আকাশে উড্ডয়ন করে। মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে উড়োজাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটি মডেলটির ১০০ কোটি যাত্রী পরিবহনের মাইলফলক উদ্‌যাপন করেছে।

সে উপলক্ষে কোম্পানিটি জানিয়েছিল, বিশ্বজুড়ে ১ হাজার ১৭৫টির বেশি ৭৮৭ মডেলের উড়োজাহাজ প্রায় ৫০ লাখ ফ্লাইট সম্পন্ন করেছে। এ সময় মডেলটির ফ্লাইটগুলো তিন কোটি ঘণ্টার বেশি সময় আকাশে ছিল।

এ দুর্ঘটনা বোয়িংয়ের জন্য বড় একটি ধাক্কা। এমন এক সময়ে এ দুর্ঘটনা ঘটল, যখন কোম্পানিটি ৭৩৭ সিরিজের উড়োজাহাজ নিয়ে বিভিন্ন জটিলতা ও প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

৭৮৭-৮ বোয়িং ড্রিমলাইনার প্রথম বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু করেছিল ২০১১ সালে। এই বিমানটি প্রযুক্তি, যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্য এবং জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য অসাধারণ। বর্তমানে এয়ার ইন্ডিয়া ছাড়া অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ (ANA), জাপান এয়ারলাইন্স, কাতার এয়ারওয়েজ, আমেরিকান এয়ারলাইন্স, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স, ল্যাটাম এয়ারলাইন্স এই বোয়িং ব্যবহার করে।

বোয়িং ৭৮৭-৮ কোন দিক থেকে আলাদা?

এটাই ড্রিমলাইনার পরিবারের প্রথম মডেল - বোয়িং ৭৮৭-৮ হল ৭৮৭ সিরিজের প্রথম সংস্করণ।
আন্তর্জাতিক দীর্ঘপথের উপযোগী- ১৩,৫৩০ কিমি পর্যন্ত উড়তে পারে।
সাধারণত ২৫৬ যাত্রী বহন করতে সক্ষম (২-ক্লাস লেআউটে)।

প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও বিপ্লব এনেছিল এই বোয়িং। বিমানটির প্রায় ৫০ শতাংশ অংশ তৈরি হয়েছে কার্বন ফাইবার কম্পোজিট দিয়ে। ফলে এটি অনেক হালকা ও টেকসই। প্রচলিত পদ্ধতির বদলে উন্নত ইলেকট্রিক সিস্টেম ব্যবহারে জ্বালানি সাশ্রয় হয়। রোলস-রয়েস ট্রেন্ট ১০০০ অথবা জেনারেল ইলেকট্রিকের GEnx-1B ইঞ্জিন ব্যবহৃত হয়েছে এবং ডানার বিশেষ ডিজাইন বাতাসে ঘর্ষণ কমায় এবং জ্বালানি খরচ বাঁচায়।

এছাড়াও ২০ শতাংশ পর্যন্ত জ্বালানি সাশ্রয় পুরনো ৭৬৭ মডেলের তুলনায়। কার্বন নিঃসরণ কমায়। ফলে ছোট শহর থেকে বড় শহরের সরাসরি ফ্লাইটে নতুন সুযোগ তৈরি করেছে।

২০১৩ সালে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির সমস্যা তৈরি হলেও দ্রুত নতুন ডিজাইন ও সুরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে বিমানটি এখন অন্যতম নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য বিমান হিসেবে সুপরিচিত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ