কাল দুপুরে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলনকক্ষে নাজমুল হোসেন এসেছিলেন টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে। তখনো তিনি জানতেন না ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে আর থাকছেন না। আজ একই মঞ্চে মেহেদী হাসান মিরাজ এলেন ওয়ানডে অধিনায়ক হয়ে, মিরাজও নাকি কালই জেনেছেন নতুন দায়িত্ব পাওয়ার খবর।

জুমে বৈঠক করে ওয়ানডেতে তাঁকে এক বছরের জন্য ওয়ানডে অধিনায়ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। মিরাজ এই সিদ্ধান্ত জানলেন কখন? এই অলরাউন্ডার আজ শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে তা জানিয়েছেন, ‘আমাকে গতকালকে ফাহিম স্যার (ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমূল আবেদীন) ডেকে নিয়ে বলেছেন, তোমাকে আমরা এ রকম দায়িত্ব দেওয়ার কথা চিন্তা করছি। আমাদের খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেহেতু সামনে খেলা আছে, ওয়ানডে দলটা ঠিক করতে হবে। আমরা সেভাবে পরিকল্পনা করছি। তখন তিনি আমাকে জানিয়েছেন।’

কাল দুপুরে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয় নাজমুলকেও। এ নিয়ে তাঁর মধ্যে একটা অসন্তোষের কথাও এখন প্রকাশ্যে। এমনকি টেস্ট নেতৃত্বও তখনই ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। মিরাজ অবশ্য বলছেন, তাঁকে ওয়ানডে অধিনায়ক করা নিয়ে নাজমুলের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়া কিংবা ড্রেসিংরুমে এর প্রভাব পড়বে বলে তাঁর মনে হয় না।

আরও পড়ুন‘ভাইদের কাছে অনেক কিছু শেখা’ মিরাজ অধিনায়কত্বে শক্ত হতে চান২ ঘণ্টা আগে

মিরাজ এ নিয়ে বলেছেন, ‘ড্রেসিংরুমে এ রকম কোনো প্রভাব পড়বে না। দিন শেষে আমরা সবাই দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলি। (নাজমুল) শান্ত আর আমার মধ্যে এগুলো কখনোই কাজ করবে না। ও যখন অধিনায়কত্ব করেছে, আমি অনেক সাহায্য করেছি। আশা করি, সেও আমাকে করবে।’

ওয়ানডে নেতৃত্ব পাওয়ার পর কালই নাজমুলের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে মিরাজ আরও বলেছেন, ‘ওর সঙ্গে আমার এই কথাই হয়েছে। ও (নাজমুল) আমাকে একটা কথাই বলেছে, অধিনায়কত্বে আমি কখনো আলাদা কিছু অনুভব করিনি। আশা করি, আমার (মিরাজ) ভেতরেও এই জিনিসটা আসবে না। আমরা একসঙ্গে কাজ করব বাংলাদেশের হয়ে। একটা ভালো জায়গায় বাংলাদেশকে দাঁড় করাতে চাই।’

নাজমুল (বাঁয়ে) ও মিরাজ.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ