জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপি নিজেদের সংস্কার প্রস্তাবের বাইরে বহু প্রস্তাবের বিষয়ে একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবের বাইরে বহু প্রস্তাবে আমরা একমত হয়ে গিয়েছি আলোচনায়। সেটা ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করলে দেখবেন।’

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের অসমাপ্ত আলোচনা শেষে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সালাউদ্দিন আহমদ।

বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, অনেক প্রস্তাবের সঙ্গে নীতিগতভাবে, আবার কোনো কোনোটির বিষয়ে আংশিকভাবে একমত হয়েছেন তাঁরা। জুডিশিয়ালি, ম্যাজিস্ট্রেসি, দুদকের ক্ষেত্রে এবং আরও অন্যান্য ক্ষেত্রে একমত হয়েছেন। যেমন নির্বাচনী ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বহু বিষয়ে একমত হয়েছেন, যেগুলো তাঁদের প্রস্তাবের বাইরে ছিল।

প্রধান বিচারপতি নিয়োগসংক্রান্ত বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, ‘বর্তমান সংবিধানে যে বিষয়টা আছে, রাষ্ট্রপতির হাতে সেই ক্ষমতা। রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ দিতে পারেন। এখন বিদ্যমান যে অবস্থা, তাতে বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিককে প্রধান বিচারপতি বানিয়ে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমরা মনে করি, এটা থাকা ঠিক হবে না। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য এ বিষয়ে আমরা একটি রেস্ট্রিকশনে (বিধিনিষেধ) আসতে চাই। রাষ্ট্রপতিকে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে, এই এই ক্রাইটেরিয়ার (বৈশিষ্ট্যের) ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন।’

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের বিষয়ে সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের ধারণার সঙ্গে আমরা একমত। এটি আমরা আমাদের প্রস্তাবিত ৩১ দফাতেও উল্লেখ করেছি। উচ্চকক্ষের আসনসংখ্যা ১০০ হবে। এটির নাম সিনেট নামকরণ করা হয়েছে, যদিও এটি এখনো ফাইনাল করা হয়নি। ১০০ আসনের বিষয়ে আমাদের প্রস্তাবের সঙ্গে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত এবং অধিকাংশ রাজনৈতিক দল দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের বিষয়ও একমত। তবে কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের এ বিষয়ে আপত্তি আছে। তাদের সংখ্যা হয়তো বেশি নয়।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আজকের আলোচনায় জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বিএনপি, এনসিপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ইসলামী আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, গণ অধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অংশ নেয়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, ড.

ইফতেখারুজ্জামান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র প রস ত ব র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব

কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তবে কারা, সেটা স্পষ্ট করেননি তিনি।

আজ শনিবার বিকেলে রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ মন্তব্য করেন।

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দল ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে বা স্বাক্ষর করে একধরনের ফাঁদে পড়ে গেছে। কিছু রাজনৈতিক দল বলছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে। এখানে প্রতারক ও প্রতারণা শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো এ রকম সংস্কার চাইনি।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্য তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, কমিশন ৫৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দলকে বাদ দিয়েছে। যে দলগুলো সেখানে গেছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। এক ভাগকে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। অন্য আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পরে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছে।

বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বলে দাবি করেছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কারণ, নির্বাচিত সরকার সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করেছে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এই মুহূর্তে দেশে যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে, তার ব্যাপারে তথ্য উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কথামতো প্রশাসন সাজিয়েছে, তার সঙ্গে এনসিপি আছে। এই তিন দলের বাইরে অন্য কোনো দল যদি ভোটে আসে, এই প্রশাসনিক কাঠামো সেই দলকে সুষ্ঠু ভোট হতে দেবে না।

গণভোটের দাবি নজিরবিহীন উল্লেখ করে শামামী হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে এই মুহূর্তে গণভোট কোনো প্রভিশনে নেই। বর্তমানে গণভোটের যে দাবি উঠেছে, সংসদে পাস হওয়ার আগে এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ঐকমত্য কমিশনকে সংসদের মর্যাদা দেওয়া হবে। ঐকমত্য কমিশন সার্বভৌম নয়, নির্বাচিত নয় ও সংসদ নয়। সংসদকে এড়িয়ে গিয়ে কোনো আইন পাস করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।

এ সময় জাপার কো–চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলার আহ্বায়ক আজমল হোসেন, সদস্যসচিব হাজী আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামানসহ জাপা ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সনদ বাস্তবায়নে দ্রুত সিদ্ধান্ত, আরপিওতে পরিবর্তন আসছে
  • তড়িঘড়ি না করে সংবিধান সংস্কারে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান
  • কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
  • রাজধানীর দক্ষিণখানে নিজ বাসা থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
  • নির্বাচনের আগে একটি দল জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চায়: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • দেশের মানুষ ১৭ বছর ধরে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে: সাইফুল হক
  • জুলাই সনদে সই না করা অংশের দায় নেব না: মির্জা ফখরুল
  • ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে ‘অশ্বডিম্ব’ বললেন সিপিবি সভাপতি
  • টেকনাফে মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কা, নিহত ১
  • যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়েছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান: তুরস্ক