দ্বিকক্ষের সংসদ চাইলেও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের বিপক্ষে বিএনপি
Published: 19th, June 2025 GMT
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে একমত হলেও পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিএনপি একমত পোষণ করেনি। এ বিষয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের নির্বাচনের বিষয়ে বোধ হয় এখন আমাদের কনসিডার (বিবেচনা) করা ঠিক হবে না।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের টানা তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের দলের পক্ষ থেকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের ধারণা এ জন্য দিয়েছিলাম যে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, শিক্ষাবিদ, ক্রীড়াবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীসহ বিভিন্ন সেক্টরে যাদের অবদান আছে; যাদের চিন্তাধারা, অবদান জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, তাদের প্রতিনিধি আকারে এখানে যুক্ত করার জন্যই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের কথা বিবেচনা করেছিলাম। আমরা উচ্চকক্ষের ক্ষেত্রে সরাসরি ভোটের কথাও বলিনি। সার্বিক বিবেচনায় আমরা মনে করি, পিআর পদ্ধতিটা এখানে সঠিক হবে না।’
এই অবস্থানের পক্ষে যুক্তি দিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব হলে সংসদের উচ্চকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ আসন পাবে না সংখ্যাগরিষ্ঠ দল, সে ক্ষেত্রে আইন প্রণয়ন ও সংবিধান সংশোধনে প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হবে। সে কারণে বিদ্যমান সংরক্ষিত নারী আসন (আসনের অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব) নির্বাচনের পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচনের পক্ষে বিএনপি।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিদ্যমান পদ্ধতিতে সংসদ সদস্যদের গোপন ভোটের পক্ষে বিএনপি। এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইলেকটোরাল পদ্ধতিটির বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন মতামত দিয়েছে। এর মধ্যে বেশি মতামত এসেছে উচ্চকক্ষ-নিম্নকক্ষের সদস্যদের গোপন ব্যালটের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। তবে সবগুলো রাজনৈতিক দল গোপন ভোটের পক্ষে একমত হলে এতে একমত বিএনপি।
একজন ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার প্রস্তাবে দ্বিমত জানিয়েছে বিএনপি। টানা দুইবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ‘গ্যাপ’ (বিরতি) দিয়ে পরেরবার আবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন—এমন প্রস্তাব বিএনপির।
আজকের আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ (সিপিবি) ৩০টি দল অংশ নেয়।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য সফর রাজ হোসেন, এমদাদুল হক, ড.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহমদ র সদস য ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের ইতিহাসে আজকে একটা উল্লেখযোগ্য দিন: জোনায়েদ সাকি
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছানো ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার মধ্যে দুপুরের বিরতিতে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নির্মাণে জবাবদিহি প্রশ্নে এবং রাজনৈতিক দলের ভেতরেও গণতন্ত্র চর্চার প্রশ্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা। সেখানে আজকে একটা ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে আজকে একটা উল্লেখযোগ্য দিন। যে ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার হলে দুটি ব্যতিক্রম বাদে অর্থাৎ সংসদে সরকার গঠনে আস্থা ভোট ও বাজেট—এ দুটো বিষয় ব্যতিরেকে বাকি সব প্রশ্নে সবাই ভোট দিতে পারবেন। এ বিষয় একটা ঐকমত্য তৈরি হয়েছে।’
এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের অন্যতম সদস্য তাসলিমা আকতার উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সংসদের নারী আসনের বিষয়ে তাসলিমা আকতার বলেন, গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে বৈষম্যহীন ও ন্যায়ের সমাজ প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ১০০ করার কথা বলেছে, সেটির সঙ্গে তাঁরা একমত। এ বিষয়ে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।