ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর একজন ড্রামার টানা ৩১ ঘণ্টা ড্রাম (স্টিলপ্যান) বাজিয়েছেন। এত সময় ধরে ড্রাম বাজিয়ে গড়েছেন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস। ওই ব্যক্তির নাম জশুয়া রেগরিলো (২৮)। তিনি একজন পেশাদার মিউজিশিয়ান। পাশাপাশি অনলাইনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কনটেন্টও তৈরি করেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল ৩০ ঘণ্টা ড্রাম বাজানো। কিন্তু টানা ৩১ ঘণ্টা ড্রাম বাজিয়ে আগের গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ভাঙেন তিনি।

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের এই বাসিন্দা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে বলেন, ‘পাঁচ বছর বয়স থেকেই আমি ড্রাম বাজাই। আমার বাবাও বিখ্যাত ড্রামবাদক ছিলেন। এ কারণে আমি সংগীতের মধ্যেই বড় হয়েছি।’

ড্রাম বাজাতে বাজাতে রেগরিলোর মাথায় রেকর্ড গড়ার চিন্তা আসে। এ জন্য তিনি দীর্ঘ সাধনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘মহড়া প্রায়ই গভীর রাত পর্যন্ত চলত, আমি সব সময় সেখানে থাকতাম, সবকিছু আপন করে নিচ্ছিলাম। ড্রাম বাজানো আমি যে শুধু শিখেছি তা নয়, এটা আমি জন্মগতভাবে রপ্ত করেছি। সবদিক থেকেই মনে হয়, স্টিল ড্রাম আমাকে বেছে নিয়েছিল।’

গিনেস রেকর্ড কর্তৃপক্ষের সামনে পারফর্ম করার দিন রেগরিলো ভেবেছিলেন, তাঁকে ৩০ ঘণ্টা ড্রাম বাজাতে হবে। কিন্তু মঞ্চের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক গ্যাব্রিয়েল লা গেনডার বলেন,মঞ্চে পারফর্ম করার জন্য ৩১ ঘণ্টা সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

রেগরিলো বলেন, ‘সেই ঘটনা যেন সবকিছু পাল্টে দিল। আমার রক্তে উত্তেজনা বইছিল, চারপাশের মানুষজন তখন তৎপর ছিলেন। এতটা সমর্থন যখন পাশে পেলাম, আমি ঠিক করলাম, যেভাবেই হোক শেষ ঘণ্টা পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

দিনমজুর বাদশা মিয়াকে আমাদের সাধুবাদ

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের দিনমজুর বাদশা মিয়া তাঁর এলাকায় ‘গাছের বন্ধু বাদশা’ নামে পরিচিত। এই পরিচয় কোনো সরকারি পদক বা ধনাঢ্য প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি থেকে আসেনি; এসেছে বিগত ২০ বছর ধরে ৩০ হাজারের বেশি গাছ লাগিয়ে। তাঁর এ কাজ প্রমাণ করে, পরিবেশপ্রেম ও নিঃস্বার্থ সামাজিক দায়বদ্ধতা কোনো অর্থ বা ক্ষমতার মুখাপেক্ষী নয়, এটি গভীর মানবিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ।

৭২ বছর বয়সী বাদশা মিয়ার স্লোগান—এক মুঠো ভাত নয়, এক মুঠো অক্সিজেন চাই। আজকের পরিবেশ সংকটের যুগে এক শক্তিশালী দার্শনিক বার্তা। বাদশা মিয়ার গাছ লাগানোর গল্পটি কেবল সবুজায়নের নয়, এটি এক পিতার গভীর আবেগের গল্প। ২০০৪ সালের এক বিকেলে, টাকার অভাবে সন্তানদের আমের আবদার মেটাতে না পারার কষ্ট থেকে তিনি উপলব্ধি করেন, তাঁর মতো গরিব প্রতিবেশীর সন্তানেরাও ফল কিনতে পারে না। সেই ব্যক্তিগত বেদনা থেকেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন—তিনি এমন কিছু করবেন, যা তাঁর নিজের ও দরিদ্র প্রতিবেশীদের সন্তানদের জন্য ফলের অধিকার নিশ্চিত করবে।

এই স্বপ্ন পূরণে বাদশা মিয়ার ত্যাগ ছিল হিমালয়সম। প্রাথমিক পুঁজি জোগাতে তিনি মেয়ের কানের সোনার রিং বিক্রি করে গাছের গোড়ায় খুঁটি দেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেন, দিনমজুরি করে যা আয় করবেন, তার চার ভাগের এক ভাগ ব্যয় করবেন চারা লাগানো এবং পরিচর্যার পেছনে। একজন ভূমিহীন দিনমজুরের কাছে আয়ের এক-চতুর্থাংশ মানে জীবনধারণের সঙ্গে সরাসরি আপস করা। এই আত্মত্যাগই প্রমাণ করে, তাঁর কাছে এই গাছগুলো নিছক চারা নয়—গভীর মমতায় লালন করা এগুলো যেন তাঁর সন্তানের মতোই।

বাদশা মিয়ার কাজকে সমাজ প্রথম দিকে মোটেই সহজভাবে নেয়নি। উল্টো গ্রামের কিছু মানুষ তাঁকে ‘পাগল’ বলে উপহাস করেছে। গাছের চারা লাগাতে গিয়ে তিনি মানুষের বাধা পেয়েছেন, তাঁর লাগানো গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে এবং একপর্যায়ে তাঁকে মারধরও করা হয়েছে। কিন্তু সেই সমাজের মানুষই এখন বাদশা মিয়ার দীর্ঘ ত্যাগ ও পরিশ্রমের সুফল ভোগ করছে।

বাদশা মিয়ার এই উদ্যোগ কেবল একটি স্থানীয় গল্প নয়, এটি সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি শিক্ষা। কোটি কোটি টাকার বন সৃজন প্রকল্প যেখানে অনেক সময় লোকদেখানো বা অপচয়ের শিকার হয়, সেখানে একজন দিনমজুর দেখিয়ে দিলেন, ভালোবাসা ও সদিচ্ছা থাকলে সামান্য সম্পদ দিয়েই পরিবেশবিপ্লব ঘটানো সম্ভব।

উপজেলা প্রশাসন বাদশা মিয়াকে পুরস্কৃত করেছে, যা প্রশংসনীয়। আমরা আশা করব, স্থানীয় বন বিভাগ ও কৃষি বিভাগ বাদশাকে গাছ লাগানোর কাজে স্থায়ীভাবে সহযোগিতা করবে। বাদশা মিয়ারা আমাদের অনুপ্রেরণা। তাঁর প্রতি আমাদের অভিবাদন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিরিয়ায় বিমান ঘাঁটি করবে যুক্তরাষ্ট্র
  • অ-অভিবাসী ৮০ হাজার ভিসা বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন
  • মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ: বিএনপিতে যোগ দিলেন যে কারণে 
  • যে ৪ ‘মানি রুল’ ধনীরা কাউকে বলেন না
  • নিউ ইয়র্ক-এর ফাস্ট লেডি ‘রামা দুয়াজি’
  • রোমান সম্রাজ্ঞী মেসালিনাকে যেকারণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিলো
  • ডাকসু নেতার প্রবীণ ব্যক্তিকে লাঠি হাতে শাসানো নিয়ে সমালোচনা-বিতর্ক
  • এক কাপ কফি খাও, তারপর লিখতে বসো—মতি ভাই বললেন
  • মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টকে চুমু দেওয়ার চেষ্টা মাতাল ব্যক্তির
  • দিনমজুর বাদশা মিয়াকে আমাদের সাধুবাদ