ফেসবুকে ‘মৃত্যু’ নিয়ে ভিডিও পোস্টের দেড় ঘণ্টা পর বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু
Published: 20th, June 2025 GMT
মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্টের দেড় ঘণ্টা পর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার এক যুবক। আজ শুক্রবার বিকেলে উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ বাড়িতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবকের নাম শহীদুল ইসলাম (২৫)। তিনি ইয়াজ মল্লার বাড়ির বাসিন্দা আহমদ ছফার ছেলে। পেশায় দিনমজুর হলেও ঘটনার সময় তিনি ঘরে বিদ্যুতের কাজ করছিলেন। পরিবারের চার বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে শহীদুল ছিলেন একমাত্র ছেলে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শহীদুল নিজ ঘরে বিদ্যুতের হোল্ডার লাগানোর কাজ করছিলেন। এ সময় অসাবধানতাবশত বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। পরিবারের সদস্যেরা তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে জুমার নামাজের পর বেলা দুইটার দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শহীদুল একটি ২৯ সেকেন্ডের ভিডিও পোস্ট করেন। ভিডিওটিতে লেখা ছিল, ‘মানুষ কতই–না অদ্ভুত। একবার চিন্তা করে না আগামীকাল বাঁচবে কি না! শুধু চিন্তা করে কাকে কীভাবে ঠকানো যায়। এটাই হলো মানুষরূপী বাস্তবজীবনের কথা।’
শহীদুলের বন্ধু, স্থানীয় সাংবাদিক শেখ আবদুল্লাহ বলেন, ‘জুমার নামাজ শেষে বেলা দুইটার দিকে শহীদুল ভিডিওটি পোস্ট করে। মাত্র দেড় ঘণ্টা পর তাঁর মৃত্যুর খবর আসে। আমরা কেউই মেনে নিতে পারছি না।’
নিহতের বাবা আহমদ ছফা বলেন, ‘আমার একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেটি চলে গেল। জানি না, এখন পরিবার নিয়ে কীভাবে চলব।’
আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক রিপন দত্ত বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব