বর্ষাকাল মানে রাস্তাঘাটে কাদাপানি জমে যাওয়া। বৃষ্টিতে হুটহাট ভিজে যাওয়াও অস্বাভাবিক কিছু নয়।হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজলে যেমন শরীর খারাপের ঝুঁকি থাকে তেমনি ভিজা জুতা দীর্ঘ ক্ষণ পায়ে থাকলে পায়ের ত্বকে তার প্রভাব পড়ে। এর ফলে বর্ষায় অনেকেরই পায়ের পাতায় চামড়া ওঠার মতো সমস্যা দেখা যায়। বৃষ্টির দিনে ত্বককে ময়লা এবং মৃতকোষ মুক্ত করতে সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করতে পারেন ফুট স্ক্রাব। ঘরোয়া কিছু উপাদান দিয়ে তৈরি এই স্ক্রাব পায়ের ত্বক রাখবে মসৃণ, সুন্দর। 

এপসম লবণ 

আধ বালতি গরম পানিতে আধ কাপ এপসম লবণ মিশিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট। তার পরে ধীরে ধীরে ঘষে ময়লা পরিষ্কার করুন। এতে পায়ের ত্বক থেকে মৃতকোষও উঠে যাবে।

লেবু-চিনি
আধ কাপ চিনির সঙ্গে ১/৪ কাপ নারকেল তেল এবং ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ভিজে পায়ে ভাল ভাবে মাসাজ করুন। তার পরে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে পায়ের ত্বকে আর্দ্র ভাব ফিরবে। পা হয়ে উঠবে মসৃণ। 

বেকিং সোডা

আধ কাপ বেকিং সোডার সঙ্গে ১/৪ কাপ পানি মিশিয়ে নিন। তার মধ্যে এক টেবিল চামচ নারকেল তেলও দিতে পারেন। ওই মিশ্রণটি পায়ের পাতায় ভাল ভাবে ঘষুন। তার পরে হালকা গরম পানিতে পা ডুবিয়ে পরিষ্কার করে নিন। এতে পায়ের নোংরা দূর হওয়ার পাশাপাশি, ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যাও দূর হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প য় র যত ন প য় র ত বক

এছাড়াও পড়ুন:

বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে শিশু–কিশোরদের মানসিক সুস্থতা জরুরি কেন

শিশু–কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যে আমরা আদতে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছি? এই প্রশ্নের উত্তরের আগে আরেকটি প্রশ্ন ছুড়ে দিই। মানসিক স্বাস্থ্য মানে কী? অধিকাংশই বলবেন, ‘মানসিক রোগ না থাকা।’ কিন্তু এটি আরও অনেক বড় বিষয়। এটি ব্যক্তির আবেগীয়, মানসিক ও সামাজিকভাবে ভালো থাকা বোঝায়, যা প্রভাবিত করে তার চিন্তা, অনুভূতি ও আচরণকে। অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক, চাপ মোকাবিলার দক্ষতা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও এর সঙ্গে সম্পর্কিত।

শৈশবের পরের ধাপটাই কৈশোরকাল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বয়ঃসন্ধিকাল ১০ বছর বয়স থেকে শুরু করে ১৯ বছর পর্যন্ত চলে। সময়টা অফুরান প্রাণশক্তি, উদ্দাম আবেগ আর সীমাহীন সম্ভাবনার। সবকিছুতে কৌতূহল, শরীরে নতুন অনুভূতির রোমাঞ্চ, স্বাধীনচেতা মনোভাব অথবা বিদ্যমান নিয়মরীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা—এ রকম আরও অনেক বৈশিষ্ট্য কৈশোরকালকে করে তোলে অনন্য।

‘আমি কে, কী চাই, কীভাবে দেখব আমার জীবন’—আত্মপরিচয়ের এই অনুসন্ধানের পথ ধরেই কৈশোরের চারিত্রিক বিকাশ ঘটতে থাকে। মস্তিষ্কের দ্রুত স্নায়বিক বিকাশ ও হরমোনের প্রভাবে শরীরের যেমন পরিবর্তন হয়, তেমনই মন দ্রুত বদলায়। এ বিকাশ নির্ভর করে তার জিনগত বৈশিষ্ট্য, পারিবারিক পরিবেশ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও চারপাশের ওপর।

আরও পড়ুনমন ও মস্তিষ্কের ১২টি গোপন সত্য, আপনি কয়টা মানেন?০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫সাফল্য ও ঝুঁকির দ্বন্দ্ব

শিশু–কিশোরের সাফল্য অনেকাংশেই নির্ভর করে মানসিক সুস্থতার ওপর। আবার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের চিন্তাপদ্ধতি, আবেগীয় রূপ ও সামাজিক ভূমিকা অনেকাংশেই নির্ধারিত হয় শৈশব ও কৈশোরকালীন মনের যত্নের ভিত্তিতে। আবেগের প্রবলতা, অনুসন্ধিৎসু মন, নিজেকে প্রকাশের চেষ্টা এ সময়কে যেমন বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করে, তেমনই অপরিপক্বতা ও ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা এই সময়কে করে তোলে নাজুক।

সারা বিশ্বে বর্তমান প্রজন্ম বেড়ে উঠছে এক পরিবর্তনশীল ও অস্থির সময়ের সন্ধিক্ষণে। ভোগবাদী ব্যবস্থা নির্ধারণ করছে দৈনন্দিন জীবনযাপন, ইচ্ছা-অনিচ্ছা ও সম্পর্ক। শক্তি আর প্রতিযোগিতার খেলায় সবাই জয়ী হতে চাইছে। আমদের ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাপদ্ধতি, এমনকি অনুভূতিও নিয়ন্ত্রণ করছে মুঠোফোন বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।

শিশুরা বাস্তব জগতের বদলে মোহাচ্ছন্ন হয়ে বেড়ে উঠছে ভার্চ্যুয়াল জগতের অবাস্তব স্বপ্নমায়ায়। ছোটবেলা থেকেই পরিচিত হচ্ছে সাইবার ক্রাইম, সহিংস ভিডিও গেম, মাদকাসক্তি ও আত্মহত্যার মতো বিপজ্জনক বিষয়গুলোর সঙ্গে।

বর্তমান সময় শিশু–কিশোরদের মানসিক বিকাশে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে প্রযুক্তি ও সমাজ। জীবনকে সহজ করার নামে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইকে মানুষের জায়গায় প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এতে মানুষ থেকে দ্রুত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে মানুষ। শিশু–কিশোরেরা বন্ধুদের সময় দেওয়ার বদলে সময় কাটাচ্ছে এআই বা অনলাইন গেমে। এতে সামাজিক মেলামেশা ও খেলাধুলা থেকে যে আবেগীয় গঠন ও জীবনদক্ষতা তৈরি হওয়ার কথা, তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিচ্ছিন্নতা ও আত্মকেন্দ্রিকতায়। মানসিক রোগের ঝুঁকি উঠতি বয়সে সব সময় বেশি হলেও বর্তমান যুগের এসব উপাদান বাড়তি ঝুঁকি যোগ করছে।

বর্তমান সময় শিশু–কিশোরদের মানসিক বিকাশে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে প্রযুক্তি ও সমাজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ