দরজা খোলাই ছিল। বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছিল, ঘরের ভেতর একজন বয়স্ক মানুষ শুয়ে আছেন। কাছে গিয়ে বুঝলাম, ইনিই অলোকা ভৌমিক। ১৪ জুন তাঁকে দেখতেই নাটোরের বড়াইগ্রামের তিরাইলে যাওয়া। অতিথি এসেছে বুঝে অলোকা ভৌমিক বারবার বলছিলেন, ‘বসুন আপনারা।’

এরপরই ডাকতে থাকলেন, ‘হামিদা, ও হামিদা, হামিদা রে...’

কার কাছ থেকে খবর পেয়ে মিনিট পাঁচেকের মাথায় দৌড়াতে দৌড়াতে এলেন হামিদা বেগম। তাড়াতাড়ি পাশের ঘর খুলে চেয়ার বের করে দিলেন। অলোকা ভৌমিককে বসার ঘরে নিয়ে আসতে একটু সময় নিলেন। কারণটা একটু পরই বোঝা গেল। কবিকে একটি পরিষ্কার কাপড় পরিয়ে প্লাস্টিকের চেয়ারে বসিয়ে দুজন মিলে উঁচু করে নিয়ে এসে আমাদের সামনে বসালেন। তখন বোঝা গেল, কবি আসলে পক্ষাঘাতগ্রস্ত। তাঁর এক হাত, এক পা অচল। আর এ কারণেই তখন উঠে আসতে পারছিলেন না, শুয়ে শুয়ে কথা বলছিলেন। কথা বলার সময় কিছুক্ষণ পরপরই তাঁর মাথার কাপড় ঠিক করে দিচ্ছিলেন হামিদা। খবর পেয়ে ছুটে এলেন হামিদার স্বামী ইয়াদ আলী মণ্ডল।

হামিদা বললেন, ‘ডাব পেড়ে আনো।’

ঘামতে ঘামতে ইয়াদ আলী গাছ থেকে দুটো ডাব পেড়ে এনে কেটে দিলেন। এক প্লেট পাকা আম কেটে সামনে রাখলেন হামিদা।

কবি অলোকা ভৌমিকের ছাপা বইয়ের সংখ্যা ১৫। আরও ৮টির পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত আছে। তাঁর বয়স এখন ৭৯ বছর। সব বই মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছেন কবি। বাড়িতে পাওয়া গেল ছয়টি বইয়ের কপি—ছোট বড় কবিতা, অতৃপ্ত, সনাতন, লেখকদের স্মৃতিকথা, অমৃত ও উদয়ের পথে। অলোকা ভৌমিক বললেন, ‘বই কি ঘরে রাখার জিনিস? মানুষকে পড়তে দিয়েছি।’

হামিদা বেগম ও তাঁর স্বামী ইয়াদ আলী মণ্ডলের মাঝে বসা অলোকা ভৌমিক.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে ৩৭টি রুগ্ন ঘোরা ও ৫ মণ মাংস জব্দ 

গাজীপুরের হায়দ্রাবাদ এলাকার একটি গোডাউনে অভিযান চালিয়ে পাঁচ মণ ঘোড়ার মাংস জব্দ করেছে প্রশাসন। এ সময় সেখান থেকে রুগ্ন ৩৭টি ঘোড়া উদ্ধার করা হয়। ভেটেনারি হাসপাতালের ভেটেনারি সার্জন হারুন রোমান জানান, ঘোড়াগুলোর অধিকাংশ রুগ্ন এবং মাংসে টক্সিন রয়েছে, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে স্থানীয় প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র‌্যাব-১ যৌথভাবে অভিযান চালান।

আরো পড়ুন:

৬ বাসে মিলল ৩৫ মণ জাটকা, চালকদের জরিমানা

মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১

গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহম্মেদ জানান, জবাই করে মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যেই ঘোড়াগুলো এখানে আনা হয়েছিল। যেহেতু, ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করা যায়নি, সে কারণে উদ্ধারকৃত ঘোড়া এবং জব্দকৃত মাংস স্থানীয় একজনের জিম্মায় রাখা হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে সেগুলো গাজীপুর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে হস্তার করা হবে।

গাজীপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও ভেটেনারি হাসপাতালের ভেটেনারি সার্জন হারুন রোমান জানান, ঘোড়াগুলোর অধিকাংশ রুগ্ন এবং ঘোড়ার মাংসে টক্সিন রয়েছে, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। ঘোড়ার মাংস ক্রয় এবং খাওয়া থেকে সবাইকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেন তিনি। 

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ