২ বছর পর ওয়ানডে দলে নাঈম, শ্রীলঙ্কা সিরিজে আর কারা আছেন
Published: 23rd, June 2025 GMT
দুই বছর পর বাংলাদেশের ওয়ানডে দলে ফিরেছেন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। আজ শ্রীলঙ্কা সিরিজের জন্য ঘোষিত ১৬ সদস্যের দলে ডাকা হয়েছে এই বাঁহাতিকে।
এ ছাড়া চোট কাটিয়ে দলে ফিরেছেন পেসার তাসকিন আহমেদও। আজ মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন দলটি ঘোষণা করেন।
২ জুলাই শুরু হতে যাওয়া তিন ওয়ানডে সিরিজে নেতৃত্ব দেবেন মেহেদী হাসান মিরাজ, যা এই সংস্করণে দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর প্রথম সিরিজ।
নাঈম সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ১১ ম্যাচ খেলে ৬১৮ রান করেছিলেন তিনি। তাঁকে জায়গা দিতে বাদ পড়েছেন সৌম্য সরকার।
স্কোয়াড : মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, লিটন কুমার দাস, জাকের আলী, শামীম হোসেন, রিশাদ হোসেন, তানভির ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান, নাহিদ রানা, মোস্তাফিজুর রহমান।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আগস্টেও কলমানিতে ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি ধার
জুলাইয়ের মতো আগস্টেও ব্যাংক খাতে কলমানিতে লাখো কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। ব্যাংক খাতে চলমান তারল্য–সংকটের কারণেই মূলত কলমানিতে লাখো কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। গত আগস্টে এই বাজারে (কলমানি মার্কেট) লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। জুলাইয়ে এই বাজারে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে কলমানিতে লেনদেন ৭২৭ কোটি টাকা বা প্রায় পৌনে ১ শতাংশ কমেছে। এই বাজারে লেনদেন কিছুটা কমলেও তা লাখো কোটি টাকার ওপরেই রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত আট মাসের মধ্যে চার মাসই কলমানিতে লাখো কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। জানুয়ারি, মে, জুলাই ও আগস্ট—এই চার মাস লাখো কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে কলমানিতে।
কলমানি হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া-নেওয়ার একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় যেসব ব্যাংকের হাতে নগদ টাকার সংকট থাকে, তারা তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে যেসব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত তারল্য বা অর্থ থাকে, তাদের কাছ থেকে টাকা ধার করে। এ জন্য সুদ দিতে হয়। সুদহার নির্ধারিত হয় চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে। ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া-নেওয়া করলেও দিন শেষে লেনদেন ও সুদের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কলমানি বাজারের প্রতিদিনের লেনদেন ও সুদের তথ্য প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আগস্টে কলমানিতে সবচেয়ে বেশি টাকা ধার নেওয়া হয়েছে স্বল্প সময়ের জন্য। সর্বশেষ আগস্টে এই বাজারে লেনদেনের প্রায় ৮৮ শতাংশই ছিল ওভার নাইট বা এক দিনের জন্য ধার। ১ লাখ ১৬ হাজার ১২৫ কোটি টাকার মধ্যে এক দিনের ধার হিসেবে লেনদেন হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি। গত বছরের জুলাই থেকে গত আগস্ট পর্যন্ত ১৪ মাসের মধ্যে এই প্রথম কলমানিতে ওভার নাইট বা স্বল্প সময়ের জন্য ধার লাখো কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। জুলাইয়ে কলমানি বাজার থেকে ওভার নাইট ধারের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯৯ হাজার কোটি টাকা। এক মাসের ব্যবধানে স্বল্প সময়ের জন্য ধার নেওয়া অর্থের পরিমাণ বাড়লেও সুদের হার কমেছে। জুলাইয়ে এই বাজারে ওভার নাইট ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদ হার ছিল ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আগস্টে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশে। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে স্বল্প মেয়াদি ধারের সুদ হার ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট কমেছে।
ব্যাংক খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশের ব্যাংক খাতের ১৪ থেকে ১৫টি ব্যাংক বর্তমানে তারল্য–সংকটে ভুগছে। এ কারণে এসব ব্যাংক আমানতকারীদের আমানতের টাকাও ফেরত দিতে পারছে না। আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে না পারলেও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ব্যাংকগুলো। ফলে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় এসব ব্যাংককেও অন্য ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে হচ্ছে। আবার ব্যাংক খাতের সার্বিক পরিস্থিতিতে আমানতকারীদের একটি বড় অংশ ভালো ব্যাংকগুলোর প্রতি ঝুঁকছেন। ফলে ভালো ব্যাংকগুলোয় আমানতের বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। সে তুলনায় মাঝারি মানের ব্যাংকগুলোয় আমানত সেভাবে বাড়ছে না। যার কারণে মাঝারি মানের অনেক ব্যাংককেও দৈনন্দিন নানা প্রয়োজন মেটাতে কলমানিতে টাকা ধার করতে হচ্ছে।
কত দিনের জন্য ধার দেয়বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, কলমানিতে তিন ধরনের মেয়াদে টাকা ধার দেওয়া হয়। এগুলো হলো ওভার নাইট, শর্টনোটিশ ও টার্ম বা মেয়াদি কলমানি। ওভার নাইট হচ্ছে মূলত এক দিনের জন্য ধার, শর্টনোটিশে ধারের মেয়াদ ২ থেকে ১৪ দিন। আর টার্ম বা মেয়াদি ধারের মেয়াদ ১৫ দিন থেকে এক বছর। গত আগস্টে শর্টনোটিশ মেয়াদে ধারের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। আর ১৫ দিন থেকে এক বছর মেয়াদি ধারের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা। ওভার নাইট ধারের মতো ওই দুই শ্রেণিতেও ধারের পরিমাণ জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে কমেছে।
এদিকে গতকাল রোববার ব্যাংক খাত নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান মাসরুর আরেফিন বলেন, দেশের ব্যাংক খাতে মোট ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ কোটি টাকা, এর মধ্যে ৪ লাখ কোটি টাকা মন্দ ঋণ, আর ৭ লাখ কোটি টাকা সমস্যাপূর্ণ (ডিট্রেসড) অবস্থায় রয়েছে। আর ১৫টি ব্যাংককে বলা হচ্ছে লুট হওয়া ব্যাংক। ৭টি ব্যাংক সরাসরি লুট হয়েছে, আর বাকি ৬ থেকে ৭টি ব্যাংক পরোক্ষ লুট হয়েছে।
একই আলোচনা সভায় পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ব্যাংকগুলোয় তারল্য–সংকট তৈরি হয়েছে; ফলে অনেক আমানতকারী প্রয়োজনের সময় টাকা তুলতে পারছেন না, যা ব্যাংক খাতের অন্যতম বড় সংকট।