ভুটানের পণ্য বোঝাই ট্রাক ভারতের ট্রানজিট নিয়ে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি করছে। কিন্তু ভারতীয় ট্রাক মালিকরা ভুটানি পণ্য পরিবহনের সেই সুযোগ পাচ্ছে না। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে উত্তপ্ত ভারতের শিলিগুড়ি করিডরে অবস্থিত ভারত-বাংলাদেশের ফুলবাড়ি, চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত। 

সোমবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ভারতীয় ট্রাকমালিক এবং সিএনএস এজেন্টদের বিক্ষোভে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে স্থলবন্দর এলাকায়। পাল্টা হস্তক্ষেপ করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় একাধিক বিক্ষোভকারীকে। 

জানা যায়, গত ১৪ জুন ভুটানি ট্রাকের মাধ্যমে বাংলাদেশে ট্রানজিট বন্ধের দাবিতে সীমান্ত বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে ভারতীয় ট্রাক চালক ও মালিক সংগঠনের সদস্যরা। সেসময় একটানা তিনদিন অব্যাহত বিক্ষোভ, সীমান্ত অবরোধ ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায়।  

ভারতীয় ট্রাক মালিকদের অভিযোগ, ভুটান সরকারের রেজিস্টার ট্রাক ভুটান থেকে পণ্য বোঝাই করে ভারতের ট্রানজিট নিয়ে বাংলাদেশে পাথর রপ্তানি করে। কিন্তু ভারতের ভূমির ট্রানজিট নিলেও এই সুযোগ পায়না ভারতীয় ট্রাক। ভারতীয় ট্রাক মালিক ও চালক সংগঠনের দাবি ভুটানি ট্রাকের পাশাপাশি ভারতীয় ট্রাককেও ট্রানজিট পণ্য রপ্তানির সুযোগ দিতে হবে। ভারতীয় ট্রাক মালিক এবং চালকদের অভিযোগ তারা সীমান্তে পণ্য পরিবহনের সমঅধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন। 

বিক্ষোভকারীরা জানান, সীমান্তের ৪টি সংগঠন- ট্রাক মালিক সমিতি, ট্রাক চালক সমিতি, এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন ও সিএনএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এই অনশন-অবরোধ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তারা বলছেন, বিগত ৪ মাসের বেশি সময় বাংলাদেশে পণ্য পরিবহনের জন্য ভারতীয় ট্রাক ব্যবহারের সুযোগ হারিয়েছেন তারা। আর তাই ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত বন্ধ করে সীমান্তের রাস্তায় বসে পড়েন শতাধিক ভারতীয় ট্রাক চালক ও ট্রাক মালিকরা।  অনশন ,বিক্ষোভ, অবরোধ অব্যাহত ভাবে চালিয়ে যেতে শুরু করেন।

তাদের দাবি, ভুটানের ট্রাককে ভারত ভুটান সীমান্তে পণ্য আনলোড করে সেই পণ্য ভারতীয় ট্রাকের মাধ্যমে বাংলাদেশে রপ্তানির সুযোগ দিতে হবে। নয়তো ভুটানের ট্রাকের জন্য ২০টির বেশি স্লট বরাদ্দ করা যাবে না। 

সীমান্ত বাণিজ্য যখন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হওয়ার মুখে সে সময় স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেন। এ বিষয়ে তিনি বৈঠক করলেও বিক্ষোভকরীদের দাবি সেই বৈঠকের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটেনি। প্রতিদিন ভারতের ট্রানজিট নিয়ে শত শত ভুটানের ট্রাক বাংলাদেশে পণ্য পরিবহন করছে। কিন্তু এখনও ভারতীয় ট্রাক মালিকরা স্লট বরাদ্দ পাচ্ছেন না। 

ফলে সোমবার সকাল থেকে আবারও ভুটানের বাংলাদেশগামী পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন ট্রাক মালিক, শ্রমিক, এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন ও সিএনএফ এজেন্টরা। ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় সীমান্ত এলাকায়। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয় বিক্ষোভকারীদের। একপর্যায়ে গ্রেপ্তার করা হয় একাধিক বিক্ষোভকারীকে। এ ঘটনায় দিনভর উত্তেজনা বিরাজ করছে সীমান্ত এলাকায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এল ক য

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় মজুদকৃত ৩৭৫ বস্তা সার জব্দ, জরিমানা 

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় অবৈধভাবে সার মজুদ ও ন্যায্য মূল্যে কৃষকদের মাঝে বিক্রি না করার দায়ে দুই খুচরা বিক্রেতাকে জরিমানা করা হয়েছে। আজ রবিবার (১০ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চুকনগর বাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়। 

ডুমুরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় অবৈধভাবে মজুদ করা বিভিন্ন ধরনের ৩৭৫ বস্তা সার জব্দ করা হয়। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চুকনগর বাজারের যতিন কাশেম রোডের বাদামতলা মোড় এলাকায় মেসার্স জালাল ট্রেডার্সে অবৈধভাবে সার মজুদ রাখার অপরাধে প্রতিষ্ঠানের মালিক জাহিদুল ইসলাম মোড়লকে নগদ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় তার দোকান থেকে ২৮০ বস্তা ইউরিয়া, ৪৬ বস্তা টিএসপি, ২০ বস্তা ডিএপি ও ২৯ বস্তা এমওপি মজুদকৃত সার জব্দ করা হয়। 

আরো পড়ুন:

শ্রীবরদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ৫ জনের কারাদণ্ড

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে টিকটক, যুবকের কারাদণ্ড

এছাড়া কৃষকের মাঝে ন্যায্য মূল্যে সার বিক্রি না করা ও স্টক রেজিস্ট্রার ব্যবহার না করায় মালতিলা এলাকায় মেসার্স সুকর্ণ ট্রেডার্সের মালিক সুকর্ণ কুমার ঘোষকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী জানান, সার মজুদ করে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করায় সার ব্যবস্থাপনা আইনে জাহিদুল ইসলামকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৩৭৫ বস্তা বিভিন্ন মজুদ করা সার জব্দ করা হয়।

তিনি আরো জানান, কৃষকদের মাঝে ন্যায্য মূল্যে সার বিক্রি না করার অপরাধে ব্যবসায়ী সুকর্ণ কুমারকে ভোক্তা সংরক্ষণ আইনে ২০ হাজার জরিমানা করা হয়। 

জনস্বার্থে উপজেলা প্রশাসনের এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান সহকারী কমিশনার। তিনি জানান, জব্দকৃত সার চুকনগর বাজার কমিটি ও ইউনিয়ন পরিষদের জিম্মায় রাখা হয়েছে।

অভিযানে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইনসাদ ইবনে আমিন, আটলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হেলাল উদ্দিন, চুকনগর বাজার কমিটির সভাপতি শাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সরদার বিল্লাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ