সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেসের রাত্রিকালীন যাত্রাবিরতির দাবিতে ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ
Published: 24th, June 2025 GMT
খুলনা থেকে ঢাকার পথে চলাচলকারী আন্তনগর সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের রাত্রিকালীন যাত্রাবিরতির দাবিতে আজ মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গার দর্শনা হল্ট স্টেশনে দুই ঘণ্টা ট্রেন থামিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ‘দর্শনাবাসীর’ ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন।
ঢাকা থেকে খুলনাগামী আন্তনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে বেলা ১টা ৫৫ মিনিট থেকে কর্মসূচি শুরু হয়। পরে সেনাবাহিনীর চুয়াডাঙ্গা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন সৌমিক আহমেদ অয়নের আশ্বাসে সাত দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করা হয়। বেলা ৩টা ৫৫ মিনিটে ট্রেনটি খুলনার উদ্দেশে রওনা দেয়। এ সময় ঘোষণা দেওয়া হয়, আগামী সোমবারের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে মঙ্গলবার থেকে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।
সরেজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন স্লোগান লেখা ব্যানার–ফেস্টুন নিয়ে দুপুর ১২টা থেকে দর্শনা হল্ট স্টেশনে সমবেত হতে থাকেন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। ব্যানার ও ফেস্টুনে লেখা ছিল ‘বঞ্চনা নয়, অধিকার চাই’, ‘দর্শনায় যাত্রাবিরতি চাই’, ‘মিথ্যা আশ্বাস আর নয়, এবার বাস্তবায়ন চাই’, ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের আপ ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের ডাউন বিরতি চাই’। দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান, সাংস্কৃতিক সংগঠক সাজ্জাদ হোসেনসহ বাজার কমিটি ও ছাত্রসংগঠনের নেতারা কর্মসূচির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।
কর্মসূচি চলাকালে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিথি মিত্র দর্শনা হল্ট স্টেশনে আসেন। তিনি আন্দোলনকারীদের দাবিকে যৌক্তিক হিসেবে উল্লেখ করে রেলপথ অবরোধ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। তবে কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন আন্দোলনকারীরা। বিকেল পৌনে চারটার দিকে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন সৌমিক আহমেদ অয়ন আন্দোলনকারীদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁর আশ্বাসে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, কর্মসূচির কারণে বেনাপোল এক্সপ্রেস, মহানন্দা এক্সপ্রেস ও রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। এতে হাজারো যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন।
দর্শনাবাসীর ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচি স্থানীয়ভাবে সমন্বয় করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর আহম্মেদ অনিক ও সংগঠনটির দর্শনার সমন্বয়ক আবিদ হাসান রিফাত।
আবিদ হাসান বলেন, জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর দর্শনা। দর্শনার চেকপোস্ট হয়ে প্রতিদিন হাজারো যাত্রী ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত করেন। এখানকার যাত্রীদের বেশির ভাগই ট্রেনের ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, ‘খুলনা-ঢাকা পথে চলাচলকারী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন দিনের বেলা দর্শনা হল্ট স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়ে আসছে। অথচ দর্শনায় ট্রেন দুটির রাত্রিকালীন বিরতি নেই। এতে রাতে এসব ট্রেনে চলাচলকারী যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে ২৫ কিলোমিটার দূরে চুয়াডাঙ্গায় যেতে হয়। এতে অনেকেই ছিনতাইসহ নানা রকম সমস্যায় পড়েন। তাই এ দুটি ট্রেনের রাত্রিকালীন যাত্রাবিরতির জন্য আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছি। রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দফায় দফায় আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করছেন না।’
আন্দোলন স্থগিত রাখা প্রসঙ্গে তানভীর আহম্মেদ অনিক বলেন, এবার যদি সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে তাঁরা দর্শনা রেলস্টেশন বন্ধ করে দেবেন। এই স্টেশন থেকে কোনো টিকিট বিক্রি হবে না। প্রয়োজনে তাঁরা আমরণ অনশন করবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন দরবন
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে পরামর্শ সভা
সাতক্ষীরায় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের নিয়ে স্থানীয়দের চাহিদা নিরুপনে নির্বাচনী ইশতেহার-২০২৫ শীর্ষক উপজেলা পর্যায়ে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিডো এর আয়োজনে এবং একশনএইড বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
পূজার ছুটির পর গকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অভিষেক
নিবন্ধন পাচ্ছে এনসিপিসহ ২ দল
সিডো সাতক্ষীরার প্রধান নির্বাহী শ্যামল কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে কর্মসূচির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন, প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. তহিদুজ্জামান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভার কাউন্সিলর শফিক-উ-দ্দৌলা সাগর, টিআইবি সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি হেনরী সরদার, একশনএইড প্রতিনিধি সুইট খান, ইয়ূথ সভাপতি সাকিব হাসান, প্রোগ্রাম অফিসার চন্দ্র শেখর হালদার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাতক্ষীরা জেলার রাস্তা-ঘাটের অবস্থা অনেক শোচনীয়। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে রাস্তা-ঘাটের সংস্কার খুব জরুরি। সুন্দরবন কেন্দ্রিক টেকসই ইকোটুরিজম প্রতিষ্ঠা, সুন্দরবনের পরিবেশ ও সম্পদ সংরক্ষণ ও পর্যটন বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই ইকোটুরিজম ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সাতক্ষীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা জেলার শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষা সুবিধা দেবে।
তারা বলেন, রেল সংযোজন সাতক্ষীরা জেলা দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে বৈষম্যের শিকার। সাতক্ষীরাকে দেশের রেল নেটওয়ার্কে অন্তভুক্ত করতে হবে, যা জেলা ও দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় উপকূলীয় এলাকায় দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়া সাতক্ষীরায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম ও ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ, সীমান্তে মাদক প্রতিরোধে প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারী ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি, স্থলবন্দরকে পূর্নাঙ্গ বন্দরে রুপান্তর, সাতক্ষীরার ভোমরাকে একটি আধুনিক আন্তর্জাতিক মানের স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি, নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে কার্যকর পৌরসভার ব্যবস্থাপনা, সুন্দরবন বাঁচাতে জীবশ্ম জ্বালানীকে পরিবর্তে নবায়ন যোগ্য জ্বালানী সংযোজন, জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল কৃষি ব্যবস্থাপনা, সবুজ উদ্যোক্তা তৈরির জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণাগার তৈরি, প্রাণ সায়ের খালের দুই ধার সৌন্দর্যবর্ধন, যুবদের মুক্ত চিন্তা, উন্নয়ন ভাবনা ও নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য শিক্ষালয় কেন্দ্রিক যুববান্ধব স্পেস তৈরি ও কার্যকর করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলেন বক্তারা।
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী