ডিএনএ জানিয়ে দিল অজ্ঞাতনামা খুনির পরিচয়, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার
Published: 24th, June 2025 GMT
ঝালকাঠিতে পূর্ববিরোধের জেরে ইমরান হাওলাদার নামের এক যুবককে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ ডোবায় ফেলে দিয়েছিলেন খুনিরা। দুজনের নাম-পরিচয় জানা গেলেও বাকিরা ছিলেন অজ্ঞাত। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইমসিন ইউনিট খুঁজে বের করেছে আজ্ঞাতনামা খুনি মো. সেলিম মাদবর রফিককে (৪৯)।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খানের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার রফিক বরগুনার আমতলী থানার ঘটখালী গ্রামের মৃত মো.
আরো পড়ুন:
উখিয়ায় ডাকাত সর্দারের ‘গানম্যান’ গ্রেপ্তার
বেরোবি প্রশাসনের বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার কর্মচারী
মামলা সূত্রে জানা যায়, টোল উত্তোলন নিয়ে বিরোধের জেরে গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি রাতে ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভাধীন নান্দিকাঠি গ্রামে লাইফকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পাশে রাস্তায় ভুক্তভোগী ইমরান হাওলাদারকে পরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর মরদেহ পার্শ্ববর্তী কচুরিপানা ভর্তি ডোবার পানিতে ফেলে দেন খুনিরা। তাদের হামলায় গুরুতর আঘাত পান ভুক্তভোগী ইমরানের স্ত্রী ফাহিমা বেগম। পরবর্তীকালে নিহত ইমরানের বাবা আব্দুর রশিদ হাওলাদার বাদী হয়ে ২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
সিআইডি জানায়, ঘটনার পরপরই ক্রাইমসিন টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন আলামত জব্দ করে। জব্দ করা আলামত পরীক্ষার জন্য ডিএনএ ল্যাব সিআইডি সদর দফর ঢাকায় পাঠানো হয়। ডিএনএ বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে পাওয়া আলামতগুলো পরীক্ষা করে অজ্ঞাতনামা একজনের ডিএনএর অস্তিত্ব পায়। ডিএনএ প্রোফাইল ম্যাচিংয়ের মাধ্যমে জানা যায় তার নাম মো. সেলিম মাদবর রফিক। পরে তাকে তাকে গ্রেপ্তার করতে সিআইডির এলআইসি শাখা বিভিন্নভাবে তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযুক্তের অবস্থান শনাক্ত করে এলআইসি শাখার একটি দল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডেমরা ধানাধীন সারুলিয়া এলাকায় সোমবার (২৩ জুন) অভিযান চালিয়ে মো. সেলিম মাদবর রফিককে গ্রেপ্তার করে।
নথিপত্র পর্যালোনায় জানা যায়, তার বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় ২টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। এছাড়া বাড্ডা থানার এক মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
অন্যদিকে, এজাহারনামীয় এক নম্বর অভিযুক্ত আল আমিন হাওলাদার আদালতে আত্মসমর্পণ করে। আর গ্রেপ্তার মো. সেলিম মাদবর রফিককে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা/এমআর/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইমর ন ড এনএ স আইড
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিক তুহিনের মোবাইল ফোন খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ
সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবের ভিডিও ধারণ ও সত্য উন্মোচন করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন। তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় জড়িত আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এই হত্যাকাণ্ডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ রয়েছে তার ব্যবহত মোবাইল ফোনে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ তার মোবাইল উদ্ধার করতে পারেনি।
ধারণা করা হচ্ছে সাংবাদিক তুহিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা গেলে ঘটনার রহস্য আরও বেশি স্পষ্ট ও স্বচ্ছ প্রমাণিত হবে। সচেতন মহল ও সাংবাদিক সমাজ বলছে, মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে ঘটনার মোড় ঘুরে যেতে পারে। এসকল সন্ত্রাসী, তাদের মদদদাতা ও হত্যার আসল রহস্য বের হয়ে আসতো।
নিহত সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮) দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতেন।
তার সহকর্মী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক তুহিন দু’টি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন। তিনি চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপানা নিয়ে ভিডিও ধারণ করতেন। স্পর্শকাতর ছাড়া মোটামুটি সব ভিডিও তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিতেন।
হত্যাকাণ্ড সংঘটিত এলাকা চান্দনা চৌরাস্তা এলাকাতেই অধিকাংশ সময় কাটাতেন তুহিন। যার কারণে এ এলাকার মোটামুটি সব অনিয়ম ও অপরাধীরা তার পরিচিত ছিল।
সিসিটিভি ফুটেজের চিত্র ও পুলিশের ভাষ্যমতে, গত বৃহস্পতিবার বাদশা নামে এক ব্যক্তি ব্যাংক হতে ২৫ হাজার টাকা তুলে ফিরছিলেন। এসময় আসামি গোলাপী তাকে হানিট্রাপে ফেলার চেষ্টা করে। এটি যখন বাদশা বুঝতে পারে, তখন তার থেকে ছুটতে চায় এবং কিল-ঘুষি মারে। এসময় আগে থেকে ওৎপেতে থাকা অন্য আসামিরা এসে একটি মুদী দোকানে বাদশাকে কোপানো শুরু করে। বাদশা প্রাণ বাঁচাতে দৌড়াতে থাকে।
ঘটনাটি সাংবাদিক তুহিন নিজের পেশাগত কারণেই ভিডিও করে। আসামিরা সাংবাদিক তুহিনকে ভিডিও ডিলেট করতে বলে কিন্তু তিনি রাজি হননি। এক পর্যায়ে ওই আসামিরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে প্রথমে চান্দনা চৌরাস্তায় শাপলা ম্যানশনের সন্ত্রাসীরা বাদশা নামে লোকটার উপরে হামলা করে। ওই ঘটনার ২০-৩০ মিনিট পর ঘটনাস্থলের ঠিক বিপরীত পাশে মসজিদ মার্কেটের সামনে চায়ের দোকানে সাংবাদিকের উপর হামলা করে। এই দীর্ঘ সময় সন্ত্রাসীদের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শোডাউন দিতেও দেখা গেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন খান বলেন, “নিহত সাংবাদিকের দু’টি মোবাইল ফোন ছিল কিন্তু এখনো তার খোঁজ আমরা পাইনি। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদেও পাওয়া যায়নি ফোন। আমরা তার নম্বর ট্রেকিং করে রেখেছি। ফোন বন্ধ থাকায় লোকেশনও সনাক্ত করা যাচ্ছে না। আমরা ফোনটি উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
ঢাকা/রেজাউল/এস