বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে মেঘের ধরনে আসছে পরিবর্তন
Published: 26th, June 2025 GMT
বিকেলের স্নিগ্ধ আকাশের নানা ধরনের মেঘ আমাদের মুগ্ধতা ছড়ায়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কণ্ঠে বলা যায়, মেঘের কোলে রোদ হেসেছে, বাদল গেছে টুটি। এই মেঘের ধরনে পরিবর্তন আসছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণ মেঘের আকার ও ধরনে পরিবর্তন আসছে। জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধির পাচ্ছে। এতে মেঘও পরিবর্তিত হচ্ছে।
যেকোনো সময়ে পৃথিবীর আকাশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মেঘ দিয়ে আচ্ছাদিত থাকে। সামগ্রিকভাবে মেঘ আমাদের গ্রহকে শীতল করে তোলে। মেঘ না থাকলে পৃথিবী কম শীতল হতো। পৃথিবী উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেঘেরা বদলে যাচ্ছে। জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ালে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। গ্রিনহাউস গ্যাস পৃথিবীর তাপ বৃদ্ধি করছে। এসব কারণে বদলে যাচ্ছে আকাশে সাদা মেঘ।
গত কয়েক বছর ধরে জলবায়ু বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ে বেশ চিন্তিত। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বেড়েছে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা। এ বিষয়ে মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ক্রিশ্চিয়ান জ্যাকব বলেন, মেঘের পরিবর্তনের কারণে থার্মোস্ট্যাটের মতো পৃথিবীর জলবায়ুতে সক্রিয় পরিবর্তন আসছে। মেঘ সূর্যালোককে মাটিতে পৌঁছানোর আগে মহাকাশে প্রতিফলিত করে পৃথিবীকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। যদিও সব মেঘ সমান নয়। চকচকে সাদা মেঘ বেশি সূর্যালোক প্রতিফলিত করে। বিষুবরেখার কাছাকাছি থাকা মেঘে বেশি কাজ করে। পৃথিবীর যেসব অংশে সবচেয়ে বেশি সূর্যালোক পড়ে বলে সেখানে মেঘের ভূমিকা বেশি। অন্যদিকে, ধূসর ও ভাঙা ভাঙা মেঘ কম সূর্যালোক প্রতিফলিত করে। মেরুর কাছাকাছি এমন মেঘ দেখা যায়, যেখানে কম আলো পড়ে।
নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিফলনের ক্ষমতা আছে এমন মেঘের অঞ্চল সংকুচিত হচ্ছে। একই সময়ে ভাঙা ও সূর্যের আলো কম প্রতিফলিত করে এমন মেঘ ধারণকারী অঞ্চল বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব কারণে সূর্যালোক থেকে অতিরিক্ত শক্তি পৃথিবীর পৃষ্ঠে পৌঁছে যাচ্ছে। পৃষ্ঠ তাপ শোষণ করে বলে গ্রহ অতিরিক্ত উত্তপ্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী ক্রিশ্চিয়ান জ্যাকব বলেন, আমরা বায়ুমণ্ডলে অ্যারোসল দূষণের কারণে প্রতিফলিত মেঘের বৈশিষ্ট্যে বেশ পরিবর্তনের প্রভাবও দেখেছি। সাধারণভাবে, পৃথিবীর বাতাসের ধরন বিষুবরেখার কাছাকাছি গরম থাকে। গ্রহের ঘূর্ণনের মাধ্যমে এই বাতাস চালিত হয়। এর ফলে বিশ্বজুড়ে বায়ুমণ্ডলে ঘূর্ণমান স্রোত তৈরি হয়। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বায়ুমণ্ডলের বায়ু সঞ্চালনের ধরনে পরিবর্তন আসছে। আমরা দেখতে পেয়েছি, পৃথিবীর বেশ কয়েকটি অংশে মেঘের আচ্ছাদনে পরিবর্তন এসেছে। নিরক্ষরেখার কাছাকাছি একটি অঞ্চলে উচ্চ প্রতিফলিত মেঘ হ্রাস পাচ্ছে। একে আন্তঃক্রান্তীয় অভিসৃতি অঞ্চল বলা হয়। উষ্ণায়ন বাতাসের ধরন পরিবর্তন করছে। এতে মেঘের ধরন পরিবর্তন হচ্ছে।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ধরন
এছাড়াও পড়ুন:
‘দেখা যাক দায় কেউ নেয় কিনা’—ইউনূস-স্টারমার বৈঠক না হওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
যুক্তরাজ্যে প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক সফরকে দেশটির পক্ষ থেকে ‘অফিশিয়াল’ বলা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকেই প্রথমে বলা হয়েছিল, এটি একটি অফিসিয়াল সফর। তাদের বক্তব্যের পরেই আমরাও তা নিশ্চিত করি। এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
তবে সফরকালে যুক্তরাজ্যে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কোনো বৈঠক না হওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয় এখনো কোনো পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তিনি।
তৌহিদ হোসেন বলেন, বৈঠকটি কেন হয়নি, এই মুহূর্তে আমি সঠিকভাবে বলতে পারছি না। কারণ, আমি নিজে সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। যারা ছিলেন, তারাই হয়তো ভালো বলতে পারবেন। তবে বাস্তবতা হলো— মিটিংটি হয়নি।
গত ১৮ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেছেন, ‘এ সফরের আগে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার (ঢাকাস্থ) এক ব্রেকফাস্ট মিটিংয়ে আমাকে জানিয়েছিলেন, তারা এ সফরকে সরকারি সফর হিসেবে আপগ্রেড করেছেন।’
তারপরেও মিটিং না হওয়ার দায় কার- জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এখন দেখা যাক, এর দায় কেউ নেয় কি না।’
তিনি বলেন, ‘তারা বলেনি এ সময়ে বৈঠকটি হবে। তবে সফরটি অফিসিয়াল—এটি বলা হয়েছিল এবং সেই অনুযায়ী আমাদের প্রত্যাশাও ছিল।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানান, সফরকালে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কোনো সৌজন্য সাক্ষাৎ করেননি।