জোহরান মামদানির নিউইয়র্ক জয় যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থী রাজনীতিকে চাঙা করছে
Published: 26th, June 2025 GMT
নিউইয়র্ক সিটি নিয়ে সাহসী সব পরিকল্পনা রয়েছে ডেমোক্রেটিক পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী জোহরান মামদানির। তিনি নগর কর্তৃপক্ষের মালিকানায় মুদিদোকান চালু, আরও বাড়ি নির্মাণ ও বাসের ভাড়া সম্পূর্ণ মওকুফ করতে চান। আরও চান ভর্তুকিপ্রাপ্ত ভাড়াটেদের জন্য বাড়িভাড়া বৃদ্ধি স্থগিত করতে।
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রাইমারিকে সামনে রেখে মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বীরা ও কিছু গণমাধ্যম ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে তাঁর অবস্থানের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।
মামদানি ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষায় সরব কণ্ঠস্বর। তিনি ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নিপীড়নের নিন্দা জানিয়েছেন এবং গাজায় ইসরায়েলি হামলাকে গণহত্যা হিসেবে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মূল্যায়নের সঙ্গেও একমত পোষণ করেছেন।
ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে মামদানির এ অবস্থান নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীরা উদ্বেগ প্রকাশ করলেও নিজের অবস্থান থেকে একচুল পিছু হটেননি তিনি এবং ডেমোক্র্যাট প্রাইমারিতে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে হারিয়ে অভাবনীয় জয় পেয়েছেন। স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য মামদানি এখন ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী।
মামদানির সমর্থকদের মতে, তাঁর এ জয় হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন বাঁকের সূচনা, যা এটিই দেখিয়েছে যে প্রগতিশীল নীতিমালা ও ফিলিস্তিনের অধিকারকে সমর্থন দিয়েও নির্বাচনে সফল হওয়া সম্ভব।
প্রগতিশীল সংগঠন জাস্টিস ডেমোক্র্যাটসের মুখপাত্র উসামা আন্দ্রাবি বলেন, ‘এটি একটি বড় ঘটনা। যাঁরা সত্যিকারের প্রগতিশীল এবং ধনকুবের ও করপোরেট অর্থায়নে পরিচালিত রাজনৈতিক প্রচার সংস্থার বিরুদ্ধে শ্রমজীবী শ্রেণিকে একত্র করতে প্রস্তুত, কিন্তু গণহত্যার মতো বড় বিষয় নিয়ে কোনো ছাড় দেন না, তাঁদের সাফল্য কেউ আটকাতে পারবে না।’
ঐতিহ্যগতভাবে নিউইয়র্কে ডেমোক্র্যাটদের শক্ত অবস্থান রয়েছে। তাই দলীয় প্রার্থী হিসেবে মামদানির নভেম্বরের মেয়র নির্বাচনে সহজ জয় পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
ফিলিস্তিন বিষয়ে নিজের অবস্থান থেকে তাঁর (মামদানি) একচুলও পিছু না হটা এক বিরাট বিষয়। তা-ও এমন এক পরিবেশে, যেখানে বলা হতো, এ অবস্থান নেওয়া রাজনীতিতে ব্যর্থতার কারণ হবে। কিন্তু এ আন্দোলন (মামদানির প্রচার) শুধু সেই মতটা জোর দিয়ে বলেইনি, বরং পুরো আন্দোলনই ওই মতের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছেহিবা গোয়ায়েদ, সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের সমাজবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক‘ফিলিস্তিন বিষয়ে তিনি একচুলও পিছু হটেননি’
ডিজিটাল মিডিয়ায় দক্ষ, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও অমায়িক স্বভাবের ৩৩ বছর বয়সী তরুণ মামদানি নিউইয়র্কের রাস্তায় তৃণমূল পর্যায়ে প্রচারণা ও ভাইরাল ভিডিওর মাধ্যমে ধীরে ধীরে নিজ সমর্থক গোষ্ঠী গড়ে তুলেছেন।
গত বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর মামদানি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক, যাঁরা ভোট দেননি এবং যাঁরা প্রচলিত রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন—এমন সব ধরনের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। এরপর তিনি তাঁদের সামনে নিজের রাজনৈতিক রূপরেখা তুলে ধরেন। তিনি যে ভিডিও তৈরি করেন, তাতে দেখা যায়, তাঁদের কেউ কেউ বলেন যে তাঁরা মেয়র পদে মামদানিকে সমর্থন করবেন।
ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে মামদানির এ অবস্থান নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীরা উদ্বেগ প্রকাশ করলেও নিজের অবস্থান থেকে একচুল পিছু হটেননি তিনি এবং ডেমোক্র্যাট প্রাইমারিতে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে হারিয়ে অভাবনীয় জয় পেয়েছেন। স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য মামদানি এখন ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী।মামদানির সমর্থকদের মতে, তিনি স্বেচ্ছাসেবীদের একটি বিশাল বাহিনী গড়ে তুলতেও সফল হয়েছেন। তাঁরা লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের দরজায় দরজায় গিয়ে মামদানির পক্ষে প্রচার চালিয়েছেন।
আরও পড়ুনট্রাম্পের ‘সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন’ জোহরান মামদানি১৩ ঘণ্টা আগেসিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের সমাজবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হিবা গোয়ায়েদ বলেন, অনেক তরুণ জোহরান মামদানির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন এবং ইসরায়েলি নীতির বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থানের কারণে মূলত তাঁর প্রচারে যুক্ত হয়েছেন।
গোয়ায়েদ আল–জাজিরাকে আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিন বিষয়ে নিজের অবস্থান থেকে তাঁর (মামদানি) একচুলও পিছু না হটা এক বিরাট বিষয়। তা–ও এমন এক পরিবেশে, যেখানে বলা হতো, এ অবস্থান নেওয়া রাজনীতিতে ব্যর্থতার কারণ হবে। কিন্তু এ আন্দোলন (মামদানির প্রচার) শুধু সেই মতটা জোর দিয়ে বলেইনি, বরং পুরো আন্দোলনই ওই মতের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।’
এই অধ্যাপক আরও বলেন, ‘যদি মামদানি সমালোচকদের খুশি করতে নিজের অবস্থান বদলে ফেলতেন, তাহলে যে সমর্থন আর উদ্দীপনা তাঁকে জেতাতে সাহায্য করেছিল, সেটা হারিয়ে ফেলতেন। কিন্তু তিনি ফিলিস্তিনের প্রতি যে সমর্থন দেখিয়েছেন, তা সম্ভবত তাঁর প্রচারকে আরও শক্তিশালী করেছে।’
আরও পড়ুনসাবেক গভর্নর কুমোর হার, নিউইয়র্কে ডেমোক্র্যাটদের মেয়র প্রার্থী মুসলিম তরুণ মামদানি২৫ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন জ র অবস থ ন থ ক এ অবস থ ন ন ন উইয়র ক র ম মদ ন র প র জন ত ক ইসর য় ল একচ ল
এছাড়াও পড়ুন:
জোহরান মামদানি যেভাবে ইতিহাস বদলে দেওয়ার পথে
২৪ জুন রাত। নিউইয়র্কের জ্যামাইকার মুসলিম সেন্টারের সামনে মানুষের জটলা। তরুণ, যুবক ও বয়স্ক মানুষও আছেন। সবাই উচ্ছ্বসিত ও আনন্দিত। কয়েক দিন ধরে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিলেন তাঁরা। সেই চিন্তার অবসান হয়েছে। নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনের প্রাথমিক পর্বে তাঁদের প্রার্থী জোহরান মামদানি জয়ী হয়েছেন। তাঁদের এত দিনের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।
কিছু দিনের জন্য সন্তানের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছি। আছি নিউইয়র্কেই। ফলে নিউইয়র্ক সিটির নির্বাচনের এই উত্তাপ ও উত্তেজনা দেখার সুযোগ হলো। এবারের সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে শুরু থেকেই আলোচনা তৈরি করেছিলেন জোহরান। ধীরে ধীরে বিশ্ব মিডিয়ায় শিরোনাম হয়ে যান তিনি। এখন তো নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হওয়ার একেবারেই দ্বারপ্রান্তে তিনি। মুসলিম কাউকে এ প্রথম মেয়র হিসেবে পেতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ শহর।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে কথা বললাম। তাদের বিশাল একটি অংশ জোহরান মামদানিকেই সমর্থন দিয়েছেন। জোহরানের প্রায় নিশ্চিত বিজয় নিয়ে তাদের ভাবনা কী?
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক ও জেনারেল সেক্রেটারি মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতা আফতাব উদ্দিন মোহাম্মদ মান্নান বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে। আমরা সবাই এই বিজয়ের অংশীদার। এর মাধ্যমে একটি নতুন ইতিহাস রচিত হলো। জোহরান মামদানি একজন প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাট এবং বর্তমানে একজন সিটি কাউন্সিলর। আমরা তাঁর পক্ষ নিয়েছি। কারণ, তিনি সব সময় ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলেছেন। তাঁদের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়ে আসছেন। তিনি ন্যায়ের পক্ষে। নির্বাচনে তাঁর পক্ষে ৪০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক স্বপ্রণোদিত হয়ে কাজ করেছেন। মেয়র প্রার্থী হিসেবে তাঁর অঙ্গীকারগুলোও আমাদের আকৃষ্ট করেছে।
তিনি পরিচ্ছন্ন সাবওয়ের কথা বলেছেন। সবার জন্য সাশ্রয়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করার কথাও বলেছেন এবং নিউইয়র্কের শ্রমজীবী মানুষের জন্য বেতন বাড়ানোর বিষয়টিকে তিনি খুব গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি নিরাপদ ও মাদকমুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন বলেও অঙ্গীকার করেছেন। এসব চিন্তা এখানকার মুসলমানদের আকৃষ্ট করেছে। সবচেয়ে বড় কথা, তিনি একজন ভালো মুসলিম, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা উচ্চশিক্ষিত আইনজীবী ও তাঁর বাবা হার্ভার্ডের শিক্ষক।’
আফতাবের কথায় নিউইয়র্কের মুসলমান সম্প্রদায়ের কথার প্রতিফলন ঘটেছে। জোহরান মামদানি নামটি কয়দিন আগেও আমার কাছে অপরিচিত ছিল। বাংলাদেশে তাঁর নাম আগে শুনিনি। কিন্তু আফতাবের কথায় বুঝলাম, জোহরান এখানে খুব জনপ্রিয় এবং এখানকার রাজনীতিতে বেশ প্রভাবশালী। প্রাথমিক পর্বে তাঁর জয় এখানকার রাজনীতির ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত চিহ্নিত হচ্ছে। এটি যেন এখানকার মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি নীরব বিপ্লব।
জোহরান মামদানির বিজয়কে কেন এত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন মুসলমানরা? কেন একে মাইলফলক ভাবছেন? তার বেশ কয়েকটি কারণ আছে। প্রধান কারণ হলো, তিনি একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তিনি একজন মুসলমান ও প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ। এমন পরিচয়ের একজন মানুষ নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হতে চলেছেন, মানে একটি বিশ্বখ্যাত মহানগরের শীর্ষ পদে আসীন হবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ রকম আগে কখনো ঘটেনি। এবারই প্রথম। আর এ ঘটনা শুধু নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতি নয়, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় উঠেছে। মার্কিন রাজনীতি ও সামাজিকভাবে মুসলমানদের একটা স্বস্তি ও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাবে বলে অনেকের ধারণা।
নাইন–ইলেভেনের পর থেকে মার্কিন সমাজে মুসলমানেরা ‘সন্দেহভাজন’ হয়ে দিন যাপন করছে। মুসলমানেরা হয়ে উঠেছে আতঙ্কের মতো। মুসলিম পরিচয়টাই যেন হয়ে উঠেছিল একটি উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তার বিষয়। সেই রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সন্দেহের দেয়াল ভেঙে সামনে এগিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সমাজ। তাদের এগিয়ে যাওয়া প্রথম প্রত্যক্ষ করা গেছে দুজন নারীর মাধ্যমে। তাঁরা হলেন মিনেসোটার ইলহান ওমর ও মিশিগানের রাশিদা তালিব। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে প্রথম মুসলিম নারী সদস্য রাশিদা তালেব ও ইলহান ওমর। তাঁরা দুজনই ২০১৯ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাশিদা তালেব মিশিগান থেকে এবং ইলহান ওমর মিনেসোটা থেকে নির্বাচিত হন।
দুজনই মার্কিন কংগ্রেসে মুসলিম নারীদের প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে নতুন ইতিহাস তৈরি করেছেন। তাঁদের নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা।
মামদানির বিজয়ও এ রকম একটি বড় ঘটনা হতে চলেছে। সবচেয়ে বড় কথা, মামদানির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বা রাজনৈতিক ভাবনাগুলো শুধু তাঁর সম্প্রদায়ের মানুষকে ঘিরে বিকশিত হয়নি। তিনি উদারনৈতিক মানুষ। তাঁর পরিচয় বা কর্ম শুধু নিজের ধর্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেনি। মুসলমানদের জন্য আলাদা কোনো কর্মসূচি বা এজেন্ডা তাঁর নেই। তিনি নিউইয়র্ক সিটির সব মানুষের সাধারণ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছেন, যেমন বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করা, পুলিশের সংস্কার করা, জলবায়ু ন্যায়বিচার ইত্যাদি। তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় এগুলোই প্রধান অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করেছে। এ জন্য তিনি শুধু মুসলমানদের প্রতিনিধি নন, সব নাগরিকের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে। আর এ রকম মনোভাবই তাঁকে এগিয়ে নিয়েছে বলে এখানকার ভোটারদের বিশ্বাস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাংলাদেশি প্রবাসী বলেন, শুধু নিজের সম্প্রদায়গত চিন্তা আর কর্মকাণ্ড দিয়ে মানুষ নেতা হতে পারেন না। মামদানি সেটা করেননি বলেই, নিজের গণ্ডির বাইরে চিন্তা করেছেন বলেই তিনি এগিয়ে গেছেন। তিনি আরও বলেন, একটা সময় ছিল এখানে মুসলমানরা ভোটার হিসেবে উপেক্ষিত ছিল। সেই মুসলমানরা এখন রাজনৈতিক নেতৃত্বে আসছে। এটা কম কথা নয়।
মামদানির বিজয় এখানকার মুসলমানদের জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো, আটলান্টা, ডেট্রয়েট, হিউস্টনের মতো বিশাল সিটিগুলোয় মুসলিম তরুণেরা উৎসাহিত হচ্ছেন। তাঁরা স্থানীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে রাজ্য পর্যায়ের রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন। ফলে সামাজিক হীনম্মন্যতা মুছে তাঁরা আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
আগামী ৪ নভেম্বর চূড়ান্ত অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে জোহরান মামদানি লড়বেন ও জিতে আসবেন—এ ব্যাপারে বিশ্লেষকেরা প্রায় নিশ্চিত। তাঁর এ বিজয় শুধু একজনের বিজয় নয়, এতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। এটি শুধু রাজনৈতিক বিজয় নয়, মুসলমানদের প্রতি এখানকার সমাজের আস্থার পুনর্নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তরও রচিত হবে যুক্তরাষ্ট্রে।
ওমর কায়সার প্রথম আলোর চট্টগ্রাম অফিসের বার্তা সম্পাদক