গোড়ালি ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণ মচকে যাওয়া বা গোড়ালির চারপাশের লিগামেন্টগুলো প্রসারিত বা ছিঁড়ে যাওয়া। এ ছাড়া গোড়ালি ব্যথার অন্যান্য কারণ হলো প্লান্টার ফ্যাসাইটিস, ক্যালকেনিয়াম স্পার, গেঁটে বাত, বারসাইটিস, টারসাল টানেল সিনড্রোম, অ্যাকিলিস টেন্ডিনাইটিস, হাড়ভাঙা ইত্যাদি।
কাদের বেশি হয়দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা শক্ত সোলের জুতা ব্যবহার করেন, স্থূলতার কারণে গোড়ালিতে বেশি চাপ, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি হয়। পেলভিস পোস্টেরিয়র টিল্ট বা নকনির জন্যও গোড়ালি ব্যথা হতে পারে। তুলনামূলকভাবে নারীদের গোড়ালি ব্যথা বেশি হয়, বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়। জন্মগত ফ্ল্যাট ফুট যাঁদের, তাঁদের গোড়ালি ব্যথা হতে পারে।
প্রতিকার ও চিকিৎসাউঁচু ও শক্ত সোলের জুতা পরিহার করুন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ ও অতিরিক্ত অসম জায়গায় চলাচল করা যাবে না। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় সামুদ্রিক মাছ, শাকসবজি ও ফলমূল রাখুন। দেহে ভিটামিন ডির সঠিক মাত্রা নিশ্চিত করতে হবে। দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, যাতে পায়ে চাপ কম পড়ে।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করুন। দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা থাকলে নিয়মিত কয়েক সপ্তাহ ফিজিওথেরাপি সেশনের মাধ্যমে উপকার পাওয়া যায়। ম্যানুয়াল বা ম্যানিপুলেশন থেরাপি, লেজার, আলট্রাসাউন্ড, টেপিং ও কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনপা ভাঁজ করে বসার কিছুক্ষণ পরেই অবশ হয়ে আসে কেন০৫ মার্চ ২০২৫ঘরে বসে কিছু ব্যায়াম করা যায়
দেয়ালের কাছে দাঁড়িয়ে গোড়ালি তুলে পায়ের বৃদ্ধা আঙুলে ভর করে দাঁড়ান ও ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
একটি পানির বোতল ভরে ফ্রিজে রাখুন। বরফ জমে গেলে বোতলটি পায়ের নিচে রেখে ৩০ সেকেন্ড ফুট রোল করুন।
একটি ফিতা বা চোয়ালে নিয়ে পায়ের পাতার সামনের অংশে আটকে দুই হাত দিয়ে হালকা করে টানুন ও ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
একটি টেনিস বল নিয়ে পায়ের গোড়ালি থেকে পাতা পর্যন্ত ১৫–২০ বার রোল করুন দিনে তিনবার।
হাত দিয়ে পায়ের পাতায় ম্যাসাজ করুন। দিনে তিনবার করুন একই নিয়মে।
যেকোনো দেয়ালের সামনে দাঁড়ান। একটি পা সামনে, অপর পা পেছনের দিকে সোজা করে রাখুন। সামনের পায়ের হাঁটু ভাঁজ করুন। পেছনের পায়ের হাঁটু ভাঁজ না করে একদম সোজা রাখুন। দুই হাত দিয়ে দেয়ালে ভর দিন। এ সময়ে আপনার পেছনের পা ও গোড়ালিতে টান অনুভব করবেন। একই অবস্থানে পেছনের পা সামনে এনে ২০-৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এভাবে দুই পায়ে ১০ বার করে দিনে ৩ বার করুন।
শারমিন হোসেন, ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট, আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, ঢাকা
আরও পড়ুনহাত-পা ঝিনঝিন করে কেন, এটা কি কোনো মারাত্মক রোগের লক্ষণ?১৬ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ৩০ স ক ন ড র কর ন
এছাড়াও পড়ুন:
ইবিতে অভয়ারণ্যের মেহেদি উৎসব
হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফেরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মেহেদি ও নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় তারা এ আয়োজন করে।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে চলছে রাস উৎসব ও মেলা
পুণ্যস্নান মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় শেষ হলো রাস উৎসব, মেলা চলবে ৫ দিন
সরেজমিনে দেখা যায়, মেহেদি ও নবান্ন উৎসব ঘিরে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি। রঙিন কাগজের সাজে পুরো স্থানজুড়ে তৈরি হয়েছিল উৎসবের আমেজ। পরিবেশবান্ধব বার্তা বহনকারী ঝুলন্ত ডেকোরেশন, প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার স্টল এবং সাহিত্য–সংস্কৃতির বিভিন্ন উপস্থাপনা দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।
শিক্ষার্থীরা জানান, অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়। প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার হার কমে গেলেও এ আয়োজন সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
ফাতিমা খাতুন নামে ইবির এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনগুলোর মধ্যে অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রম। আজ মেহেদি উৎসবে এসে আমার অনেক ভালো লাগছে। আজকাল প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার সংস্কৃতি অনেকটাই কমে গেছে। তারা সেই সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাছাড়া নবান্ন উৎসব যেখানে একদম বিলীনপ্রায়, সেখানে তারা এটারও আয়োজন করেছে। আশা করছি, এ রকম সুন্দর আয়োজন চলমান থাকবে।”
সংগঠনটির সভাপতি নাইমুল ফারাবী বলেন, “আমরা এবার দ্বিতীয়বারের মতো মেহেদি উৎসবের আয়োজন করছি। একসময় মেয়েদের হাত সর্বদা মেহেদীর রঙে রাঙা থাকত। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে এ চর্চা এখন কমে গেছে। এটাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যই আজকের এই আয়োজন।”
তিনি বলেন, “আজ যে মেহেদি দেওয়া হচ্ছে, সেটা আমাদের সংগঠনের রোপণ করা গাছের পাতা থেকে তৈরি। এর মাধ্যমে আমরা শুদ্ধতা ছাড়িয়ে দিতে চাই।”
তিনি আরো বলেন, “মেহেদি উৎসবের পাশাপাশি আমরা এবার প্রথমবারের মতো নবান্ন উৎসব আয়োজন করেছি। এর মাধ্যমে আমার বাংলার সংস্কৃতিকে পূনর্জ্জীবিত করতে চাচ্ছি। বাংলার বহুল প্রচলিত সংস্কৃতিকে যাতে করে শিক্ষার্থীরা পুনরায় ধারণ করতে পারে, সেজন্য আমাদের এই আয়োজন।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী