যারা নির্বাচন বিলম্বিত করবে তাদের জনপ্রিয়তা কমবে: শহীদউদ্দীন চৌধ
Published: 26th, June 2025 GMT
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, বিদেশি বিনিয়োগ, আইনশৃঙ্খলার অবনতিসহ বিভিন্ন কারণে জাতীয় নির্বাচন অতি দ্রুত দরকার। যারা নির্বাচন বিলম্বিত করবে তাদের জনপ্রিয়তা কমবে। যারা দেরিতে নির্বাচন চান তারা মূলত মাঠ সাজিয়ে আরো বেশি কাজ করতে চান। ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে চান। এজন্য তাদের সময় দরকার। এ কারণেই তারা নির্বাচন দেরিতে চায়।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত শফিকুল কবির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’-এ তিনি এসব কথা বলেন।
‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ এর সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন। সঞ্চালনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
আগামীর বাংলাদেশ বিএনপির কূটনীতি কী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘‘বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে প্রভু থাকবে না। ভারতের কারণে সার্ক আজ অকার্যকর। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগও সমানভাবে দায়ী। বিএনপি আসলে আবার সার্ক গতিশীল হবে। প্রত্যেক বিদেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আলাদা আলাদা পলিসি হবে।’’
বিএনপি ক্ষমতায় আসলে মিডিয়ার কী সংস্কার করবে? এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি ফ্রি মিডিয়ায় বিশ্বাসী।’’
‘‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল দাবি করলেও তারা মুক্তিযুদ্ধ করেনি। তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে আরাম-আয়েশে ছিল। আওয়ামী লীগ কখনো জনমানুষের দল ছিল না। এরশাদ ছিল স্বৈরাচার। কিন্তু আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারের পাশাপাশি কর্তৃত্ববাদী ছিল। দেশ ধ্বংসে এরশাদের চেয়ে আওয়ামী লীগ এগিয়ে।’’ বলেন তিনি।
তারেক জিয়া কবে দেশে ফিরবেন জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। প্রস্তুতি নিতে সময় নিচ্ছেন। বিএনপি একটি দায়িত্বশীল ও অভিজ্ঞ দল হিসেবে দেশের সংকটময় মুহূর্তে সঠিক বার্তা দিয়েছে। খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকা অবস্থায় তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দেশের অস্থির পরিস্থিতিতে মানুষকে আশ্বস্ত করেছেন। বিশেষ করে, আগস্টের ৫, ৬, ৭ ও ৮ তারিখের অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশের প্রতি মানুষের ঘৃণা ও হামলার ঘটনায় তারেক রহমান ঐক্যের ডাক দিয়ে সব রাজনৈতিক দল ও দেশের মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।’’
এ্যানি আরও বলেন, ‘‘গত ১৭ বছরের দুঃশাসন সত্ত্বেও, তারেক রহমানের দূরদর্শিতায় দেশে বড় ধরনের কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। তারেক রহমানের প্রতি মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ও সম্মানের মূল কারণ এটাই এবং এ আস্থা থেকেই বিএনপি ভরসা করে যে, আগামী দিনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’’
এ্যানি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আওয়ামী সরকার ‘রক্তচক্ষু’ দেখিয়ে শুধু বিএনপি নয়, দেশের সব রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষকে ঘায়েল করেছে, যার ফলে দেশের রাজনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং স্বাভাবিক রাজনৈতিক চর্চার কোনো সুযোগ ছিল না। ২০১৪ সালে ভোটের কোনো পরিবেশ ছিল না, ২০১৮ সালে রাতের আঁধারে ভোট হয়েছে এবং ২০২৪ সালে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে নির্বাচন করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগ কখনোই প্রকৃত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী ছিল না।’’
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলকে গণতান্ত্রিক ও উন্নয়নমুখী হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘জিয়াউর রহমান নিজের হাতে অস্ত্র ধরে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের সূচনা করেছেন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন। আর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের সূচনা হয়।’’
তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির চলমান আন্দোলন ও সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপর বর্তমান সরকারও সংস্কার নিয়ে আলোচনা করতে বাধ্য হচ্ছে উল্লেখ করে এ্যানি বলেন, ‘‘বিএনপির ৩১ দফা অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ১০ বছরের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবে না তারেক রহমানের এ প্রস্তাব তার রাজনৈতিক ও চিন্তা-ভাবনার ফল।’’
এএএম//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র ক রহম ন র র জন ত ক ব এনপ র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ইবিতে অভয়ারণ্যের মেহেদি উৎসব
হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফেরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মেহেদি ও নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় তারা এ আয়োজন করে।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে চলছে রাস উৎসব ও মেলা
পুণ্যস্নান মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় শেষ হলো রাস উৎসব, মেলা চলবে ৫ দিন
সরেজমিনে দেখা যায়, মেহেদি ও নবান্ন উৎসব ঘিরে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি। রঙিন কাগজের সাজে পুরো স্থানজুড়ে তৈরি হয়েছিল উৎসবের আমেজ। পরিবেশবান্ধব বার্তা বহনকারী ঝুলন্ত ডেকোরেশন, প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার স্টল এবং সাহিত্য–সংস্কৃতির বিভিন্ন উপস্থাপনা দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।
শিক্ষার্থীরা জানান, অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়। প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার হার কমে গেলেও এ আয়োজন সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
ফাতিমা খাতুন নামে ইবির এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনগুলোর মধ্যে অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রম। আজ মেহেদি উৎসবে এসে আমার অনেক ভালো লাগছে। আজকাল প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার সংস্কৃতি অনেকটাই কমে গেছে। তারা সেই সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাছাড়া নবান্ন উৎসব যেখানে একদম বিলীনপ্রায়, সেখানে তারা এটারও আয়োজন করেছে। আশা করছি, এ রকম সুন্দর আয়োজন চলমান থাকবে।”
সংগঠনটির সভাপতি নাইমুল ফারাবী বলেন, “আমরা এবার দ্বিতীয়বারের মতো মেহেদি উৎসবের আয়োজন করছি। একসময় মেয়েদের হাত সর্বদা মেহেদীর রঙে রাঙা থাকত। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে এ চর্চা এখন কমে গেছে। এটাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যই আজকের এই আয়োজন।”
তিনি বলেন, “আজ যে মেহেদি দেওয়া হচ্ছে, সেটা আমাদের সংগঠনের রোপণ করা গাছের পাতা থেকে তৈরি। এর মাধ্যমে আমরা শুদ্ধতা ছাড়িয়ে দিতে চাই।”
তিনি আরো বলেন, “মেহেদি উৎসবের পাশাপাশি আমরা এবার প্রথমবারের মতো নবান্ন উৎসব আয়োজন করেছি। এর মাধ্যমে আমার বাংলার সংস্কৃতিকে পূনর্জ্জীবিত করতে চাচ্ছি। বাংলার বহুল প্রচলিত সংস্কৃতিকে যাতে করে শিক্ষার্থীরা পুনরায় ধারণ করতে পারে, সেজন্য আমাদের এই আয়োজন।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী