অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদারে মনোযোগ দিয়েছে ইরান
Published: 26th, June 2025 GMT
ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদারে মনোযোগ দিয়েছে ইরান। লুকিয়ে থাকা ইসরায়েলি গুপ্তচরদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করেছে দেশটি। গণগ্রেপ্তার, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মতো ঘটনাও ঘটেছে। তবে এসব ঘটনার অধিকাংশই ইরানের অশান্ত কুর্দিস্তান অঞ্চলে ঘটছে বলে অভিযোগ করেছেন কুর্দি মানবাধিকারকর্মীরা।
তারা রয়টার্সকে জানান, ১৩ জুন ইসরায়েলি বিমান হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে ব্যাপক গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করে। ইসরায়েলের কিছু মহল ও ইরানের প্রবাসী বিরোধী গোষ্ঠী আশা করেছিল, ইসরায়েলি হামলা সরকারের ভিত কাঁপিয়ে তুলবে। এখন পর্যন্ত সরকারবিরোধী কোনো আন্দোলন দেখা যায়নি। তবে নিরাপত্তা হুমকির বিষয়ে অবগত এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ভবিষ্যৎ অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের আশঙ্কায় এখন প্রধান অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে, বিশেষ করে কুর্দি অঞ্চলে।
তিনি জানান, ইসরায়েলি গুপ্তচর, জাতিগত বিচ্ছিন্নতাবাদী ও নির্বাসিত বিরোধী সংগঠন পিপলস মুজাহিদিনের সম্ভাব্য তৎপরতা ঠেকাতে বিপুল নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি হামলার পর থেকে দেশটির আন্দোলনকারীরা প্রায় নিশ্চুপ হয়ে আছেন। ২০২২ সালের গণআন্দোলনের সময় কারান্তরীণ তেহরানের এক মানবাধিকারকর্মী বলেন, আমরা এখন বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছি। কারণ, যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতির অজুহাতে সরকার আমাদের ওপর চড়াও হতে পারে।
তিনি আরও জানান, তাঁর পরিচিত বহু মানুষকে তলব করে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে অনেকে গ্রেপ্তারও হয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থা এইচআরএনএ জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৭০৫ জনকে রাজনৈতিক বা নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, তুরস্ক সীমান্তবর্তী ইরানের উত্তর-পশ্চিমের শহর উরমিয়াতে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে যোগসাজশ এবং গুপ্তহত্যায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি চোরাচালানের দায়ে দোষী সাব্যস্ত তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ইরানি কুর্দিদের অধিকার আন্দোলনকারী গোষ্ঠী হেঙ্গাও জানিয়েছে, যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, তারা সবাই কুর্দি। এ বিষয়ে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে ইরানের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মাদারীপুরে থানা চত্বর থেকে পালিয়ে যাওয়া মাদক মামলার আসামি গ্রেপ্তার
মাদারীপুরের রাজৈর থানা চত্বর থেকে মাদক মামলার আসামি অনিমেষ ওরফে গণি গাইন (৩২) পালিয়ে যাওয়ার ১০ ঘণ্টা পর ফের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার উজানী ইউনিয়নের পাটকেলবাড়ী গ্রামের আত্মীয় অসিত রায়ের বাড়ি থেকে অনিমেষকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে আসামি অনিমেষকে রাজৈর থানা চত্বর থেকে আদালতে হাজির করতে পুলিশের গাড়িতে ওঠানোর সময় পুলিশ সদস্যদের ধাক্কা দিয়ে তিনি পালিয়ে যান। তিনি উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের মধ্যপাড়া এলাকার ক্ষিতিশ চন্দ্র গাইনের ছেলে
থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, রোববার রাতে অভিযানে চালিয়ে অনিমেষ গাইনসহ মোট চারজনকে আটক করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছে গাঁজা ও ইয়াবা পাওয়া যায়। তাঁদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা করে রাজৈর থানা-পুলিশ। পরে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে আসামিদের মাদারীপুর আদালতে নেওয়ার জন্য পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। এ সময় কৌশলে হাতকড়ার ভেতর থেকে হাত বের করে পুলিশ সদস্যদের ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায় অনিমেষ। এ ঘটনায় আহসান হাবিব ও সাদ্দাম হোসেন নামে রাজৈর থানার দুই পুলিশ সদস্যকে গতকাল সন্ধ্যায় প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁদের পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যাওয়া আসামিকে অভিযান চালিয়ে গতকাল রাত ১০টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামি পালিয়ে গোপালগঞ্জ জেলায় তাঁর ভায়রার বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল। আজ সকালে আসামি অনিমেষ গাইনকে আদালতে পাঠানো হয়। বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।