আজ শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৮৬তম জন্মদিন। তিনি ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দেড় দশক ধরে তাঁর জন্মদিনকে বৈশ্বিকভাবে পালন করা হয় সামাজিক ব্যবসা দিবস হিসেবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সমকালকে জানিয়েছেন, ড.

ইউনূসের জন্মদিন উপলক্ষে সরকারি কোনো কর্মসূচি নেই। সরকারি পর্যায়ে জন্মদিন পালন করা হবে না।

গতকাল শুক্রবার ঢাকার সাভারের জিরাবো সামাজিক কনভেনশন সেন্টারে দু’দিনের ‘সোশ্যাল বিজনেস ডে’র উদ্বোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ড. ইউনূস। তবে অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার জন্মদিনের উদযাপন সংক্রান্ত কোনো আয়োজন ছিল না।

অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল জয়ী। দারিদ্র্য দূরীকরণে জামানতবিহীন ক্ষুদ্র ঋণের ব্যাংকিং তাঁকে দুনিয়াজুড়ে খ্যাতি দিয়েছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকও নোবেল জয়ী।

২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরানো হয়। আওয়ামী লীগের শাসনামলে সরকারপ্রধানের তির্যক সমালোচনা এবং মামলায় জর্জরিত ছিলেন অধ্যাপক ইউনূস। তাঁকে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ঢাকার শ্রম আদালত। 
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের অনুরোধে ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন অধ্যাপক ইউনূস। ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা, বিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের কাজ করছে তাঁর সরকার। সংবিধান, নির্বাচন, জনপ্রশাসনসহ নানা খাতে সংস্কারের চেষ্টা করছে।

অতীতে সরকারপ্রধানদের জন্মদিন ঘটা করে উদযাপন হতো। রাজনৈতিকভাবেও পালিত হতো। সামাজিক মাধ্যমে শুভেচ্ছা উদযাপনের ঢল ছিল। বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবীরা প্রধানমন্ত্রীর বন্দনা লিখতেন। রাজনীতিক, ব্যবসায়ীরা ছাড়াও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারপ্রধানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করত। দায়িত্ব নেওয়ার পর ড. ইউনূসের ছবি ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন প্রকাশে নিষেধ করে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও লোকচক্ষুর আড়ালে রয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড ইউন স ইউন স র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দেশবাসীকে ধৈর্য, সতর্কতা ও ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জামায়াত আমিরের

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলায় তাকে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। 

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে এ রায় ঘোষণা করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে দেশবাসীকে ধৈর্য, সতর্কতা ও ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ আজ এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। নানা রাজনৈতিক উত্তাপ, সামাজিক অস্থিরতা ও দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তার মাঝে আমাদের জন্য জরুরি হলো—ন্যায়বিচার, সত্য এবং জনগণের অধিকারকে সবচেয়ে উঁচু আসনে প্রতিষ্ঠা করা।

আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একটি দেশ তখনই সত্যিকার অর্থে অগ্রসর হয়, যখন সেখানে বৈধতা, ন্যায়, স্বচ্ছতা এবং জনগণের মতামত সর্বাধিক মর্যাদা পায়। ব্যক্তিনির্ভর রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে, নীতিনির্ভর রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করাই আজ সময়ের দাবি।

এই সংকটময় সময়ে আমি আবারও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই—আমাদের সংগ্রাম কারো বিরুদ্ধে নয়; আমাদের সংগ্রাম ন্যায়, অধিকার, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার পক্ষে। আমরা চাই এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে সব নাগরিক নিরাপদে মত প্রকাশ করতে পারে, যেখানে বিচার হবে নিরপেক্ষ, এবং যেখানে পরিবর্তন আসবে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে।

আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—ধৈর্য, সতর্কতা ও ঐক্য বজায় রাখুন। আমাদের লক্ষ্য হোক শান্তি, ন্যায় ও জাতীয় পুনর্গঠন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের দেশকে সত্য, ন্যায় ও কল্যাণের পথে পরিচালিত করুন।”

আজ একই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ