এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ রবিবারও চলবে
Published: 28th, June 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডাকে শনিবার (২৮ জুন) থেকে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি। রবিবারও (২৯ জুন) চলবে শাটডাউন ও মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি। আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে বলা হয়েছে।
শনিবার (২৮ জুন) আড়াইটায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি জানিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। তবে, আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই শাটডাউন কর্মসূচির বাইরে থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার।
আরো পড়ুন:
এনবিআরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’: ব্যবসায়ীদের ৫ পরামর্শ
এনবিআরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা
তিনি বলেন, “এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে দায়িত্বে রেখে গত ২৫ মে সরকার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির আলোকে রাজস্ব সংস্কার সম্ভব নয়। স্পষ্টতই তিনি ফ্যাসিবাদের দোসর একটি বিশেষ গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নে প্রতিভূ হিসেবে কাজ করছেন।”
দুপুরের সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার অভিযোগ করে বলেন, “পলাতক আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী যে ৪৪ আমলার (যার ৬ জনকে ইতোমধ্যে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা হয়েছে) তালিকা করা হয়েছে, তার মধ্যে এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যান ৩ নম্বরে আছেন। সংস্কার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে তিনি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা করবেন, এটাই স্বাভাবিক।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২১ ও ২২ জুন একাধিক আদেশের মাধ্যমে রাজস্ব সংস্কার কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলকভাবে বদলি করা হয়েছে। কর্মসূচিতে সম্মুখসারি থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, এমন পাঁচ আয়কর কর্মকর্তাকে ঢাকার বাইরে অপেক্ষাকৃত কম রাজস্ব সম্ভাবনাময় দপ্তরে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। এমনকি, আদেশে প্রাপ্য যোগদানকাল না দিয়েই পরবর্তী কর্মদিবসে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগদান করতে বলা হয়েছে। এটি চাকরিরবিধির সম্পূর্ণ পরিপন্থী ও অবৈধ।
হাছান মুহম্মদের অভিযোগ, এই অবৈধ আদেশের মাধ্যমে এনবিআর চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত জিঘাংসা চরিতার্থ করছেন। তার এহেন কর্মকাণ্ড দুরভিসন্ধিমূলক।তিনি নিপীড়নমূলক বদলিসহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের পরিবেশ বিনষ্ট করছেন। এই পরিস্থিতিতে কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আন্দোলনরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের দেশের অর্থনীতির স্বার্থে কলম বিরতি, ‘কমপ্লিট শাটডাউনে’র মতো কর্মসূচি প্রত্যাহার করে পূর্বশর্ত ছাড়া অনতিবিলম্বে কাজে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীতে শীর্ষস্থানীয় ১৩ ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে যৌথভাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন
তারা বলছেন, রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের অপসারণ কোনো মতেই কাম্য নয়। একই সঙ্গে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ ন্যায়সঙ্গত সুরক্ষা ও দেশের অর্থনীতি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ব্যবসায়ীরা। দেশের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংগঠনগুলোর উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্তমান অচলাবস্থা পরিস্থিতি এবং রপ্তানিমুখী শিল্পসহ জাতীয় অর্থনীতিতে এর প্রভাব সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। বাংলাদেশ চেম্বার অফ ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) প্রেসিডেন্ট আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ) সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘এনবিআরের চেয়ারম্যানের অপসারণ কোনো মতেই কাম্য নয়। এতে কোনো প্রকার সফলতা নিয়ে আসবে বলে আমরা মনে করি না। তাই, দেশ ও ব্যবসার স্বার্থে আলোচনার টেবিলে বসতে হবে। আন্দোলনকারীসহ সব পক্ষের আলোচনায় বিদ্যমান সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে।’
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এনব আর কর মকর ত ব যবস য ন ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পুতিনকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় পুতিনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়সংগত। তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য কোনো দেশ নয়।
২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, ওই সংবিধির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কখনো ওই চুক্তিকে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করার জন্য অনুসমর্থনের জন্য পদক্ষেপ নেয়নি।
বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরের দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটান। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।
সে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা আমেরিকার মাটিতে নেই।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে আইসিসির প্রতি বৈরিতা করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত এই আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন অভিযোগের তদন্ত করায় আইসিসির ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
আইসিসির এখতিয়ারের এই ঘাটতিই পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আজকের বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হতে পারে।
অবশ্য আইসিসির স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়ায় ২০২৩ সালের আগস্টে সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অনুরোধ করা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটি। সে জন্য মঙ্গোলিয়াকে কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয়নি।
শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন কেবল ততটাই কার্যকর হয়, যতটা দেশগুলোর সরকার এবং তাদের নেতারা কার্যকর করতে চান। আর এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং এই সাক্ষাৎ তাঁর পছন্দ মতো করতে তাঁকে আটকানোর মতো কিছুই নেই।