যেসব রাজনৈতিক দল টাইমলাইন দিয়ে ভোটের দাবি জানাচ্ছে, তাদের একইভাবে টাইমলাইন দিয়ে বিচার ও সংস্কারের দাবি জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগারিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

আজ শনিবার বিকেলে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ইউছুফপুর আইডিয়াল স্কুলের মাঠে এনসিপি আয়োজিত পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘দুর্নীতিমুক্ত দেবীদ্বার, বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা, অর্থনৈতিক অগ্রসরতা, কৃষিতে স্বয়ংসম্পন্ন, শিল্পায়ন ও বাণিজ্যে উন্নয়ন এবং সামাজিক সুবন্দোবস্ত আইনের শাসন গড়ার লক্ষ্যে’ স্থানীয় ইউছুফপুর ইউনিয়ন এনসিপি এ সভার আয়োজন করে।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘কেউ আমার দিকে পাথর ছুড়ে মারলে, আমি তাঁর দিকে ফুল ছুড়ে নিজের বুকে টেনে নেব। কারণ, আমি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে অনেকেই আমার পোস্টার ছিঁড়েছেন। একটা কথা মনে রাখবেন, আল্লাহ যাঁকে সম্মান দেন, ওপরে ওঠান, তাঁকে কেউ টেনে ধরে রাখতে পারে না। আমাদের প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে দূরে সরে আসতে হবে। প্রতিহিংসার রাজনীতি, সহিংসতার রাজনীতি কখনো ভালো কিছু করে না। আমি দেবীদ্বারে ভেসে আসি নাই, দেবীদ্বারে আমার জন্ম। আমি দেবীদ্বারের সন্তান। তাই আমার সঙ্গে প্রতিহিংসার রাজনীতি করবেন না।’

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের আগে আমরা দেখেছি, মাহফিল থেকে হুজুরদের দাড়ি টেনে টেনে নামিয়ে দেওয়া হতো, মাইক বন্ধ করে দেওয়া হতো। আপনারা দেখেছেন এক, দেড় শ কোটি টাকা খরচ করে এমপি হয়েছেন অনেকে। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে যে ছেলেরা রাস্তায় বুকের তাজা রক্ত দিয়েছে, তারা এমপি হতে চায় নাই, ক্ষমতা চায় নাই। তারা দেশের সংস্কার চেয়েছিল। ওরা চেয়েছিল, দেশে বাক্‌স্বাধীনতা থাকবে, ভোটাধিকার থাকবে এবং খুনিদের বিচার হবে। কিন্তু আপনারা বিচার ও সংস্কার বাদ দিয়ে টাইমলাইন দিয়ে ভোটের দাবি জানাচ্ছেন।’

দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আপনারা যেভাবে টাইমলাইন করে ভোটের দাবি জানাচ্ছেন, ঠিক সেভাবে টাইমলাইন করে ভোটের দাবির সঙ্গে বিচার ও সংস্কারের দাবিও করুন। ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন চাচ্ছেন, ঠিক একইভাবে বিচার ও সংস্কারের দাবি জানান।’

পরিচিতি সভার আয়োজক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নোমান সরকারের সভাপতিত্বে ও মো.

মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা এনসিপির প্রধান তত্ত্বাবধায়ক জামাল মোহাম্মদ কবীর, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক নাজমুল হাসান, স্থানীয় এনসিপির নেতা শামীম কাউছার, মো. লতিফ মিয়া, পদ্মা গ্রুপের হেড অব অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ট্যাক্সেসন মো. কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র র জন ত এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

দেশবাসীকে ধৈর্য, সতর্কতা ও ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জামায়াত আমিরের

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলায় তাকে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। 

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে এ রায় ঘোষণা করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে দেশবাসীকে ধৈর্য, সতর্কতা ও ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ আজ এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। নানা রাজনৈতিক উত্তাপ, সামাজিক অস্থিরতা ও দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তার মাঝে আমাদের জন্য জরুরি হলো—ন্যায়বিচার, সত্য এবং জনগণের অধিকারকে সবচেয়ে উঁচু আসনে প্রতিষ্ঠা করা।

আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একটি দেশ তখনই সত্যিকার অর্থে অগ্রসর হয়, যখন সেখানে বৈধতা, ন্যায়, স্বচ্ছতা এবং জনগণের মতামত সর্বাধিক মর্যাদা পায়। ব্যক্তিনির্ভর রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে, নীতিনির্ভর রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করাই আজ সময়ের দাবি।

এই সংকটময় সময়ে আমি আবারও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই—আমাদের সংগ্রাম কারো বিরুদ্ধে নয়; আমাদের সংগ্রাম ন্যায়, অধিকার, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার পক্ষে। আমরা চাই এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে সব নাগরিক নিরাপদে মত প্রকাশ করতে পারে, যেখানে বিচার হবে নিরপেক্ষ, এবং যেখানে পরিবর্তন আসবে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে।

আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—ধৈর্য, সতর্কতা ও ঐক্য বজায় রাখুন। আমাদের লক্ষ্য হোক শান্তি, ন্যায় ও জাতীয় পুনর্গঠন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের দেশকে সত্য, ন্যায় ও কল্যাণের পথে পরিচালিত করুন।”

আজ একই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ