ভোটের দাবির মতো সংস্কার ও বিচারের দাবিও টাইমলাইন ধরে করতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। শনিবার কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নে এনসিপি আয়োজিত এক পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

হাসনাত বলেন, ‘আপনারা যেভাবে ভোটের জন্য ফেব্রুয়ারি সময় নির্ধারণ করছেন, সেভাবেই বিচার ও সংস্কারের টাইমলাইন ঠিক করুন। তখন আমি আপনাদের পাশে থাকব।’ তিনি বলেন, শহীদরা ক্ষমতার জন্য নয়, দেশের সংস্কারের জন্য জীবন দিয়েছেন। তারা চেয়েছেন আলেম-ওলামাদের যেন অপমান না করা হয়, বাকস্বাধীনতা যেন বজায় থাকে এবং কোটি টাকায় যেন আর কেউ ক্ষমতা কিনতে না পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষমতা এক দিনের জন্য এলেও সেটা আমানত হিসেবে বিবেচনা করুন। অতীতে আমরা আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারিনি।’ এখনও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো, মিডিয়া ও বিচার বিভাগ আওয়ামী লীগমুক্ত হয়নি বলেও দাবি করেন হাসনাত।

আওয়ামী লীগের দায় স্বীকার না করা পর্যন্ত তাদের সঙ্গে ‘রিকনসিলিয়েশনের’ প্রশ্নই ওঠে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘আপনারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঠিক আছে, তবে তার পাশাপাশি বিচার বিভাগ ও মিডিয়াকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করুন।’

প্রতিহিংসার রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করে হাসনাত বলেন, ‘আপনি আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেললেও আল্লাহ যাকে সম্মান দেন, তা কেউ ছিনিয়ে নিতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজনীতি শত্রু বানানোর নয়, শত্রুকে বন্ধু বানানোর চর্চা। আপনি যদি ভালো কিছু করেন, আমি পাশে থাকব। আমিও চাই, ভালো কিছু করলে আপনারা সহযোগিতা করুন।’

মাহমুদুল হাসান ও মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা নাগরিক পার্টির প্রধান তত্ত্বাবধায়ক জামাল মোহাম্মদ কবীর, যুবশক্তি কেন্দ্রীয় সংগঠক নাজমুল হাসান নাহিদ, শামীম কাওসার প্রমুখ। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

গাজা নগরীর পথে ইসরায়েলি ট্যাংক, পালাচ্ছেন বাসিন্দারা

ফিলিস্তিনের গাজায় অভিযানের পরিসর আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এবার গাজা নগরী দখলে নিতে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এই নগরীর ১০ লাখ বাসিন্দার জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। ইতিমধ্যে গাজা নগরীর পূর্বাঞ্চল থেকে বাসিন্দারা বাড়িঘর ছাড়তে শুরু করেছেন। বিমান হামলার শব্দ শোনা যাচ্ছে, তাল আল-হাওয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে এগিয়ে আসছে ট্যাংক।

এদিকে ইসরায়েলের হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৩ জন নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার জানিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ত্রাণ নিতে যাওয়া ২১ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিও রয়েছেন।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বুধবার বলেছে, তারা গাজা উপত্যকায় নতুন অভিযানের রূপরেখা অনুমোদন দিয়েছে। গাজার সবচেয়ে বড় নগরী দখলে নিতে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার আহ্বান জানানোর কয়েক দিন পর সামরিক বাহিনী নতুন এ অভিযান অনুমোদন করল।

সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর আভিযানিক পরিকল্পনার মূল রূপরেখা অনুমোদন দিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আইয়াল জামির।

কবে নাগাদ ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরীতে প্রবেশ করবেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা জানায়নি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকার। তবে গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের মহাপরিচালক ইসমাইল আল-ছাওয়াবতা বুধবার বলেন, গাজা নগরীতে আগ্রাসী অনুপ্রবেশ অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।

২২ মাস ধরে গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে সেখানকার বেশির ভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজার ২২ লাখ বাসিন্দার বেশির ভাগই দফায় দফায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছেন গাজা নগরীতে।

স্থল অভিযানের বিষয়ে গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, এসব হামলা পোড়া মাটি নীতি এবং বেসামরিক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংসের মাধ্যমে নতুন পরিস্থিতি তৈরির মারাত্মক উসকানিরই অংশ।

গাজা নগরীর তাল আল-হাওয়া এলাকার বাসিন্দা সাবাহ ফাতোম (৫১) ওই এলাকায় ব্যাপক বিস্ফোরণ শুনতে পাওয়ার কথা টেলিফোনে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান। এই নারী বলেন, অনেক বিমান হামলার শব্দ শোনা যাচ্ছে। তাল আল-হাওয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে ট্যাংক এগিয়ে আসছে। আকাশে ড্রোন উড়ছে। বহু মানুষ বাড়িঘর ও তাঁবু ছেড়ে শহরের পশ্চিম দিকে ছুটছেন।

এদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে বুধবার জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ত্রাণ নিতে যাওয়া ২১ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিও রয়েছেন। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় আহত হয়েছেন ৪৩৭ জন।

ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খাবার না পেয়ে একই সময়ে অনাহারে মারা গেছেন আট ফিলিস্তিনি, তাঁদের মধ্যে তিনজন শিশু। এ নিয়ে অনাহারে ২৩৫ ফিলিস্তিনি মারা গেলেন, যাঁদের মধ্যে ১০৬টি শিশু। এ ছাড়া ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৬১ হাজার ৭২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় লাখের বেশি।

আরও পড়ুনইসরায়েলি সেনাপ্রধানই কি নেতানিয়াহুর লাগাম টেনে ধরবেন৭ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ