জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় দিনের মতো আজ রোববারও চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি’। রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার রোধ ও চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে  আন্দোলনকারীরা আগারগাঁওয়ের প্রধান কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নিয়েছেন। তবে এতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রম।

গতকাল শনিবারের মতো আজও বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, কোস্টকার্ড, আনসারসহ সতর্ক অবস্থানে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে তাদের উপস্থিতি গতকালের তুলনায় কিছুটা কম।

রাজস্ব ভবনের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশে গতকালের তুলনায় আজ কিছুটা শিথিলতা রয়েছে। পরিচয়পত্র দেখালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।

আজ সকাল থেকে আন্দোলনকারীরা জড়ো হতে শুরু করলেও সকাল ১১টা নাগাদ রাজস্ব ভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের উপস্থিতি গতকালের তুলনায় কিছুটা কম দেখা গেছে। পরিষদের সদস্যরা বলেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার অন্যান্য দপ্তর এবং দেশের বিভিন্ন জেলার কর্মকর্তারা এসে আন্দোলনে যোগ দেবেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক কর্মকর্তারা সমকালকে বলেন, আজ সকালে আন্দোলনে লোকজন কম হলেও বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কর্মকর্তারা আন্দোলনে যোগ দেবেন। গতকালও দেশের বিভিন্ন শুল্ক-কর কার্যালয় থেকে মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ফলে চট্টগ্রাম বন্দর, বেনাপোল বন্দর, ঢাকা কাস্টম হাউসসহ দেশের সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনে কাজ হয়নি। ফলে এসব স্টেশন থেকে শুল্ক-কর আদায় কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।

গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ জানিয়েছেন, তারা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত। তবে তাদের অভিযোগ, বর্তমান চেয়ারম্যান রাজস্ব খাতের চলমান সংস্কারে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপেক্ষা করছেন। আন্দোলনকারীদের দমন-নিপীড়ন করছেন। তাই আলোচনার আগে চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। 

এদিকে আন্দোলনের কারণে বন্ধ রয়েছে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। স্থবির হয়ে পড়েছে বন্দরের কনটেইনার ডেলিভারি, মূল্যায়ন ও কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স। এতে ব্যাহত হচ্ছে রাজস্ব আদায় এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম।

গতকাল দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে আন্দোলনের কারণে প্রতিদিন শুধু পোশাক খাতেই ক্ষতি হচ্ছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। তারা ব্যবসা ও অর্থনীতির স্বার্থে দ্রুত এই পরিস্থিতির নিরসন করতে সরকার ও আন্দোলনকারীদের আহ্বান জানান।

গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্বনীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে বিভক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর পর থেকে এনবিআর বিলুপ্তি রোধসহ কয়েকটি দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন করছেন। গত ২৫ মে অর্থ মন্ত্রণালয় ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশটি সংশোধন করার আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। এর পর ২২ জুন থেকে চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গতকাল সারাদেশে এনবিআরের কর, মূসক ও শুল্ক দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কমপ্লিট শাটডাউন এবং মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি পালন করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনব আর র কর মকর ত র কর ম গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইবিতে অভয়ারণ্যের মেহেদি উৎসব

হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফেরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মেহেদি ও নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় তারা এ আয়োজন করে। 

আরো পড়ুন:

খাগড়াছড়িতে চলছে রাস উৎসব ও মেলা

পুণ্যস্নান মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় শেষ হলো রাস উৎসব, মেলা চলবে ৫ দিন

সরেজমিনে দেখা যায়, মেহেদি ও নবান্ন উৎসব ঘিরে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি। রঙিন কাগজের সাজে পুরো স্থানজুড়ে তৈরি হয়েছিল উৎসবের আমেজ। পরিবেশবান্ধব বার্তা বহনকারী ঝুলন্ত ডেকোরেশন, প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার স্টল এবং সাহিত্য–সংস্কৃতির বিভিন্ন উপস্থাপনা দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।

শিক্ষার্থীরা জানান, অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়। প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার হার কমে গেলেও এ আয়োজন সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।

ফাতিমা খাতুন নামে ইবির এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনগুলোর মধ্যে অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রম। আজ মেহেদি উৎসবে এসে আমার অনেক ভালো লাগছে। আজকাল প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার সংস্কৃতি অনেকটাই কমে গেছে। তারা সেই সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাছাড়া নবান্ন উৎসব যেখানে একদম বিলীনপ্রায়, সেখানে তারা এটারও আয়োজন করেছে। আশা করছি, এ রকম সুন্দর আয়োজন চলমান থাকবে।”

সংগঠনটির সভাপতি নাইমুল ফারাবী বলেন, “আমরা এবার দ্বিতীয়বারের মতো মেহেদি উৎসবের আয়োজন করছি। একসময় মেয়েদের হাত সর্বদা মেহেদীর রঙে রাঙা থাকত। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে এ চর্চা এখন কমে গেছে। এটাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যই আজকের এই আয়োজন।”

তিনি বলেন, “আজ যে মেহেদি দেওয়া হচ্ছে, সেটা আমাদের সংগঠনের রোপণ করা গাছের পাতা থেকে তৈরি। এর মাধ্যমে আমরা শুদ্ধতা ছাড়িয়ে দিতে চাই।”

তিনি আরো বলেন, “মেহেদি উৎসবের পাশাপাশি আমরা এবার প্রথমবারের মতো নবান্ন উৎসব আয়োজন করেছি। এর মাধ্যমে আমার বাংলার সংস্কৃতিকে পূনর্জ্জীবিত করতে চাচ্ছি। বাংলার বহুল প্রচলিত সংস্কৃতিকে যাতে করে শিক্ষার্থীরা পুনরায় ধারণ করতে পারে, সেজন্য আমাদের এই আয়োজন।”

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ