এনবিআরের অচলাবস্থা নিরসনে বিকেলে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবেন আন্দোলনকারীরা
Published: 29th, June 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অচলাবস্থা নিরসনে আজ রোববার বিকেল চারটায় অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবেন এনবিআরের আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ বৈঠক হবে।
এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে গতকালের মতো আজও কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন এনবিআরের আন্দোলনকারীরা। সকাল থেকে আগারগাঁও এনবিআর ভবনের সামনে তাঁরা অবস্থান নেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ আন্দোলন হচ্ছে।
জানা গেছে, অর্থ উপদেষ্টার বৈঠকের জন্য আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট ক্যাডারের ২০ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের সদস্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দেবেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার।
দায়িত্বশীল সূত্রে আরও জানা গেছে, ব্যবসায়ী নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সমঝোতার চেষ্টা করছেন। এ জন্য আজ দুপুরে একটি ব্যবসায়ী সংগঠনের চেম্বার কার্যালয়ে বৈঠক হতে যাচ্ছে। ওই বৈঠকের পর অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক হবে।
এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ করে গত ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। উদ্দেশ্য হলো, করহার নির্ধারণের মতো নীতিগত কাজ এবং কর আদায়ের কাজ পৃথক রাখা। অর্থনীতিবিদ, গবেষক, ব্যবসায়ীরাও দীর্ঘদিন রাজস্ব খাত সংস্কারের কথা বলে আসছেন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের একটি শর্ত ছিল রাজস্বনীতি ও আদায়ের কাজে আলাদা সংস্থা করা।
এনবিআরের কর্মকর্তারা দুটি বিভাগ করা নিয়ে তেমন আপত্তি করছেন না। তবে তাঁরা মূলত ওই দুই বিভাগে পদায়নের ক্ষেত্রে রাজস্ব খাতের কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার চাইছেন। সরকার উপযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়োগের কথা বলছে, যার মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা যায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
নরসিংদীতে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। নরসিংদী শহরের দত্তপাড়া পুরাতন লঞ্চঘাট এলাকায় গতকাল শনিবার রাতে স্বামী শংকর চন্দ্র দাসের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা যায়, প্রায় ৭ বছর আগে নরসিংদী শহরের ঘোড়াদিয়া-সংগীতা এলাকার জন্টু চন্দ্র দাসের মেয়ে স্মৃতি রাণী দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় দত্তপাড়া এলাকার যোগেশ চন্দ্র দাসের ছেলে শংকর চন্দ্র দাসের। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে শংকরকে নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা, স্বর্ণলংকারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দেয় কনেপক্ষ। এরপরও শংকর প্রায়ই তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে আরও টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে স্মৃতির পরিবার মাঝে মধ্যে টাকা দিতো। এতেও তার মন ভরেনি। এক পর্যায়ে আরও দুই লাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে এনে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এতে স্মৃতি রাণী দাস আর কোনো টাকা এনে দিতে পারবেন না বলে জানালে নির্যাতন চালায় শংকর চন্দ্র দাস। এই নির্যাতনের কথা স্মৃতি রাণী তার মাকে মোবাইল ফোন করে জানান। পরে মেয়ের জামাই শংকরকে জিজ্ঞেস করতে বার বার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি। শনিবার রাতেও স্মৃতি রাণীকে মারধর করেন স্বামী শংকর। এতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ওই গৃহবধূ। পরে বাড়ির লোকজন স্মৃতি রাণীকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর শংকর রাত ১০টার দিকে ফোন করে তার শাশুড়িকে বলেন, ‘আপনার মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে।’
খবর পেয়ে স্মৃতি রাণী দাসের পরিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখেন তাদের মেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ সময় স্বামী শংকর চন্দ্র দাস হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে স্মৃতি রাণার পক্ষের লোকেরা ধরে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ তাকে রাতেই থানায় নিয়ে যায়।
আজ রোববার নরসিংদী জেলা হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের পর স্মৃতি রাণী দাসের লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নরসিংদী সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রোমান সাদেকিন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী শংকর চন্দ্র দাসকে আটক করা হয়েছে। থানায় মামলা হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।