ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করায় আগেও নানা প্রশ্নের মুখে পড়েছে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা। এবার প্রতিষ্ঠানটির নতুন একটি সুবিধা ঘিরে ব্যবহারকারীদের মধ্যে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা বিঘ্নের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ‘ক্লাউড প্রসেসিং’ নামের এই সুবিধা চালু করলে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের স্মার্টফোনে থাকা সব ছবি স্ক্যানের পর মেটার ক্লাউড সার্ভারে আপলোড করে মেটা এআই।

সম্প্রতি একাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেছেন, ফেসবুকে স্টোরি আপলোড করতে গিয়ে তাঁরা একটি পপআপ বার্তা দেখতে পান। সেখানে ক্লাউড প্রসেসিং চালুর অনুরোধ জানানো হয়। এতে সম্মতি দিলে ব্যবহারকারীদের ফোনে থাকা ছবি স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ক্যান করে মেটার ক্লাউডে সংরক্ষণ হয়ে যায়।

মেটার তথ্যমতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ক্লাউড প্রসেসিং সুবিধাটি ব্যবহারকারীদের সৃজনশীল পরামর্শ পেতে সাহায্য করবে। সুবিধাটির মাধ্যমে সহজেই ছবি দিয়ে স্বয়ংক্রিয় কোলাজ তৈরির পাশাপাশি জন্মদিন বা অন্য কোনো উপলক্ষে থিমভিত্তিক সাজেশনে এআইভিত্তিক ফিল্টার ব্যবহার করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, স্মার্টফোনে থাকা সব ছবি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি করা হলে সেটি ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তার দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

মেটা জানিয়েছে, ক্লাউড প্রসেসিং সুবিধাটি ব্যবহারকারীরা চাইলে যেকোনো সময় বন্ধ করতে পারবেন। সুবিধাটি বন্ধের পর ক্লাউডে আপলোড হওয়া ছবিগুলো ৩০ দিনের মধ্যে মুছে ফেলা হবে। কিন্তু প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, ক্লাউড প্রসেসিং সুবিধা যতটা সহায়ক হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, ততটাই মারাত্মক হতে পারে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষার দিক থেকে। কারণ, অনেক সময় ব্যবহারকারীরা না বুঝেই এতে সম্মতি জানিয়ে দিচ্ছেন।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র ফ সব ক

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ