চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাটে বালুভর্তি একটি ট্রাক ফেরির পন্টুনে ওঠার সময় আটকে যায়। এরপর অনেক চেষ্টা করেও ফেরিতে তুলতে না পারায় শেষ পর্যন্ত জোয়ারের পানিতে ট্রাকটি ডুবে যায়।

আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে বাঁশবাড়িয়া-গুপ্তছড়া ফেরিঘাটের বাঁশবাড়িয়া অংশে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার আট ঘণ্টা পর উদ্ধারকারী ক্রেন এসে ট্রাকটি উদ্ধার করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ট্রাক ইয়ার্ডে নিয়ে আসে।

ট্রাকটি আটকে যাওয়ায় আর কোনো গাড়ি ফেরিতে তোলা যায়নি। শেষ পর্যন্ত অন্য গাড়ি না তুলেই ফেরিটি সন্দ্বীপের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ঘটনার পর ট্রাক ডুবে যাওয়ার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, ট্রাকটি জোয়ার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডুবতে থাকে। সাগর উত্তাল থাকায় প্রবল ঢেউয়ে ট্রাকের কেবিনের দরজা একবার খোলে আবার বন্ধ হয়। জোয়ারের ঢেউ ট্রাকের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল।

বিআইডব্লিউটিএ ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্র জানায়, আজ সকাল ১০টার দিকে অন্যান্য দিনের মতো ফেরিতে বিভিন্ন যানবাহন উঠছিল। ফেরিতে গাড়ি ওঠার সময় প্রথমে অ্যাপ্রোচ সড়ক থেকে র‍্যাম্প বেয়ে গাড়িগুলোকে পন্টুনে উঠতে হয়। এরপর পন্টুন থেকে ফেরিতে যানবাহন তোলা হয়। এভাবে কয়েকটি যানবাহন ফেরিতে ওঠানোর পর বালুবোঝাই ট্রাকটি প্রথমে অ্যাপ্রোচ সড়ক থেকে পন্টুনের র‍্যাম্পে ওঠার চেষ্টা করে। গাড়িটির সামনের চাকা দুটি র‌্যাম্পে ওঠার পর পেছনের চাকাগুলো অ্যাপ্রোচ সড়কের নরম মাটিতে শক্তভাবে আটকে যায়। এরপর চালক অনেক চেষ্টা করেও গাড়িটি সামনে কিংবা পেছনে সরাতে পারেননি। ফলে ট্রাকটির পেছনে অন্য যেসব যানবাহন অপেক্ষারত ছিল, সেগুলো আর ফেরিতে উঠতে পারেনি। এরপর ফেরি সন্দ্বীপের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

বিআইডব্লিউটিএর চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো.

কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, চালক অনেক চেষ্টা করেও আটকে যাওয়া ট্রাকটি সরাতে পারেননি। ফলে ভাটার পর জোয়ার এলেও গাড়িটি একই অবস্থায় থেকে যায়। ঘাটে উদ্ধারকারী ক্রেন না থাকায় গাড়িটি শেষ পর্যন্ত জোয়ারের পানিতে ডুবে যায়।

মো. কামরুজ্জামান আরও বলেন, ফেরিঘাটে যানবাহন আটকে গেলে সেগুলো বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ ক্রেন দিয়ে সরিয়ে নেয়। গাড়িটি আটকে যাওয়ার পর তিনি নিজেই বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন।

বিআইডব্লিউটিসির চট্টগ্রামের উপমহাব্যবস্থাপক ভারপ্রাপ্ত আবদুল নূর তুষার প্রথম আলোকে বলেন, গাড়িটি আটকে যাওয়ার পর দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁদের সহকারী ব্যবস্থাপক মোশারফ হোসেনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কতক্ষণে তোলা হয়েছে, তা তিনি জানাতে পারেননি।

তবে এ বিষয়ে জানতে সহকারী ব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।

রাতে বিআইডব্লিউটিসির ঘাট শুল্ক আদায়কারী এনামুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে একটি উদ্ধারকারী ক্রেন এসে ট্রাকটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। তবে ট্রাকের ভেতরের সব বালু জোয়ারের পানিতে ধুয়ে গেছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ মনু মিয়া আর নেই

কারো মৃত্যু সংবাদ পেলেই তড়িঘড়ি করে খুন্তি-কোদাল, দা, চাকু, স্কেল আর করাতসহ কবর খোঁড়ার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘোড়ায় চড়ে ছুটে যেতেন ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ মনু মিয়া।

শনিবার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলার ইটনা উপজেলার জয়সিদ্দি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

মনু মিয়ার চাচাতো ভাই আবদুর রউফ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন মনু মিয়া। গত ১৪মে তাকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই এক রকম মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসা হয়েছিল তার। তারপর বেশ কিছুদিন চিকিৎসার পর নিজ গ্রামে ফেরেন। এরপর ভালই ছিল, হঠাৎ তিনি আবারো অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন জানা যায় তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত। এরপর আজ সকালে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

মনু মিয়া কবর খোঁড়ার পর মৃত ব্যক্তির পরিবারের কারো কাছ থেকে কোন পারিশ্রমিক বা যাতায়াত খরচ নিতেন না। এমনকি খাবারের বেলায়ও ছিল তার একই নিয়ম। নিজের বাড়ি থেকে খেয়ে রওনা না হতে পারলে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়েও খেতেন নিজ খরচে।

মনু মিয়ার বাড়ি কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্দি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামে। তার জন্ম ১৯৫২ সালের ১৫ মার্চ। কবর খোঁড়ার কাজ শুরু করছিলেন ১৯৭২ সাল থেকে। এ পর্যন্ত ৩ হাজারেরও বেশি খবর খুঁড়েছেন তিনি। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মনু মিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেসময় মিঠামইন উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নের হাসিমপুর এলাকায় রাস্তার পাশে ডোবায় মনু মিয়ার ঘোড়াটির মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন।

ধারণা করা হয়, ঘোড়াটিকে বাড়ি থেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়। প্রচুর রক্তক্ষরণে মারা যায় ঘোড়াটি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনু মিয়ার শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে স্ত্রী ও স্বজনরা তার কাছে বিষয়টি গোপন রাখেন।

ঢাকা/রুমন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাহরাইনকে ‘সেভেনআপ’ বাংলাদেশের
  • নোয়াখালীতে অস্ত্রসহ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
  • ডাইনোসরের আগে পৃথিবীতে কাদের রাজত্ব ছিল, কী খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা
  • হারিয়ে যাওয়া ভাষা রক্ষায় এআই
  • নিউমুরিং টার্মিনাল বন্দরের সহায়তায় নৌবাহিনীর পরিচালনার ব্যাপারে আলোচনা
  • পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও গবেষক চাই, ভোটার নয়
  • ‘আরেকটু চিন্তা করতে পারত, দলটা তো আগে…’, নাজমুলকে নিয়ে বিসিবি সভাপতি
  • শান্তর অধিনায়কত্ব ছাড়া প্রসঙ্গে আমিনুল ইসলাম বললেন, ‘জেনে নেই’
  • ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ মনু মিয়া আর নেই