আসিফ মাহমুদের ব্যাগে ম্যাগাজিন নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 30th, June 2025 GMT
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্যানিংয়ের সময় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার ব্যাগে পাওয়া ম্যাগাজিন নিয়ে এবার কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, ‘‘অনেকে বলছেন তিনি (উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ) একে ৪৭-এর লাইসেন্স পেয়েছেন। এটা একে ৪৭ নয়, এটা তারই পিস্তলের একটি খালি ম্যাগাজিন ছিল। সেটি ভুলে রয়ে গিয়েছিল।’’
সোমবার (৩০ জুন) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদের ম্যাগাজিন পাওয়া অস্ত্রের লাইসেন্স আছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘‘এটি পিস্তলের খালি একটি ম্যাগাজিন ছিল। সেটি ভুলে রয়ে গিয়েছিল। এটা আসলে ভুলেই হয়েছে। অনেক সময় এমন হয় যে—আপনি একটা চশমা নিয়ে যাবেন কিন্তু চশমা না নিয়ে মোবাইল নিয়ে রওনা হয়ে গেছেন। এটা জাস্ট একটা ভুল। উনি যদি আগে জানতেন, তাহলে কোনো অবস্থাতেই এটা নিতেন না।’’
অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে ত্রিশ বছর হওয়া লাগে। কিন্তু উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বয়স ত্রিশ হয়নি। তাহলে উনি এটা কীভাবে পেলেন?— এমন প্রশ্নের উত্তরে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘‘আমি যেহেতু ওই আইনটা দেখিনি, সেহেতু এই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’’
বিমানবন্দরে দুই দফা স্ক্যানিং করার পরও ব্যাগে ম্যাগাজিন থাকার বিষয়টি ধরা পড়েনি। তৃতীয় দফায় গিয়ে পড়েছে। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘ধরেন আমার ভাই একজন নেতা। উনি যখন ঢুকেন, তখন অন্যদের থেকে একটু প্রিভিলেজ পান। এই প্রিভিলেজটা যেন কারো ক্ষেত্রে না হয়। সবার ক্ষেত্রে যেন আইন সমান হয়, সেটা বলা হয়েছে।’’
জুলাই অনুষ্ঠান নিয়ে থ্রেট নেই
আজ আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিশেষ মিটিং হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘‘পহেলা জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই সময়ে বিভিন্ন দল, সামাজিক সংগঠনের অনেক অনুষ্ঠান থাকবে। এসব অনুষ্ঠান কীভাবে নির্বিঘ্নে হতে পারে, সেই বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। অনুষ্ঠানগুলো পুরো বাংলাদেশে হবে। এসব অনুষ্ঠান ঘিরে কোনো ধরনের হুমকি এখনো নেই।’’
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
শারদীয় দুর্গাপূজার সমাপ্তি উপলক্ষে প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নেওয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানিয়েছেন, বিসর্জনকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। শান্তিপূর্ণভাবে এই উৎসব শেষ করার জন্য পুলিশ, র্যাব, এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে।
আরো পড়ুন:
ছুটোছুটির মধ্যে কাটছে মিমের পূজা
বুড়িগঙ্গায় চলছে প্রতিমা বিসর্জন
পুলিশ জানায়, প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রা এবং বিসর্জন স্থানসমূহে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয়েছে কয়েক হাজার পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। শুধু ঢাকাতেই প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পুলিশ সদস্য এবং অতিরিক্ত আরো প্রায় ২ হাজার ৪০০ ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া র্যাবের ৯৪টি টহল টিম সাদা পোশাকে নিরাপত্তা তদারকিতে নিয়োজিত রয়েছে।
বিশেষ নজরদারি
প্রতিমা বিসর্জনের মূল ঘাটগুলো, যেমন—পলাশীর মোড়, রায়সাহেব বাজার ও ওয়াইজঘাট এলাকায় অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। বিসর্জন শোভাযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব ঘাটকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।
বিশেষ ইউনিট প্রস্তুত
যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোয়াত, বোম ডিসপোজালও কে-নাইন ইউনিটকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
নৌ-নিরাপত্তা:
নৌ-দুর্ঘটনা এড়াতে কোস্টগার্ড ও স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। সাঁতার না জানা ব্যক্তিদের নৌকায় উঠতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে এবং যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরার অনুরোধ করা হয়েছে। বিসর্জনস্থলে প্রশিক্ষিত ডাইভার (ডুবুরি দল) প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও সিটি স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্যদের সমন্বয়ে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো বন্ধে বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে। অধিকাংশ মণ্ডপের প্রতিমা ঢাকেশ্বরী মন্দিরে একত্রিত হয়ে সেখান থেকে শোভাযাত্রা সহকারে বিনা স্মৃতি স্নান ঘাট, ওয়াইজ ঘাট ও নবাববাড়ি ঘাটে বিসর্জনের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ:
শোভাযাত্রার পথ নির্বিঘ্ন রাখতে এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধান সড়কগুলোতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। শোভাযাত্রার সময় যান চলাচলের জন্য বিকল্প পথের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পূজা কমিটির প্রতি নির্দেশনা:
পূজামণ্ডপগুলোতে প্রবেশ ও প্রস্থান পথ পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, মণ্ডপে ব্যাগ, থলে বা পোঁটলা নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এছাড়া যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে। সব নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বিত ও কঠোর তৎপরতায় প্রতিমা বিসর্জন উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হবে বলে আশা করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
ঢাকা/এমআর/এসবি