গণঅভ্যুত্থানের অর্জন নষ্ট করা যাবে না: গণতন্ত্র মঞ্চ
Published: 30th, June 2025 GMT
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, শিক্ষার্থী-জনতার দীর্ঘ গণসংগ্রাম-গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা স্বৈরাচারকে হটিয়ে যে বাংলাদেশ পেয়েছি তার গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার পথ অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে। ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোটারীগত স্বার্থে কোনভাবেই গণঅভ্যুত্থানের অর্জন নষ্ট করা যাবে না। বিভক্তি বিভাজনের পাঁয়তারাকেও রুখে দিতে হবে।
সোমবার নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের পরিচালনা পরিষদের সভায় নেতারা এসব কথা বলেন। বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম অগ্রগতি, নির্বাচন প্রভৃতি বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
মঞ্চের নেতারা বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে সকলের মতামতের ভিত্তিতে গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কারের লক্ষ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় গণতন্ত্র মঞ্চ আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এই ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে এই উদ্যোগের সাথে থাকছি, সহায়তা করছি। আশা করি- এই জুলাইয়ে মধ্যেই ন্যূনতম ঐক্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ গ্রহণ করতে পারব, যা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে মাইলফলক হিসাবে ভূমিকা রাখবে।
কুমিল্লায় একজন নারীকে নির্যাতন ও তার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়াকে চরম অপরাধ ও চূড়ান্ত বিকৃতি হিসেবে উল্লেখ করেন তারা। এমন ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য ধর্ষক তার সহযোগীদের যথাযথ বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
জুলাই অভ্যুত্থান, অন্তর্বর্তী সরকার, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রযাত্রায় গণতন্ত্র মঞ্চের ত্যাগ, অবস্থান, প্রত্যাশা দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে, জুলাই-আগস্ট কর্মসূচি ঘোষণা করতে আগামী বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, সাকিব আনোয়ার, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গণঅভ য ত থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ: আগামী সপ্তাহে দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনায় বসবে ঐকমত্য কমিশন
জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনায় বসবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আলোচনার দিনক্ষণ আজ মঙ্গলবার ঠিক করা হতে পারে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া চূড়ান্ত করা হলেও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। এ কারণে আটকে আছে জুলাই সনদ।
বাস্তবায়নের উপায় ঠিক করতে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তিন দিন আলোচনা হলেও এখনো ঐকমত্য হয়নি। আপাতত আলোচনা মুলতবি রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা কমিশনকে ইতিমধ্যে বলেছেন, সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন টেকসই করতে হলে গণভোট বা গণপরিষদের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করা হবে সবচেয়ে ভালো বিকল্প।গতকাল সোমবার কমিশন সূত্র জানায়, আজ মঙ্গলবার কমিশনে নিজেদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করার কথা রয়েছে। সেখানে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হতে পারে। আগামী ৪ বা ৫ অক্টোবর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনা করার পরিকল্পনা আছে। কমিশনের লক্ষ্য হলো আর এক দিন আলোচনা করে বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করা। আগামী ১৫ অক্টোবর ঐকমত্য কমিশনের বর্ধিত মেয়াদ শেষ হবে। এর মধ্যেই কমিশন জুলাই জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করতে চায়।
আরও পড়ুনঐকমত্য কমিশন ব্যর্থ হলে, ব্যর্থতা সবার: আলী রীয়াজ১৫ জুলাই ২০২৫বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা অব্যাহত আছে। সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে সংবিধান আদেশ জারি ও পরবর্তী সময়ে এর ভিত্তিতে গণভোট, গণপরিষদ গঠন, সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়াসহ একাধিক বিকল্প পদ্ধতি আলোচনায় আছে। এগুলো নানাভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের পদ্ধতি জুলাই সনদের অংশ হবে না। এ বিষয়ে সরকারকে একাধিক সুপারিশ দেবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।বিশেষজ্ঞরা কমিশনকে ইতিমধ্যে বলেছেন, সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন টেকসই করতে হলে গণভোট বা গণপরিষদের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করা হবে সবচেয়ে ভালো বিকল্প।
সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের পদ্ধতি জুলাই সনদের অংশ হবে না। এ বিষয়ে সরকারকে একাধিক সুপারিশ দেবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আরও পড়ুনজুলাই সনদ কার্যকর হলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কার অধীনে২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা রয়েছে। বিএনপি আগামী সংসদের মাধ্যমে সংবিধান–সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের পক্ষে। এর বাইরে অন্য কোনোভাবে সংবিধান সংস্কার সম্ভব কি না, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়া যেতে পারে বলে মনে করে দলটি।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলনসহ আরও কোনো কোনো দল এ ধরনের সংবিধান সংস্কার সভা গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছে। এর বাইরে কিছু দল সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়ার পক্ষে।জামায়াতে ইসলামী চায় সংবিধান আদেশ জারি এবং গণভোটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন। আর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চায় গণপরিষদ। দলটি মনে করে, গণপরিষদ একই সঙ্গে নিয়মিত সংসদ হিসেবেও কাজ করতে পারে। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলনসহ আরও কোনো কোনো দল এ ধরনের সংবিধান সংস্কার সভা গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছে। এর বাইরে কিছু দল সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়ার পক্ষে।
জাতীয় ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার পরিকল্পনা রয়েছে। এর আগে ও পরে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কমিশনের আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হবে।