জুলাই আন্দোলন নিয়ে ছাত্রশিবিরের ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি
Published: 30th, June 2025 GMT
ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ১ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘জুলাই জাগরণ নব উদ্যমে বিনির্মাণ’ প্রতিপাদ্যে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। কর্মসূচিগুলো শিবিরের কেন্দ্র থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে ৩৬ দিনব্যাপী পালন করা হবে।
সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিবিরের এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় । এ সময় লিখিত বক্তব্যে কর্মসূচি ঘোষণা করেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।
শিবিরের ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, রিসার্চ কনফারেন্স, আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান; শহীদদের কবর জিয়ারত, শহীদ পরিবার ও আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়; শাখাভিত্তিক জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে ‘জুলাই দ্রোহ’ শিরোনামে বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন; সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক প্লেসে ‘জুলাই জাগরণ নব উদ্যমে বিনির্মাণ’ শীর্ষক আলোকচিত্র ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী এবং কালচারাল ফেস্ট আয়োজন; জুলাই গ্রাফিতি অঙ্কন; জুলাইয়ের গল্প ও স্মৃতি বলা, স্মৃতিলিখন, বক্তব্য, রচনা, বিতর্ক, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা প্রভৃতি আয়োজন।
আরো পড়ুন:
দাবি না মানলে এনবিআরের সব দপ্তর হবে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’
র্যাগিং বন্ধ ও নিরাপত্তার দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
এছাড়াও রয়েছে- শহীদদের নামে লাইব্রেরি/পাঠাগার প্রতিষ্ঠা; শহীদ পরিবার, আহত ও আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী গাজীদের নিয়ে ‘ত্যাগীদের চোখে আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও পডকাস্টের আয়োজন; জুলাইয়ের ওপর সাহিত্য সাময়িকী ও বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ; জুলাই স্মৃতি লিখন প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান ও জুলাই প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন ও প্রদর্শনী; ‘থিংক ব্যাংক টু থার্টি সিক্স জুলাই ’ শিরোনামে ৩৬ দিনব্যাপী অনলাইন ক্যাম্পেইন।
শিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, “শহীদদের নিয়ে যখন বিভিন্ন মহল দলীয়করণ ও ক্রেডিটের রাজনীতি করার চেষ্টা করছে, ঠিক তখন জুলাই স্পিরিট ধরে রাখতে ছাত্রশিবির সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে আজ পর্যন্ত ছাত্রশিবির ধারাবাহিকভাবে জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে নানাবিধ অর্থবহ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে।”
তিনি বলেন, “গায়েবানা জানাজা, কবর জিয়ারত, শহীদ পরিবারের খোঁজখবর, সহযোগিতা, ঈদ ও বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে শহীদ পরিবারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, ‘ফ্রেমবন্দি ৩৬ জুলাই’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, গণহত্যার বিচারের দাবিতে সপ্তাহব্যাপী আন্দোলন, জুলাই স্মৃতিলিখন প্রতিযোগিতাসহ ছাত্রশিবির ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “এরই ধারাবাহিকতায় জুলাইয়ের স্মৃতি ধারণ, গণহত্যার বিচার নিশ্চিতকরণ, জাতীয় ঐক্য সুসংহত করতে সততা ও দক্ষতায় প্রজন্ম গড়ার প্রতিজ্ঞায় ‘জুলাই জাগরণ নব উদ্যমে বিনির্মাণ’ এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ৩৬ দিনব্যাপী এই কর্মসূচি।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, শিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, অফিস সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বরিশালের প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের প্রতি অবিচার হয়েছে: বিসিবি সভাপতি
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম মনে করেন, বরিশালের প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের প্রতি অতীতে অবিচার করা হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে নিয়মিত লিগ না হওয়ায় এখানকার সম্ভাবনাময় বহু খেলোয়াড় হারিয়ে গেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। রোববার বরিশাল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিসিবি সভাপতি এ কথাগুলো বলেন।
গত ১০ বছরে বরিশালে এক থেকে দেড় হাজার ক্রিকেটার গড়ে উঠতে পারত উল্লেখ করে আমিনুল ইসলাম বলেন, অন্তত ১০০ জন জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করার মতো মানের হতো। অথচ স্থানীয় লিগ না হওয়ায় তাঁদের বিকাশের সুযোগ নষ্ট হয়েছে। এটা বরিশালের ক্রিকেটারদের প্রতি চরম অবিচার।
বিপিএলে বরিশালভিত্তিক দল ‘ফরচুন বরিশাল’ দুবার চ্যাম্পিয়ন হলেও এখন পর্যন্ত বরিশাল স্টেডিয়ামে কোনো বিপিএল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি। বিষয়টি দুঃখজনক বলে উল্লেখ করে বিসিবি সভাপতি বলেন, বরিশালে এখনো নিয়মিত ক্রিকেট কোচিং, আম্পায়ারিং বা কিউরেটর কোর্স হয় না। তবে বিসিবির একটি ছোট অফিস এখানে চালু হবে, যেখান থেকে এসব কার্যক্রম শুরু হবে।
আমিনুল ইসলাম জানান, বরিশাল স্টেডিয়ামের অসমাপ্ত উন্নয়নকাজ আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কাজ শেষ হলে বিসিবির পক্ষ থেকে আরও বড় পরিকল্পনা নেওয়া হবে। ক্রিকেটার তৈরি ও খুঁজে বের করার বিষয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমরা কানেক্ট অ্যান্ড রো নামের একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছি, যার মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিভাবান ক্রিকেটার খুঁজে বের করা হবে। প্রতিটি উপজেলার খেলোয়াড়দের তথ্য বোর্ডের ডেটাবেজে থাকবে।’
বিসিবি সভাপতি জানান, জেলার কোচরা উপজেলাভিত্তিক খেলোয়াড়দের পর্যালোচনা করে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিবেদন দেবেন। এতে করে ঢাকাভিত্তিক নির্ভরতা কমে যাবে এবং বিভাগীয় দলগুলো আরও শক্তিশালী হবে। প্রতিটি বিভাগীয় হেডকোয়ার্টারে বিসিবির একটি কার্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে আমিনুল ইসলাম আরও জানান, প্রধান কোচ ও হাই পারফরম্যান্স কোচের অধীনে এখানকার সব ধরনের ক্রিকেট কার্যক্রম পরিচালিত হবে। তবে প্রাকৃতিক ক্রিকেট বৃদ্ধির ধারায় কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না।
২৯ দিন হলো বিসিবি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এখনই কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে পারছি না। তবে আমি আশ্বস্ত করতে পারি—বরিশালে বিপিএল ম্যাচ হলে এখানে গ্যালারি লোকারণ্য হবে। আমরা চাই বরিশাল একটি কার্যকর ও সক্রিয় ক্রিকেট বিভাগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করুক।’
রজতজয়ন্তী উপলক্ষে দিনব্যাপী আয়োজন
বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বরিশাল স্টেডিয়ামে দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল অনূর্ধ্ব-১২ বয়সী কিশোর ও কিশোরীদের নিয়ে পৃথক দুটি ‘সিক্স-এ-সাইড’ টুর্নামেন্ট এবং ‘পেস বোলিং হান্ট ক্যাম্প’। এই প্রথম কোনো বিসিবি সভাপতি বরিশাল স্টেডিয়ামে উপস্থিত হলেন। এতে বরিশালের ক্রীড়ামোদী ও ক্রিকেট অনুরাগীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার আবু রায়হান, জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন, জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মেহরাব হোসেন (অপি), শাহরিয়ার নাফীস, ফরচুন বরিশালের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানসহ স্থানীয় ক্রীড়ামোদীরা উপস্থিত ছিলেন।