ভিডিও গেমের প্রতি শিশু-কিশোরদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদেরও বেশ আগ্রহ রয়েছে। তবে অনেকেরই ধারণা, ভিডিও গেম শিশুর মানসিক বিকাশ ও সামাজিকীকরণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এমনকি ভিডিও গেম সহিংসপ্রবণতা তৈরির পাশাপাশি আসক্তিও তৈরি করতে পারে বলে মনে করেন কেউ কেউ। আর তাই এবার নিজেদের পছন্দমতো ভিডিও গেম তৈরির সুযোগ দিতে নতুন জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টুল আনতে যাচ্ছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান রানওয়ে।

রানওয়ে জানিয়েছে, নতুন জেনারেটিভ এআই টুলটির মাধ্যমে খুব সহজেই টেক্সট প্রম্পটের মাধ্যমে ভিডিও গেমের চরিত্র, ল্যান্ডস্কেপ, বস্তুসহ বিভিন্ন ভিজ্যুয়াল ছবি তৈরি করা যাবে। শুধু তাই নয়, তৈরি হওয়া এসব উপাদান পরে সম্পাদনা, রিমিক্স কিংবা সূক্ষ্মভাবে পরিমার্জন করে পুরো ভিডিও গেম তৈরি করা যাবে। এ বিষয়ে রানওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস্তোবাল ভালেনজুয়েলা জানিয়েছেন, এআই ব্যবহার করে চলচ্চিত্রে সম্পাদনা ও ভিজ্যুয়াল এফেক্ট তৈরির সময় উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে, ভিডিও গেমও দ্রুত তৈরি করা সম্ভব।

সিনেমার সঙ্গে ভিডিও গেমের বেশ পার্থক্য রয়েছে। সিনেমা একমুখী মাধ্যম হলেও ভিডিও গেমের ধরন ইন্টারঅ্যাকটিভ। অর্থাৎ ভিডিও গেম খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণের ওপর ভিত্তি করে এগিয়ে যায়। ফলে এখানে যুক্তিসংগত লজিক, পদার্থবিজ্ঞান, সুনির্দিষ্ট নিয়ম এবং উচ্চমানের পারফরম্যান্স নিশ্চিত করাই মুখ্য চ্যালেঞ্জ। রানওয়ে বলছে, তারা এই প্রযুক্তিগত বাস্তবতা মাথায় রেখেই এআই টুলটি তৈরি করছে।

সম্প্রতি ‘কল অব ডিউটি’ গেম সিরিজের নির্মাতা অ্যাকটিভিশন ব্লিজার্ড জানিয়েছে, তারা তাদের নতুন গেম ব্ল্যাক অপস ৬-এর ভিজ্যুয়াল উপাদান তৈরিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই প্রযুক্তির ব্যবহারে গেম তৈরির প্রাথমিক পর্যায়ের ব্যয় ও সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। এতে করে স্বল্প বাজেটের স্বাধীন গেম নির্মাতারাও তুলনামূলক কম খরচে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও প্রোটোটাইপ তৈরির সুযোগ পাবেন।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র নওয

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ