জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, শেখ হাসিনা গত ১৬ বছর মানুষের অধিকার হরণ করেছেন, গুম–খুন করেছেন, তাঁর বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

বুধবার সন্ধ্যায় লালমনিরহাট শহরের মিশন মোড় গোলচত্বরে এনসিপির লালমনিরহাট জেলা সমন্বয় কমিটি আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।

পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, যারা সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য ছিল, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি, বিভিন্ন স্থানে তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে, সেই সব চেষ্টাকে গণ–অভ্যুত্থানবিরোধী হিসেবে গণ্য করে প্রতিহত করতে হবে।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘আমাদের এই দল গঠনের কোনো দরকার ছিল না। জুলাই–আগস্টের আন্দোলনে শহীদদের যে আত্মত্যাগ, সেটার ঋণ পরিশোধ করতে এবং বাংলাদেশের মানুষের আহ্বানে এই দল গঠন করতে হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা আমাদের সহায়তা করুন, সহযোগিতা করুন। বাংলাদেশের তরুণেরা নতুন স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চাচ্ছে, লালমনিরহাটকে এগিয়ে নিতে চাচ্ছে, সেই লড়াইয়ে আমরা একসঙ্গে থাকব।’

এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের সভাপতিত্বে পথসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

এর আগে পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এনসিপির নেতারা কুড়িগ্রাম থেকে লালমনিরহাটের বড়বাড়ি ও মহেন্দ্রনগর হয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে রেলওয়ে এমটি হোসেন ইনস্টিটিউট মাঠে পৌঁছান। লালমনিরহাট শহরের ফায়ার ব্রিগেড রোড, গোশালা বাজার রোড, রেলওয়ে বাজার রোড, মোগলহাট রেলগেট, বিডিআর গেট, টিঅ্যান্ডটি মোড় হয়ে মিশন মোড় গোলচত্বরে যান তাঁরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ