এসব মামলায় ক্ষুণ্ন হচ্ছে গণ–অভ্যুত্থানের ভাবমূর্তি
Published: 22nd, July 2025 GMT
মুক্তিযোদ্ধা অমল মিত্র মারা যান ২০০৭ সালের ৭ মে। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষবিদায় জানানো হয় তাঁকে। অথচ এত বছর পর ১ জুলাই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অভিযোগ, তিনি জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নিহত এক ছাত্রের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত ছিলেন। শুধু অমল মিত্র নন, একই মামলায় আরেক মুক্তিযোদ্ধা দেবাশীষ গুহ বুলবুলকেও আসামি করা হয়েছে, যিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২০২০ সালে।
জুলাই আন্দোলনে একজন সাহসী যোদ্ধা বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কাউসার মাহমুদ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। কিন্তু এ ধরনের দায়দায়িত্বহীন মামলার মাধ্যমে তাঁর ত্যাগকে অমর্যাদা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও দায়ী ব্যক্তিদের সুনির্দিষ্ট তালিকা তৈরির গাফিলতি যেমন মেনে নেওয়া যায় না, তেমনি এ ধরনের মামলা যে বিচারপ্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে, সেই আশঙ্কাও অমূলক নয়। মামলাটির বাদী খোদ নিহত ছাত্রটির বাবা। নিজের সন্তানের মৃত্যু নিয়ে তিনি মিথ্যাচার করবেন, এমন মনে করার কোনো কারণ নেই।
ধারণা করি, তাঁকে সহযোগিতা করার নামে তালিকাটি তৈরি করেছেন অন্য এক বা একাধিক ব্যক্তি। তাঁরা কেন অহেতুক তালিকা দীর্ঘ (এ মামলার আসামির সংখ্যা ১২৬) করেছেন, জানি না। তবে ইদানীং দীর্ঘ তালিকায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিরপরাধ ব্যক্তির নাম ঢুকিয়ে দেওয়ার অনেক ঘটনার কথা জনসমক্ষে এসেছে। পরে মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য চাঁদা আদায়ের ঘটনাও ঘটেছে। হয়রানির ভয়ে নিরপরাধ অনেকেই টাকা দিয়ে রেহাই পেয়েছেন—এমন উদাহরণও আছে। হয়রানিমূলক মামলা না নেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও পুলিশ কেন এসব মামলা নিচ্ছে, তা-ও বোঝার উপায় নেই।
এসব হামলা-মামলা ও চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে জনজীবনে যেমন স্বস্তি ফিরবে না, ব্যবসা-বাণিজ্যের গতিও হবে শ্লথ। সে ক্ষেত্রে জুলাই গণ–অভ্যুত্থান নিয়ে মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন উবে যেতেও হয়তো বেশি সময় লাগবে নামামলা নিয়ে কত ধরনের ভেলকিবাজি হতে পারে, তার আরেকটি উদাহরণ দেখা গেল সম্প্রতি। ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি মামলা করা হয়েছে একই ঘটনায়। দুই মামলায় দেখা যাচ্ছে, একই ব্যক্তি একই দিন একই সময়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন দুই শহরে। ঢাকার আদালতে গত মার্চ মাসে করা মামলায় বলা হয়েছে, ৪ আগস্ট পরীবাগে বেলা ১১টায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন সাইফুদ্দীন নামের এক তরুণ। একজন প্রত্যক্ষদর্শী মামলাটি করেছেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ বেশ কয়েকজনকে।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় গত জুন মাসে আহত তরুণ সাইফুদ্দীন নিজেই মামলায় উল্লেখ করেছেন, তিনি ৪ আগস্ট বেলা ১১টায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন নগরের নিউমার্কেট এলাকায়। পত্রিকান্তরে খুলশী থানার ওসি বলেছেন, আইন অনুযায়ী একই ঘটনায় দুটি মামলা হতে পারে না। আবার একই সময়ে একই ব্যক্তি ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুই জায়গায় আহত হওয়ার ব্যাপারটিও অবিশ্বাস্য। মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করা হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশ কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ এখানে মামলার বাদীই উল্টো ফেঁসে যেতে পারেন।
এভাবে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ নেমে পড়েছেন জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মহিমা ম্লান করার অপচেষ্টায়। দায়ী ব্যক্তিদের সঙ্গে নিরপরাধ লোকজনকেও মামলায় জড়িয়ে অর্থ আদায় করার অপকৌশল নিয়েছেন তাঁরা। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের টার্গেট হয়েছেন ধনাঢ্য ব্যক্তি, ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তারা। উদ্দেশ্য পরিষ্কার, সম্মানহানির ভয়ে মামলা থেকে দ্রুত অব্যাহতি চাইবেন এসব বিশিষ্ট ব্যক্তি। তাঁদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা যাবে সহজে। অনেক ক্ষেত্রেই এই ধূর্ত মামলাবাজদের দুরভিসন্ধি সফল হয়েছে। বিশেষ করে ব্যবসায়ী বা শিল্পোদ্যোক্তাদের সঙ্গে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীসহ অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ছবি পাওয়া গেলে ব্ল্যাকমেল করা যেন আরও সহজ।
এ প্রসঙ্গে জনান্তিকে একজন শিল্পপতি বলেন, কোনো রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে নয়, ব্যবসা ক্ষেত্রে অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে পদক-পুরস্কার গ্রহণকালে এ ধরনের ছবি প্রায় সব বড় শিল্পোদ্যাক্তারই রয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় না যে তিনি ওই সরকারের সমর্থক ছিলেন বা দুষ্কর্মের সহযোগী ছিলেন। তা ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবসায়ীকে এ ধরনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হলে তা প্রত্যাখ্যান করা কি আদৌ সম্ভব ছিল? সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হলে এ দেশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা যে অসম্ভব একটি ব্যাপার, তা ভুক্তভোগীমাত্রই জানেন। অথচ মামলাবাজেরা এসব বিষয় বিবেচনার তোয়াক্কা করেন না। তাঁদের উদ্দেশ্য একটাই, অর্থ আদায়।
আমাদের জানামতে, জিপিএইচ ইস্পাত, পিএইচপি, প্যাসিফিক জিনস, গোল্ডেন ইস্পাতসহ দেশের অধিকাংশ শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। মামলা থেকে তাঁদের কারও কারও নাম প্রত্যাহারের জন্য বড় অঙ্কের অর্থ আদায় করার সংবাদও জানতে পেরেছি আমরা। টাকা না দিয়ে উপায় কী? যেসব প্রতিষ্ঠানে ১০ থেকে ১৫ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন, সেই প্রতিষ্ঠানের মালিক বা পরিচালক যদি দিনের পর দিন গ্রেপ্তার বা হয়রানির ভয়ে আত্মগোপনে থাকেন, তাহলে প্রতিষ্ঠানের কী হাল হবে, তা তো সহজেই অনুমেয়।
নির্বিঘ্নে প্রতিষ্ঠান চালাতে গিয়ে একসময় পতিত সরকারের সমর্থক সংঘবদ্ধ একেকটি দলকে নিয়মিত মাসোহারার মতো চাঁদা দিতে হয়েছে ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যাক্তাদের। জুলাই আন্দোলনের পর সেই গোষ্ঠী গা ঢাকা দিলে হাঁপ ছেড়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এখন পরিস্থিতি আরও দুর্বহ। মামলাসহ নানা উপায়ে হয়রানি ও চাঁদাবাজিতে তাঁরা প্রায় দিশাহারা। অবিলম্বে এসব হামলা-মামলা ও চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে জনজীবনে যেমন স্বস্তি ফিরবে না, ব্যবসা-বাণিজ্যের গতিও হবে শ্লথ। সে ক্ষেত্রে জুলাই গণ–অভ্যুত্থান নিয়ে মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন উবে যেতেও হয়তো বেশি সময় লাগবে না।
● বিশ্বজিৎ চৌধুরী প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও সাহিত্যিক
* মতামত লেখকের নিজস্ব
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল ব দ ধ হয় ব যবস য় এ ধরন র সরক র র কর ছ ন হয়র ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রশিক্ষকদের দায়িত্বে উদাসীনতাসহ যেসব অসংগতি উঠে এল প্রাথমিক তদন্তে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মা হোসাইনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তদন্ত কমিটি। পানিতে ডুবে যাওয়ার পর উদ্ধারে ধীরগতি, প্রশিক্ষকদের দায়িত্বে উদাসীনতাসহ কিছু বিষয় উঠে এসেছে প্রাথমিক প্রতিবেদনে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এ সময় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান, সহ–উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ, জনসংযোগ কর্মকর্তা অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদারসহ তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্য, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাঁতার প্রতিযোগিতা আয়োজনকারী শারীরিক শিক্ষা বিভাগের নিয়মানুযায়ী হলগুলোর সাঁতারু দলের জন্য একজন প্রশিক্ষক বাধ্যতামূলক। সব হলে একজন করে ক্রীড়া প্রশিক্ষকের পদ থাকলেও সায়মার হলে (মন্নুজান হল) পদটি ফাঁকা ছিল। এ ছাড়া সায়মা সাঁতার দলের সদস্য ছিল না। তবু তিনি সুইমিংপুলে সাঁতার প্রশিক্ষণে অংশ নেন।
ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ঘটনার দিন আরও দুটি হলের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ছিল। সেই হল দুটির প্রশিক্ষকেরা সুইমিংপুলে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সামনেই সাঁতার অনুশীলন করছিলেন সায়মাসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। স্বাভাবিকভাবেই সবাই সাঁতার কাটলেও সবার অগোচরে হঠাৎ ডুবে যান সায়মা। বিষয়টি টের পাওয়ার পর তাঁকে পুল থেকে ওপরে তুলতে সময় লেগেছে ২০ মিনিটের বেশি। বাইরে থেকে ছাত্রদের ডেকে এনে সায়মাকে পুল থেকে উদ্ধার করেন প্রশিক্ষকেরা। ওপরে তুলে তাঁর বুকে চাপ দিয়ে পানি বের করার চেষ্টা করা হলেও তাঁর মুখ দিয়ে পানির সঙ্গে খাবার বের হচ্ছিল।
চিকিৎসা প্রসঙ্গে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর সুপারিশ করেন। তবে সেখান থেকে রওনা করা অ্যাম্বুলেন্সে কোনো অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল না। জরুরি বিভাগে থাকা সিলিন্ডারেও পর্যাপ্ত অক্সিজেন ছিল না। সেটি বদলে গাড়ি প্রস্তুত করে রওনা দিতে আট মিনিট সময় লেগেছে। একটি সিলিন্ডারে কতটুকু অক্সিজেন আছে বা নেই, সে সম্পর্কে কর্তব্যরত নার্স ও ওয়ার্ডের কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতা ও চর্চা না থাকায় সেখানেও সময় নষ্ট হয়। তবে সায়মাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ডের কর্মকর্তাদের অনেক বেশি চেষ্টা ছিল।
সায়মার শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল উল্লেখ করে ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘আমরা সায়মার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি সায়মার শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। এর জন্য তিনি চিকিৎসাও নিয়েছেন বিভিন্ন সময়ে। শ্বাসকষ্টের জন্য ইনহেলার ব্যবহার করতেন তিনি।’
প্রতিবেদনে সুপারিশের বিষয়ে ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, প্রশিক্ষক ও অন্য শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে একজন শিক্ষার্থী সাঁতার কাটার সময় পানিতে তলিয়ে যাওয়া ও প্রায় ২০ মিনিট পর তাঁর বিষয়টি নজরে আসা প্রশিক্ষকদের দায়িত্বে উদাসীনতার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। দুজন প্রশিক্ষক বসে নিজেরা গল্প করছিলেন। ওনারা যদি এটা না করতেন, হয়তো তাঁদের দৃষ্টিতে মেয়েটি থাকতেও পারত। তাই তদন্ত কমিটি তাদের প্রশিক্ষক পদ থেকে প্রত্যাহারের সুপারিশ করছে। সুইমিংপুল তদারকির জন্য একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া আশঙ্কাজনক রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চিকিৎসাকেন্দ্রের জরুরি বিভাগে কর্মরতদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থারও সুপারিশ করা হয়েছে।
শিক্ষককে হেনস্তার অভিযোগ
এদিকে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের উত্তর দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে একটি প্রশ্ন করাকে কেন্দ্র করে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল ইসলামকে হেনস্তার অভিযোগে সিনেট ভবনেই স্লোগান দিতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে ক্লাস বর্জন ও অনশন কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল ইসলাম মাসউদ, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ও জনসংযোগ কর্মকর্তা অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার। শিক্ষার্থীদের দাবি, সিনেট ভবনে ওই শিক্ষককে প্রশ্ন করতে বাধা দিয়ে হেনস্তা করেন ওই কর্মকর্তারা।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘এ রকম কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকই বিষয়টি ভালোভাবে বলতে পারবেন।’ এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল ইসলাম মাসউদ ও জনসংযোগ কর্মকর্তা অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁরা সাড়া দেননি।
গত ২৬ অক্টোবর বিকেলে সায়মা হোসাইনের মৃত্যুতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন ও ১০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশের আশ্বাসে সেদিনের আন্দোলন প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা গত তিন দিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে প্যারিস রোডে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। গতকাল প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশের কথা থাকলেও করা হয়নি। এ জন্য আজ দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা প্রশাসন ভবনের সামনে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন।