শিবিরের সন্ত্রাসী কার্যক্রম দেখতে চাইলে চবিতে যান: ছাত্রদল সম্পাদক
Published: 23rd, July 2025 GMT
ইসলামী ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসী কার্যক্রম দেখতে চাইলে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) যেতে বলেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির।
তিনি বলেছেন, “যদি শিবির দেখতে চান, শিবিরের আচার-ব্যবহার ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম দেখতে চান তাহলে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান। এই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৫ বছরের বেশি সময় ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর কি ধরনের নির্যাতন চালানো হয়েছে! আপনারা চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গেলে শিবিরের আসল চরিত্র দেখতে পাবেন।”
বুধবার (২৩ জুলাই) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে শাখা ছাত্রদল আয়োজিত জুলাই শহীদদের স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
রাকসুর তফসিল ঘোষণার দাবিতে ছাত্রশিবিরের অবস্থান কর্মসূচি
রাকসুর তফিসল ঘোষণার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহীর সভাপতিত্বে তিনি বলেন, “শিবিরের আসল প্রকাশ্য রুপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখতে পাবেন না। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিত্র মাটি শিবিরের রাজনীতিকে কখনোই অনুমতি দেয়নি। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ঢাবির কিছু দুষ্কৃতিকারীদের সংঘবদ্ধ সহায়তায় তারা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গুপ্ত সংগঠনের রাজনীতি থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে গুপ্ত সাংগঠনের নেতাকর্মীরা টার্গেট করে ‘জিরো পার্সেন্ট কন্ট্রিবিউশন ১০০ পারসেন্ট সেলিব্রেশন’ বলে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা শুরু করে। ৫ আগস্টের পরে ছাত্রশিবির আত্মপ্রকাশ করায় আমরা স্বাগত জানিয়েছিলাম। কিন্তু দেখবেন, যে ক্যাম্পাসে তাদের অবস্থান রয়েছে, সেখানে তারা আত্মপ্রকাশ করেছে। আর যেখানে সক্ষমতা দেখাতে পারে না, সেখানে গুপ্ত অবস্থায় রাজনীতি করছে। কমিটি প্রকাশ করছে না।”
শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সর্দার রাশেদ আলীর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মো.
এ সময় রাবি ও রাজশাহী মহানগরের বিভিন্ন ইউনিট ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র প রক শ অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।
জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।
দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।