‘ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে করা হচ্ছে পরিষ্কার
Published: 24th, July 2025 GMT
প্রায় এক বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার পর গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার থেকে ১০তলা এই ভবন পরিষ্কার করা শুরু হয়েছে। ভবনটির সামনে ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামে দুটি ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, তৃতীয় তলায় জমে থাকা ইটের খোয়া ও ময়লা–আবর্জনার স্তূপ পরিষ্কার করা হচ্ছে। দোতলায় জমে থাকা আবর্জনা ইতিমধ্যে পরিষ্কার করা হয়েছে। এর আগে গতকাল সকাল থেকেই নিচতলা পরিষ্কার করা হয়। ১০ থেকে ১২ জন ব্যক্তি ভবনটি পরিষ্কারের কাজ করছেন। তাঁরা বলেছেন, পুরো ভবন তাঁরা পরিষ্কার করবেন। ভবনটির সামনে প্লাস্টিকের চেয়ারে বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে বসে থাকতে দেখা গেছে।
আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামের ব্যানার টাঙানের বিষয়ে জানতে চাইলে সেখানে অবস্থানরত ব্যক্তিরা প্রথম আলোকে বলেন, পুরো ভবনটি পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এই ভবনে গত বছরের জুলাই–আগস্টের অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের অফিস, শহীদ পরিবারের অফিস করা হবে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলের চিত্র.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক র পর
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)