থাইল্যান্ডে ব্যস্ত বাজারে বন্দুক হামলায় নিহত ৫, হামলাকারীর আত্মহত্যা
Published: 28th, July 2025 GMT
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের একটি জনপ্রিয় বাজারে আজ সোমবার এক বন্দুকধারীর গুলিতে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চারজনকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুসারে, ব্যস্ত বাজারে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করা বন্দুকধারীসহ মোট ছয়জন নিহত হয়েছেন।
ব্যাংককের হাসপাতালগুলোর তদারকিকারী এরাওয়ান জরুরি চিকিৎসা কেন্দ্রের মতে, নিহত ছয়জনের মধ্যে বাজারে কর্মরত চারজন নিরাপত্তারক্ষী, একজন নারী এবং বন্দুকধারী রয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ট্রাম্পের মধ্যস্থতার পরও কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ড সংঘাত অব্যাহত
কম্বোডিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষ, এবার যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করল থাইল্যান্ড
থাই রাজধানীর জনপ্রিয় একটি পর্যটন কেন্দ্র চাতুচাক বাজার থেকে অল্প দূরে অবস্থিত ওর টর কোর মার্কেটে এই হামলা চালানো হয়েছে।
ব্যাংককের বাং সু জেলার উপ-পুলিশ প্রধান ওরাপাত সুকথাই ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, “হামলার উদ্দেশ্য তদন্ত করছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত এটি একটি গণহত্যা।”
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্দুকধারীও আত্মহত্যা করেছে।
উপ-পুলিশ প্রধান আরো বলেছেন, তারা এই গণহত্যার সঙ্গে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে বর্তমান সীমান্ত সংঘর্ষের মধ্যে ‘কোনো সম্ভাব্য যোগসূত্রের জন্য’ তদন্ত করছেন।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)