রবীন্দ্রনাথের প্রিয় রেসিপি ‘চিংড়ি মালাইকারি’
Published: 6th, August 2025 GMT
ব্রিটিশ শেফ শন কেনওয়ার্দি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংগৃহীত মেন্যু কার্ডগুলো সংগ্রহ করেছেন এবং বেশ কিছু রেসিপি নিয়ে গবেষণাও করেছেন। জানা গেছে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রিয় রেসিপিগুলোর মধ্যে একটি ছিলো নারকেল চিংড়ি বা চিংড়ি মালাইকারি। স্বাদে-গন্ধে ভরপুর এই রেসিপি নিজেই তৈরি করে নিন।
উপকরণ
চিংড়ি: ১ কেজি
নারকেলের দুধ: ৩ কাপ
নারকেল বাটা: ১ কাপ
পেঁয়াজ কুচি: ১ কাপ
পেঁয়াজ বাটা: ২ টেবিল চামচ
আদা বাটা: ১ টেবিল চামচ
রসুন বাটা: ১ টেবিল চামচ
ঘি: ১ কাপ
ধনে গুঁড়া: ২ চা-চামচ
মরিচ গুঁড়া: ২ চা-চামচ
তেজপাতা: ২টি
এলাচ: ৩-৪টি
দারুচিনি: ২ ইঞ্চির ১টি
লবঙ্গ: ৩-৪টি
আস্ত ছোট পেঁয়াজ: ৮ টি
লেবুর রস: ১ টেবিল চামচ
কাঁচা মরিচ: ৮টি
চিনি: ১ চা-চামচ
লবণ: স্বাদমতো।
প্রথম ধাপ
আরো পড়ুন:
আপেল দিয়ে চা বানিয়েছেন? তিন ধাপে বানিয়ে নিন আপেলের চা
বৃষ্টি এলেই কেন খিচুড়ি রান্না করা হয়?
প্রথমে চিংড়ি ভালো করে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে লেজসহ এক পাশে রেখে দিন।
দ্বিতীয় ধাপ
এ পর্যায়ে চুলায় কড়াই গরম করে নিন। তাতে এক কাপ ঘি ঢেলে দিন। ঘি গরম হয়ে এলে একে একে পেঁয়াজ কুচি, তেজপাতা ছেড়ে দিন। পেঁয়াজ সামান্য লাল হয়ে এলেই ৩ কাপ পানি দিয়ে দিন। এরপর কিছু সময় জ্বাল দিন। পেঁয়াজ নরম হয়ে এলে এলাচি, দারুচিনি, লবঙ্গ, আদা বাটা, রসুন বাটা, পেয়াজ বাটা, ধনে, জিরা এবং মরিচের গুঁড়া দিয়ে দিন। তারপর আরও কিছু সময় ভালো করে কষিয়ে নিন। প্রয়োজনে অল্প অল্প নারকেলের পানি দিয়ে কষিয়ে নিতে পারেন।
তৃতীয় ধাপ
তরকারি থেকে তেল এবং মসলা আলাদা হয়ে এলে এতে নারকেল বাটা দিয়ে অল্প কষিয়ে নিন। কষানো মসলার মধ্যে আস্ত পেঁয়াজ ও চিংড়ি ছেড়ে দিয়ে ২ মিনিট ভালো করে কষান।
চতুর্থ ধাপ
শেষ পর্যায়ে এসে নারকেলের ঘন দুধ দিয়ে দিন। ফুটে উঠলে কাঁচা মরিচ দিয়ে ঢেকে দিন। সুগন্ধ ঠিক রাখার জন্য মাঝারি আঁচে রান্না করুন। ২ মিনিট পরেই ঢাকনা খুলে তাতে স্বাদমতো লবণ, চিনি এবং লেবুর রস দিয়ে দিন। ব্যাস, পরিবেশনের জন্য রেডি চিংড়ির মালাইকারি।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে শিশু–কিশোরদের মানসিক সুস্থতা জরুরি কেন
শিশু–কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যে আমরা আদতে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছি? এই প্রশ্নের উত্তরের আগে আরেকটি প্রশ্ন ছুড়ে দিই। মানসিক স্বাস্থ্য মানে কী? অধিকাংশই বলবেন, ‘মানসিক রোগ না থাকা।’ কিন্তু এটি আরও অনেক বড় বিষয়। এটি ব্যক্তির আবেগীয়, মানসিক ও সামাজিকভাবে ভালো থাকা বোঝায়, যা প্রভাবিত করে তার চিন্তা, অনুভূতি ও আচরণকে। অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক, চাপ মোকাবিলার দক্ষতা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও এর সঙ্গে সম্পর্কিত।
শৈশবের পরের ধাপটাই কৈশোরকাল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বয়ঃসন্ধিকাল ১০ বছর বয়স থেকে শুরু করে ১৯ বছর পর্যন্ত চলে। সময়টা অফুরান প্রাণশক্তি, উদ্দাম আবেগ আর সীমাহীন সম্ভাবনার। সবকিছুতে কৌতূহল, শরীরে নতুন অনুভূতির রোমাঞ্চ, স্বাধীনচেতা মনোভাব অথবা বিদ্যমান নিয়মরীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা—এ রকম আরও অনেক বৈশিষ্ট্য কৈশোরকালকে করে তোলে অনন্য।
‘আমি কে, কী চাই, কীভাবে দেখব আমার জীবন’—আত্মপরিচয়ের এই অনুসন্ধানের পথ ধরেই কৈশোরের চারিত্রিক বিকাশ ঘটতে থাকে। মস্তিষ্কের দ্রুত স্নায়বিক বিকাশ ও হরমোনের প্রভাবে শরীরের যেমন পরিবর্তন হয়, তেমনই মন দ্রুত বদলায়। এ বিকাশ নির্ভর করে তার জিনগত বৈশিষ্ট্য, পারিবারিক পরিবেশ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও চারপাশের ওপর।
আরও পড়ুনমন ও মস্তিষ্কের ১২টি গোপন সত্য, আপনি কয়টা মানেন?০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫সাফল্য ও ঝুঁকির দ্বন্দ্বশিশু–কিশোরের সাফল্য অনেকাংশেই নির্ভর করে মানসিক সুস্থতার ওপর। আবার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের চিন্তাপদ্ধতি, আবেগীয় রূপ ও সামাজিক ভূমিকা অনেকাংশেই নির্ধারিত হয় শৈশব ও কৈশোরকালীন মনের যত্নের ভিত্তিতে। আবেগের প্রবলতা, অনুসন্ধিৎসু মন, নিজেকে প্রকাশের চেষ্টা এ সময়কে যেমন বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করে, তেমনই অপরিপক্বতা ও ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা এই সময়কে করে তোলে নাজুক।
সারা বিশ্বে বর্তমান প্রজন্ম বেড়ে উঠছে এক পরিবর্তনশীল ও অস্থির সময়ের সন্ধিক্ষণে। ভোগবাদী ব্যবস্থা নির্ধারণ করছে দৈনন্দিন জীবনযাপন, ইচ্ছা-অনিচ্ছা ও সম্পর্ক। শক্তি আর প্রতিযোগিতার খেলায় সবাই জয়ী হতে চাইছে। আমদের ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাপদ্ধতি, এমনকি অনুভূতিও নিয়ন্ত্রণ করছে মুঠোফোন বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
শিশুরা বাস্তব জগতের বদলে মোহাচ্ছন্ন হয়ে বেড়ে উঠছে ভার্চ্যুয়াল জগতের অবাস্তব স্বপ্নমায়ায়। ছোটবেলা থেকেই পরিচিত হচ্ছে সাইবার ক্রাইম, সহিংস ভিডিও গেম, মাদকাসক্তি ও আত্মহত্যার মতো বিপজ্জনক বিষয়গুলোর সঙ্গে।
বর্তমান সময় শিশু–কিশোরদের মানসিক বিকাশে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে প্রযুক্তি ও সমাজ। জীবনকে সহজ করার নামে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইকে মানুষের জায়গায় প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এতে মানুষ থেকে দ্রুত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে মানুষ। শিশু–কিশোরেরা বন্ধুদের সময় দেওয়ার বদলে সময় কাটাচ্ছে এআই বা অনলাইন গেমে। এতে সামাজিক মেলামেশা ও খেলাধুলা থেকে যে আবেগীয় গঠন ও জীবনদক্ষতা তৈরি হওয়ার কথা, তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিচ্ছিন্নতা ও আত্মকেন্দ্রিকতায়। মানসিক রোগের ঝুঁকি উঠতি বয়সে সব সময় বেশি হলেও বর্তমান যুগের এসব উপাদান বাড়তি ঝুঁকি যোগ করছে।
বর্তমান সময় শিশু–কিশোরদের মানসিক বিকাশে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে প্রযুক্তি ও সমাজ