অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘোষণাকে ‘সতর্কতার সঙ্গে’ স্বাগত জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)।

দলটি বলেছে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের সক্ষমতা নিয়ে তারা এখনো পুরোপুরি আস্থাশীল নয়। এক বছর হতে চলেছে, কিন্তু রাজনৈতিক দল বা অংশীজনদের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে সংলাপের কোনো আয়োজন বা উদ্যোগ তারা এখনো দেখতে পাচ্ছে না। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশ তারা বাস্তবায়নে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে, যেটা দুঃখজনক।

আজ শনিবার রাজধানীর বিজয়নগরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ বাস্তবায়ন এবং জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘোষণা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এবি পার্টি।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের সময় ঘোষণা প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, রমজানের আগে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনের ঘোষণাকে তাঁরা স্বাগত জানাচ্ছেন। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন‍্য ফ‍্যাসিবাদীদের বিচার ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে নির্বাচন নিয়ে সংশয় ও অনিশ্চয়তা কাটবে না। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার এখনো প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পুরো লাগাম টেনে ধরতে পারেনি। নির্বাচনের আগে বিচার ও সংস্কারের স্পষ্ট পথনকশা জরুরি, যেন ঐকমত্যের ভিত্তিতে আগামী সরকারও এগুলো সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

জুলাই সনদের যেসব বিষয়ে সব দল একমত হয়েছে, সেগুলো স্বাক্ষরিত হওয়ার পরপরই বাস্তবায়ন শুরু হওয়া দরকার উল্লেখ করে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সুরাহা হওয়া জরুরি। আমরা যেন ইতিহাসের পেছনের দিকে চলে না যাই; ১৯৯০ ও ২০০৮ সালের অভিজ্ঞতা ভুলে না যাই। যেটা ঐকমত্যের ভিত্তিতে এখনই করা সম্ভব, সেটা পিছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চব্বিশের গণ-অভ‍্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী।’

‘জুলাই ঘোষণাপত্র স্বপ্ন ধারণে ব্যর্থ’

জুলাই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানিয়েছে এবি পার্টি। তবে এই ঘোষণাপত্র জুলাই গণ-অভ‍্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও জনগণের স্বপ্ন ধারণ করতে ব‍্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে দলটি।

সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বলেন, একটা ঘোষণাপত্র দিতে পেরে আনন্দিত ও গর্বিত। কিন্তু এর বক্তব‍্য, গাঠনিক শৈলী, অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তি পুরোনো ধাঁচের হয়েছে। ঔপনিবেশিক যুগের মুক্তিসংগ্রাম, মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট, শাহবাগে ফ‍্যাসিবাদের উত্থান পর্ব, ৫ মের জাগরণ ও আলেমদের ওপর গণহত্যা, বিডিআর হত‍্যাকাণ্ড, কোটা সংস্কার থেকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, রাষ্ট্র মেরামতের জন–আকাঙ্ক্ষা হয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের দৃঢ়প্রত্যয়ের স্মৃতিমণ্ডিত ইতিহাস ঘোষণাপত্রে আরও স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে বলে প্রত্যাশা ছিল।

এবি পার্টির এই নেতা আরও বলেন, তাঁরা চান, ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ দলিল জুলাই ঘোষণাপত্র যেন আলংকারিক বস্তু হয়ে না থাকে। সবাই যেন যথাযথভাবে এটা মেনে চলেন।

সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন রানা, আনোয়ার সাদাত টুটুল, ফেরদৌসী আক্তার, ইসরাত জাহানসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কথায় কথায় রাস্তায় যাবেন, বৃহত্তর দল যদি নামে সংঘর্ষ হবে: আমীর খসরু

বাংলাদেশের মানুষ সাংঘর্ষিক রাজনীতি দেখতে চায় না, স্থিতিশীলতা দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রতিবাদের অধিকার সবার আছে তবে অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘কথায় কথায় আপনি রাস্তায় যাবেন। এখন অন্য দল যদি আবার তার প্রতিবাদে আবার রাস্তায় যায় তাহলে কি হবে সংঘর্ষ হবে না? বৃহত্তর দল বাংলাদেশে যদি রাস্তায় নামে এগুলোর প্রতিবাদে, আমাদের সংঘর্ষ হবে। এইজন্য আমরা কি শেখ হাসিনা বিদায় করেছি?’

আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ট্রেস কনসালটেন্সি নামে এক সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা নিয়ে সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজনৈতিক দলগুলো ‘অবসেসড’ হয়ে গেছে বলেন আমীর খসরু। কিছু কিছু রাজনীতিবিদদের মধ্যে এ ধরনের মনমানসিকতা ডেভেলপ করে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আমীর খসরু আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে বিশ্বাস করতে হবে যে যতটুকু ঐকমত্য হয়েছে তার বাইরে গিয়ে আবার নতুন ইস্যু সৃষ্টি করলে কিন্তু ঐকমত্যের শ্রদ্ধা দেখানো হচ্ছে না। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও ঐকমত্য হতে হবে।’

প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা নিয়ে আলোচনায় বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। রাজধানীর একটি হোটেলে আজ শনিবার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যে বিষয়গুলো আলোচনাতেই আসে নাই, সেগুলোও ঢুকিয়েছে ঐকমত্য কমিশন: সেলিমা রহমান
  • অন্তর্বর্তী সরকার কেন জবাবদিহির সংস্কৃতি চালু করতে পারল না
  • কথায় কথায় রাস্তায় যাবেন, বৃহত্তর দল যদি নামে সংঘর্ষ হবে: আমীর খসরু
  • নিজেদের গুরুত্ব বাড়াতে কিছু থিঙ্কট্যাংক বলছে, জুলাই সনদে নারী, কৃষক, শ্রমিক নেই: প্রেস সচিব
  • মতৈক্য হবে না, কারণ দলগুলো বিভিন্ন মহলের স্বার্থ দেখে: ফরহাদ মজহার
  • ঐকমত্যের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই: আমীর খসরু
  • ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে
  • ঐকমত্য কমিশনের আপ্যায়ন ব্যয় ৪৫ লাখ টাকা
  • ঐকমত্য কমিশন কী হলো না হলো কিছু আসে যায় না: আমীর খসরু
  • কমিশনে কী হলো না হলো কিছু আসে যায় না, ৩১ দফা বাস্তবায়ন হবে: আমীর খসরু