ঐকমত্যের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই: আমীর খসরু
Published: 7th, November 2025 GMT
ঐকমত্যের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ঢাকায় বসে জোর করে বিএনপি কিংবা কারও ওপর চাপ সৃষ্টি করা যাবে না।
আজ শুক্রবার বিকেলে নগরের ষোলশহর ২ নম্বর গেট এলাকায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
আমীর খসরু তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘ইতিমধ্যে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য হয়েছে। ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে সনদ সই হয়েছে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। গণতন্ত্রে যদি বিশ্বাস করেন আগামী নির্বাচনে আপনার ম্যান্ডেটের জন্য জনগণের কাছে যান। ওই ঢাকায় বসে জোর করে আপনার দাবি আদায়ের জন্য বিএনপি কিংবা আর কারও ওপর চাপ সৃষ্টি করবেন না। ঢাকায় বসে কিছু মানুষ জোর করে আগামী সংসদে কারা যাবে তারা বলে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’
যারা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে, তাদের সম্পর্কে নেতা-কর্মীদের চোখ–কান খোলা রাখার আহ্বান জানিয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়া যদি মজা খাওয়া যায়, তাহলে নির্বাচন কেন চাইবেন? এটা কি আমরা বুঝি না। এই খাওয়া খাইতে দেব না। শত্রুদের যেখানে দেখবেন, পুলিশের হাতে তুলে দেবেন। এরা আমাদের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।’
আমীর খসরু বলেন, ‘৭ নভেম্বর সমস্ত জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র ও বাংলাদেশের শত্রুদের মোকাবিলা করেছে। যারা গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, যারা জনগণের নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চায়, তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে এই দেশের মালিকানা হবে। মালিকানা নিশ্চিত হবে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে।’
বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ ও একজন নিহত হওয়ার ঘটনা কেন গণসংযোগে ঘটেছে প্রশ্ন তুলে আমীর খসরু বলেন, ‘বলা হচ্ছে দুই দলের অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে ঘটেছে, ঠিক আছে কিন্তু এই দুই দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে কেন হবে। একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কেন সেই ঘটনা ঘটতে হবে। তাহলে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে দুই দলের অন্তঃকোন্দলকে কেউ ব্যবহার করে আগামী নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে কি না। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’
দল থেকে যাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাঁর জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে বলে জানান আমীর খসরু। তিনি বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে কোনো ভুল–বোঝাবুঝি রাখা যাবে না। তারেক রহমান নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলের পক্ষ থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার পাশে সমস্ত শক্তি দিয়ে দাঁড়াতে হবে, তার বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। এই জায়গায় কোনো ধরনের প্রশ্ন করা যাবে না। এটা আমাদের অনেক বড় পরীক্ষা। আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটে তারেক রহমানকে বিজয়ী করে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে আমরা দেখতে চাই।’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব নাজিমুর রহমানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক আর ইউ চৌধুরী এবং ইয়াছিন চৌধুরীর পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাশেম, নির্বাহী কমিটির সদস্য শামসুল আলম, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।
এদিকে আজ বিপ্লব উদ্যানে চট্টগ্রামে বিএনপির ১০টি আসনে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা তাঁদের অনুসারীদের নিয়ে যোগ দেন। বাকি ছয়টি আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও ছিলেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরাও ভিড় জমান। নগরের ২ নম্বর গেট এলাকা সকাল থেকে নেতা-কর্মীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে ওঠে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র র সদস য ঐকমত য ত করত রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘জাতীয় ইস্যুতে সর্বদলীয় ঐকমত্য জরুরি’
ভাষাবিদ ও সাহিত্যিক মাহমুদুল হাসান নিজামী বলছেন, “দেশের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যুতে সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ঐকমত্য গঠন করা অতীব জরুরি।”
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইসলামী সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা জানান।
নিজামী তার বক্তব্যে বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা ও নির্বাচন দুইটিই দেশের ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণ করে। দেশের কল্যাণে জনগণের দাবি পূরণে সর্বস্তরের মানুষের মানবিক আচরণ প্রয়োজন। সরকারের কাজ হলো জাতিকে সঠিক পথ দেখানো, আর জনগণের কর্তব্য সেই পথ অনুসরণ করা। কিন্তু বর্তমানে সরকার ও জনগণের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে গেছে- এটি কারো কাম্য নয়।”
তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জাতীয় ইস্যুতে সর্বদলীয় ঐকমত্য প্রয়োজন। জাতীয় সংলাপই তার অন্যতম প্রেক্ষাপট।”
অনুষ্ঠানে সংগঠনের মহাসচিব বি এম এরশাদ বলেন, “নাগরিক নিরাপত্তা ও আসন্ন নির্বাচন দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এখন নির্বাচনকে গণদাবি হিসেবে দেখা হলেও নাগরিকের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বর্তমান অস্থায়ী সরকারের প্রধান দায়িত্ব হওয়া উচিত। তিনি যোগ করেছেন যে বৈষম্যরোধ, বাকস্বাধীনতা এবং স্বাধীন মত প্রকাশের নিশ্চয়তা প্রদান করাই সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার ভিত্তি।”
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এস এম সরওয়ার বলেন, “দেশের সংকটময় সময়ে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস ছাড়া উন্নয়ন ও কল্যাণমুখী ভবিষ্যত নির্মাণ সম্ভব নয়। তাই জাতীয় নিরাপত্তা ও আগামী নির্বাচনকে সফল করতে সংগঠনটি কাজ করে যাচ্ছে।”
ঢাকা/এএএম/এস